“১২ই রবীউল আউয়াল শরীফকে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই বলতে হবে; ‘সীরাতুন্ নবী’ নয়। যারা ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সীরাতুন্ নবী নামকরণ করতে চায় তারা শুধু জাহিলই নয় বরং আশাদ্দুদ্ দরজার জাহিলও বটে।”
সীরাতুন্ নবী যদি বলা হয় ‘সীরাত’ হচ্ছে চরিত্র মুবারক। যেটা আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার একটা ছিফত বুঝানো হয়েছে সীরাতুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যখন কেউ চরিত্র মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করবে তখন সেটা সীরাতুন্ নবী হবে। যদি সীরাতুন্ নবী বলা হয় তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছূরতন্ নবী অর্থাৎ ছূরত মুবারক কেমন ছিলো? আরো প্রশ্ন আসবে, নূরুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার যে নূর মুবারক ছিলো ‘নূরে হাবীবী’ তাহলে সেটার মাহফিল করতে হবে আলাদাভাবে। ‘হিজরাতুন্ নবী’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তথা আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার হিজরত সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। মিরাজুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তথা মিরাজ শরীফ সম্পর্কে আলাদা আলোচনা করতে হবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার জিহাদুন্ নবী অর্থাৎ জিহাদের আলোচনা আলাদাভাবে করতে হবে। অর্থাৎ ছিফতগুলো ভাগ করে দিলে আলাদা আলাদা হয়ে যাবে।
কেউ সীরাতুন্ নবী, কেউ ছূরাতুন্ নবী, কেউ মিরাজুন্ নবী, কেউ হিজরতুন্ নবী, কেউ জিহাদুন্ নবী, কেউ রিসালাতুন্ নবী, কেউ রিহালাতুন্ নবী, কেউ বিছালুন্ নবী, কেউ নূরুন্ নবী-এর মাহফিল করবে অর্থাৎ প্রতিটি বিষয় আলাদা আলাদা হয়ে যাবে এবং আলাদা আলাদা নাম দিয়ে আলোচনা করতে হবে।
মূলতঃ যারা এরূপ বলে তারা হচ্ছে আশাদ্দুদ্ দরজার জাহিল ও মূর্খ। সীরাতুন্ নবীতে শুধু আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সীরাত সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ সম্পর্কে কিন্তু সেটা বলা হয়নি। ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ হচ্ছে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফের দিন। আল্লাহ পাক-এর যমীনে তিনি আগমন করেছেন ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার শরীফে। এখন সেই দিনে শুকরিয়াস্বরূপ খুশি প্রকাশ করতে হবে। আর এই খুশি প্রকাশ করাটাই হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
‘ঈদে মীলাদুন্ নবী’ অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগমন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে যে মাহফিল, মজলিশ, জলসা করা হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাহফিল। সে মাহফিলকে সীরাতুন্ নবী, ছূরাতুন্ নবী, নূরুন্ নবী, বিছালুন্ নবী ইত্যাদি বললে সেটা শুদ্ধ হবে না। কারণ, সে বিষয়গুলো হচ্ছে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছিফত মুবারক। আর মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বারা মূল ওজুদ মুবারককে বুঝানো হয়। যেমন, আল্লাহ পাক-উনার অনেক নাম মুবারক রয়েছে, রহমান, রহীম, গফ্ফার, সাত্তার, জালীল, জাব্বার ইত্যাদি অনেক ছিফতী নাম মুবারক রয়েছে। তবে মূল নাম মুবারক বা ইসমে জাত হচ্ছে ‘আল্লাহু’। আল্লাহ পাক-উনার ইসমতে জাত হচ্ছে বা জাতী নাম মুবারক হচ্ছে আল্লাহ পাক। আর ছিফতী নাম মুবারক অসংখ্য অগণিত রয়েছে। আল্লাহ পাক যেহেতু অসীম উনার ছিফতও অসীম। ঠিক আল্লাহ পাক-উনার হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও অনেক ছিফত মুবারক রয়েছে ।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার অজুদ মুবারক বা আগমন উপলক্ষে যে মজলিশ করা হয়ে থাকে, মাহফিল করা হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বিলাদত শরীফ বা আগমন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে যে মাহফিলের ব্যবস্থা করা হয় সেটাই হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর সেটাকে সীরাতুন্ নবী বা অন্য কোন নাম দেয়া কখনও শুদ্ধ হবে না। কারণ সেটা দিয়ে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার শুধুমাত্র একটা ছিফত বুঝানো যাবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার যে জাত মুবারক বা ওজুদ মুবারক অথবা অস্তিত্ব মুবারক রয়েছে সেটা বুঝানো যাবে না। সেজন্য ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে হবে।