ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ

ঊছুলে ফিক্বাহর সমস্ত কিতাবেই উল্লেখ আছে যে, الامر للوجوب
অর্থাৎ আদেশসূচক বাক্য দ্বারা সাধারণত ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়ে থাকে। যেমন কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, اقيموا الصلوة অর্থাৎ “তোমরা নামায আদায় করো।” কুরআন শরীফ-এর এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই নামায ফরয সাব্যস্ত হয়েছে। অনুরূপ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, واعفوا للحى অর্থাৎ “তোমরা (পুরুষরা) দাড়ি লম্বা করো।” হাদীছ শরীফ-এর এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই কমপক্ষে এক মুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়েছে। ঠিক একইভাবে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অর্থাৎ ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ সোমবার শরীফ-এ  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ করা তথা খুশি প্রকাশ করা বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এ ব্যাপারে কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা ইউনূস-এর ৫৮ নম্বর আয়াত শরীফ-এ বান্দা-বান্দী ও উম্মতদেরকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করার কারণে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করতে সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেন।


তিনি ইরশাদ করেন,
قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ.
অর্থঃ “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি ফযল-করম হিসেবে তাদেরকে যে দ্বীন ইসলাম দিয়েছেন এবং রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সবকিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (সূরা ইউনুস : আয়াত শরীফ ৫৮)
অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ, মুদাক্কিক্ব ও মুহাক্কিক্বগণ উনারা এ আয়াত শরীফ দ্বারা ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করাকে ফরয বলে ফতওয়া দেন। কেননা উক্ত আয়াত শরীফ-এ فَلْيَفْرَحُواْ অর্থাৎ “তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে” আদেশসূচক বাক্য ব্যবহৃত হয়েছে। আর আদেশসূচক বাক্য দ্বারা যে ফরয সাব্যস্ত হয় তা উদাহরণ ও দলীলসহ শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে।
কাজেই, প্রত্যেক বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য তো অবশ্যই বরং কুল-কায়িনাতের সকলের জন্য ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া। এর বিপরীত মত পোষণকারীরা বাতিল ও গোমরাহ।