সকল নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আশেকগনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, উনারা মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফ করে থাকেন। অথচ দেওবন্দী- তাবলীগি-কওমীরা এইটাকে সরাসরি বিদয়াত/ কুফরী/ শিরিক ফতোয়া দিয়ে থাকে।
আশরাফ আলী থানবী, রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী, সহ সকল উলামায়ে দেওবন্দীদের পীর শায়েখে আরব ওয়াল আযম, হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাবে বর্ননা করেন-
মীলাদ শরীফের মাহফিলকে বরকত লাভের উসিলা মনে করে আমি প্রতি বছর মীলাদ শরীফ এর মজলিস করি এবং মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়াম শরীফ করার সময় আমি অশেষ আনন্দ ও স্বাদ উপভোগ করি।”
দলীল- ফয়সালায়ে হাফতে মাসায়লা পৃষ্ঠা ৫

হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্য কিতাবে বলেন-
” আমাদের আলেমগন (দেওবন্দী) মীলাদ শরীফের বিষয়ে খুবই বিরোধ করছে। তবু আমি ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ পন্থি আলেমগনের পক্ষেই গেলাম। যখন ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ হওয়ার দলীল মওজুদ আছে , তখন কেন এতো বাড়াবড়ি করা হচ্ছেঃ আমাদের জন্য তো মক্কা শরীফ মদীনা শরীফের অনুকরনই যথেষ্ট। অবশ্য ক্বিয়ামের সময় জন্মের এতেকাদ না রাখা চাই। যদি (মাহফিলে) হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের বিষয়ে বিশ্বাস করা হয়, এতে কোন অসুবিধা নাই। কেননা আলমে খালক এবং কালের সাথে সম্পৃক্ত , এবং আলমে আমর উভয়বিধ অবস্থা থেকে পবিত্র। সূতরাং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ মাহফিলে আগমন করা উনার পবিত্র জাত মুবরকের জন্য অসম্ভব নয় !”
দলীল- শামায়েলে এমদাদীয়া ৮ পৃষ্ঠা।
দেওবন্দী সর্বোচ্চ গুরু আশরাফ আলী থানবী তার কিতাবে লিখেছেন-
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের বর্ননা করার জন্য মাহফিল করা জায়েজ বরং মুস্তাহাব, যখন উহা (হিন্দুস্থনের) প্রচলিত বিদয়াত হতে পবিত্র হবে এবং ( মীলাদ শরীফে) তাওয়াল্লুদ শরীফ পাঠ করার সময় ক্বিয়ম করা কখনোই কুফরী নয় !”
দলীল- ইমদাদুল ফতোয়া ৪ র্থ খন্ড ৩২০ পৃষ্ঠা।
আশরাফ আলী থানবী অপর এক কিতাবে লিখেছেন-
” ঐ সকল কার্যাবলী ( অর্থাৎ শিরনী, ক্বিয়াম ইত্যাদি) প্রকৃত পক্ষে মুবাহ কাজ সমূহের অন্তর্ভুক্ত। তাতে কোন ক্ষতি নেই এবং সেজন্য প্রকৃত মীলাদ শরীফ এর ব্যাপারে কোন প্রকার নিষেধ আসতে পারে না।”
দলীল- তরীকায়ে মীলাদ ৮ পৃষ্ঠা !
সকল দেওবন্দী ও বাংলাদেশর কওমীদের অন্যতম গর্ব আশরাফ আলী থানবীর খলীফা, মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী সাহেব উনার তাসাউফ তত্ত্ব কিতাবের ৩৫ পৃষ্টা – ৪৭ পৃষ্টা পর্যন্ত শুধুই মিলাদের অসংখ বাব নিয়ে এসেছেন এবং ৪১ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন ” হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে যে কাসিদা পড়া হয় তাতে মহব্বত বাড়ে আর ওই মহব্বতের জোরে যদি কেউ মিলাদের কিয়ামে দাড়িয়ে যায় তাহলে তাকে বিদাত বলা যাবেনা। আর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে বসে বসে সালাম দেওয়া হুজুরের শানে বড়ই বেয়াদবী।”
এখন বর্তমানে যেসব দেওবন্দীরা মিলাদ কিয়ামের কট্টর বিরোধিতা করতেছেন আপনারাই বলেন মিলাদ কিয়াম যদি শিরক বেদাত হয় তাহলে সর্ব প্রথম আপনাদের গুরু ইমদাদুল্লাহ মক্কী সাহেবকে বেদাতি ফতোয়া দিচ্ছেন না কেন ??
ছবি- মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী সাহেব উনার তাসাউফ তত্ত্ব কিতাবের স্ক্রীনশট।