মীলাদুন্নবীর বিরোধীতাকারীদের জবাব

এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা বলে ঈদে মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাকি শিরক ও বিদাত (নাউযুবিল্লাহ) । তাদের এ বক্তেব্যে কলিজা কাটা খন্ডনমূলক জবাব
ইসলামে বর্ণনা রয়েছে আমাদের নবীজির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা আল্লাহ পাকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। আল্লাহ পাক বলেন, আমি আমার রসূলকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি করতাম না। সুতরাং স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় আমাদের নবীজির প্রতি আনুগত্যতাই প্রকৃত ঈমানদারের লক্ষণ। কথায় বলে মাথা এবং এবং পা এক জিনিস না । যেমন: শেষ্ঠতম সৃষ্টি ও স্বাভাবিক সৃষ্টি দুটি ভিন্ন বিষয়। সুতরাং সাধারণ জনগণ বিশেষ মহাজনের দিকে রুজু থাকবে এটাই বিশেষ ব্যক্তিত্বের লক্ষণ। নবীজি এবং উম্মতের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও অনেক উর্ধের। আর এই বিষয়টি প্রমাণ করে আল্লাহ পাকের কুদরতি বিষয়। এখন প্রশ্ন হল,নবীজির প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা উম্মতের কাজ। আর যার সাথে ছলাত-সালাম তাঁর স্থান আল্লাহর পরেই। কেউ কেউ বলে নবীজিকে নূর বললে,হাযির-নাযির বললে, ইলমে গাইমের অধিকারী বললে নাকি আল্লাহ পাককে খাট করা হয় (নাউযুবিল্লাহ)।

কিন্তু মূর্খরা জানেনা যে, নবীজিকে সব বলার পরেও যদি আস্তে করা বলা হয় নবীজি এত বড় ! তাহলে যিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তিনি কত বড় ! অথবা আমরা বলতে পারি সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি যদি এতবড় হয় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কত বড় । সুতরাং নবীজির শান যত বেশি প্রকাশিত হবে আল্লাহ পাকের বড়ত্ব ততবেশি প্রকাশিত হবে। সাধারণ মানুষেরা নবীজির শানে আর কিই বা জানে আর আল্লাহর শান তো বলার অপেক্ষোই রাখে না। সুতরাং সমস্ত দরুদ সালাম মীলাদ ঈদে মীলাদুন্নবী হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়া সাল্লামের শ্রেষ্টত্বের অনুষ্ঠানমালা। সুতরাং সমস্ত অনুষ্ঠান হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্রেষ্টত্বের শান। তাহলে আল্লাহ পাক যদি সৃষ্টিকর্তা হন তাহলে নবীজির শেষ্টত্ব প্রমাণ করে আল্লাহ পাকের পরেই নবীজির অবস্থান। শির্ক বলতে আমরা কি বুঝি ! সৃষ্টিকর্তার সাথে কারো তুলনা করলে সেটাকে শির্ক বলে। যেমন: কেউ যদি কোন মানুষকে প্রতিপালক মনে করে ইবাদাত বন্দেগী করে বা মাওলা জেনে ইবাদাত বন্দেগী করে তাহলে সেটা শির্ক ও কুফরি।
এখন প্রশ্ন যারা ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করে তারা কি কেউ কখনো বলেছে যে, নবীজিকে আমরা আল্লাহ পাক জেনে মীলাদুন্নবী পালন করেছি। নিশ্চয়ই কেউ বলেনা। কারো কপাল যদি টেবিলের উপর রেখে সেজদার মত করে ঘুমায় তবে সেটা সিজদা হবে না কারণ সে কাউকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে নির্দিষ্ট করেনি আবার কেউ যদি নবী-রাসূলের মাজার জিয়ারত করতে যায় তবে কেউ কেউ বলে সে শির্ক করে এসছে ( নাউযুবিল্লাহ) । নবীজির রওজা শরীফে কিছু চাইলে বা দোয়া করলে ওরা বলে তোমার শির্ক হয়েছে। অাবার যদি বাবাকে বলে, বাবা আমাকে একটা গাড়ি কিনে দাও সেটা কিন্তু তারা শির্ক বলে না। ব্যায়াম করার সময় মাথা নিচু করে ব্যয়াম করলে মাওলা নির্দিষ্ট না করার কারণে সেটাও শির্ক হয়না। মুদ্দা কথা শির্কের অর্থ হচ্ছে কোন কিছুকে আল্লাহর সম ভেবে সিজদা,রুকু ইত্যাদি করলে সটা শির্ক হবে।
অথচ দেখা যায় যে,কোন ব্যক্তি যারা ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করে তারা কখনো নবীজিকে আল্লাহ মনে করে না এবং নবীজির জন্মদিন সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলির প্রকাশ করে অনুষ্ঠান করে খুশি প্রকাশ করে এবং আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরে। মূলত, এই তুলে ধরাটা আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্ব এবং বান্দাদের সবচেয়ে বড় বন্দেগী। এই বিষয় থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় মীলাদুন্নবী বান্দাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত,আল্লাহ পাকের হাবীব সর্বশ্রেষ্ট রসূল এবং অাল্লাহ পাক সর্বশ্রেষ্ঠ ইলাহ। বরং যারা মীলাদুন্নবীর বিরোধীতাকারী তারা মানুষের সর্বশ্রেষ্ট ঈবাদাত ঈদে মীলাদুন্নবীর বিরোধীতা করতে গিয়ে তারা আল্লাহ পাকের শানের খেলাপ কাজ করে,নবীজিকে কৌশলে অস্বীকার করে ,উম্মতকে শির্ক নামে অ্যাখ্যায়িত করে। সুতরাং যারা সত্যের বিরোধীতা করে তারা অন্যকোন ইলাহর(আল্লাহ ব্যতীত) প্রচারণা চালায়। এরাই হচ্ছে শির্কের সবচেয়ে বড় উদাহরণ এবং প্রকাশ্য জালিম।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট