ঈদে মিলাদুন্নবির বিরোধীতাকারী কওমী-দেওবন্দী গুরুদের মিলাদ -ক্বিয়াম পালন ( মৌলভী শামছুল হক ফরিদপুরী ) - ২

মৌলভী আব্দুল হাই লকনভীর দৃষ্টিতে মীলাদের কিয়াম মুস্তাহাব--- পাক-ভারত উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মৌলভী আব্দুল হাই লকনভী তদীয় “মজমুয়ায়ে ফতোয়া” কিতাবে মীলাদের কিয়াম মুস্তাহাব বলে ফতোয়া দিয়েছেন । নিম্নে তা প্রশ্ন উত্তর আকারে প্রদত্ত হলো- 

প্রশ্নঃ হযরত রাসুলে মকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা-এর জন্ম বৃত্তান্তের আলোচনা কালে কিয়াম করার হুকুম কি ? 


উত্তরঃ মীলাদ বা জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনার সময় যদি কোন ব্যক্তি সত্যিকারে ইশক মুহাব্বতে, লৌকিকতাবিহীন কিয়াম বা দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে কিছু বলার নেই । মজলিসের আদব হচ্ছে অন্যান্য ব্যক্তিগণ তার অনুকরণে কিয়াম করবে । ইশক মুহাব্বত ব্যতিত ইচ্ছাকৃত দাঁড়ানো এটা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্বাদা ও মুস্তাহাব এ শরয়ী নয় । কেননা এটা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর যামানা বা কুরুনে ছালাছায় ছিলনা । ইমাম গাযযালী রহমাতুল্লাহে আলাইহি “এহয়াউল উলুম” কিতাবে নকল করেছেন যে, হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন- ক্ষেত্র বিশেষে সাহাবায়ে কেরাম রাসুলে আকরামের জন্য দাড়াতেন না, কিন্তু হারামাইন শারীফাইনের ওলামায়ে কেরাম অর্থাৎ মক্কা ও মদীনা শরীফের ওলামাগণ মীলাদের সময় কিয়াম করতেন । ইমাম বরযনজী রহমাতুল্লাহে আলাইহি স্বীয় “মাওলিদুন্নবী” কিতাবে লিখেছেন- হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের জন্মবৃত্তান্ত আলোচনা কালে কিয়াম করা বিচক্ষণ ইমামগণ মুস্তাহাব বলেছেন । কতই যে খুশীর সু-সংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যার একমাত্র উদ্দেশ্য হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মানার্থে দাঁড়ানো । (মজমুয়ায়ে ফতোয়া, ২য় খন্ড, ৩৪৭ পৃষ্ঠা). 

মৌলভী ফয়জুল হাসান ছাহারানপুরীর দৃষ্টিতে মীলাদের কিয়াম মুস্তাহাব- সে মৌলভী আশরাফ আলী থানভীর অন্যতম খলিফা ছিল । সে বলে- অর্থাৎ- যে ব্যক্তি মীলাদ মাহফিলে উপস্থিত হবেন, যদি উপস্থিত লোকেরা দাঁড়ায়, তাদের অনুসরণে তার দাঁড়ানো কর্তব্য । যদি তারা না দাঁড়ায়; তবে সে যেন বসে থাকেন । উক্ত মতের সাথে একাত্বতা পোষণ করেছে বুখারী শরীফের টীকাকার মৌলভী আহমদ আলী মোহাদ্দিস ছাহারানপুরী । সে  তার উস্তাদ মোহাদ্দিস মৌলভী ইসহাক দেহলভীর (যিনি শাহ আব্দুল আযীয দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি-এর নাতী) অনুসরণ পূর্বক আমল করেছে । 




(শেফাউস সুদূর, পৃষ্ঠা ১০)