==========================
সম্প্রতি (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ) খবরে এসেছে পহেলা বৈশাখে ‘বাংলা নববর্ষ ভাতা’ নামে একটি উৎসব ভাতা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। সরকারি চাকরিজীবীদেরকে তাদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ হিসেবে এই বোনাস দেয়া হবে। (সূত্র: দৈনিক সকালের খবর, ১০.০৯.২০১৫)
এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে- সারা বছরে এত উৎসব থাকার পরেও পহেলা বৈশাখে কেন এই বোনাস দেয়া হচ্ছে? বলা হচ্ছে, পহেলা বৈশাখ সার্বজনীন উৎসব। নাউযুবিল্লাহ! তাই সবার মাঝেই এই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিতেই এই বোনাস দেয়া হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! বাদশাহ আকবর যেমন করে তার রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পৃথক একটি ধর্ম চালু করেছিল। সেই ধর্মের নাম দিয়েছিল দীন-ই-এলাহী। দেখা যাচ্ছে, বর্তমান সরকারও ক্ষমতায় থাকার জন্য কথিত সার্বজনীন উৎসবের নাম করে পহেলা বৈশাখে বোনাস দিতে যাচ্ছে। অথচ পহেলা বৈশাখে মুসলমানদের কোনো উৎসব নেই; বরং হিন্দু ও উপজাতিদের বিভিন্ন রকম পূজা রয়েছে। এই পহেলা বৈশাখে রয়েছে -
(১) হিন্দুদের ঘটপূজা,
(২) গণেশ পূজা,
(৩) সিদ্ধেশ্বরী পূজা,
(৪) ঘোড়ামেলা,
(৫) চড়ক বা শিবের উপাসনা,
(৬) গম্ভীরা পূজা,
(৭) কুমীরের পূজা,
(৮) চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা,
(৯) অগ্নিনৃত্য,
(১০) ত্রিপুরাদের বৈশুখ,
(১১) মারমাদের সাংগ্রাই ও পানিউৎসব,
(১২) চাকমাদের বিজু উৎসব
(১৩) হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা,
(১৪) মজুসি তথা অগ্নিপূজকদের নওরোজ।
তাহলে এখানে পরিষ্কার করে দেখা যাচ্ছে যে, পহেলা বৈশাখে মুশরিকদের অনেক পূজা থাকলেও মুসলমানদের কোনো উৎসব নেই। তাহলে কি করে এখানে মুসলমানদেরকে জড়ানো যেতে পারে? মূলত, কাফির-মুশরিকরা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে ঈমানহারা করার জন্যই মুসলমানদেরকে কাফির-মুশরিকদের বিভিন্ন উৎসবে যেতে উৎসাহিত করে। নাউযুবিল্লাহ! তাছাড়া মুসলমানগণ একটা ঘটনা ফিকির করলে সহজেই বুঝতে পারবে। ঘটনাটি হলো- এক এলাকায় এক বুজুর্গ ইন্তেকাল করলেন। কয়েকদিন পর তার এক বন্ধু স্বপ্নে উনাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কেমন আছেন? তিনি তখন বললেন, আমি এখন ভালো আছি, তবে আমি এর আগে কঠিন পেরেশানিতে ছিলাম। তিনি বললেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা যখন আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে নিয়ে গেলেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তুমি তো পূজারী, তোমার জাহান্নামে যাওয়া উচিত। আমি তখন ভয়ে কাঁপতে লাগলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, সেদিনের কথা কি তোমার মনে পড়ো না- যেদিন হিন্দুদের হোলিপূজা চলছিল আর তোমার পাশ দিয়ে একটি গাধা যাচ্ছিল, যার গায়ে কোনো রং ছিলো না। তুমি তখন পান খাচ্ছিলে। মুখ থেকে সেই পানের চিপটি গাধাকে লাগিয়ে বলেছিলে- তোমকে তো কেউ রং লাগিয়ে দেয়নি, আমি লাগিয়ে দিলাম। এটা কি পূজা হয়নি? তখন আমি ভীষণ লজ্জিত হয়ে বললাম, হে বারে ইলাহী! আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি বিষয়টা ফিকির করিনি। কেউ আমাকে বিষয়টা ধরিয়েও দেয়নি। আমাকে ক্ষমা করে দিন। মহান আল্লাহ পাক অন্যান্য নেক আমলের জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তবে সেই ভুলের জন্য আমি এখনো খুবই লজ্জিত আছি।
তাহলে ফিকিরের বিষয়, হিন্দুদের পূজার সাথে মিল করার কারণে যদি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে যারা সরাসরি মুশরিকদের পূজায় অংশগ্রহণ করবে তাদের কি অবস্থা হবে? কঠিন আযাব-গযবে মহান আল্লাহ পাক তাদের গ্রেফতার করবেন। তাই ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সবাই যেন বেশি বেশি করে খুশি প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে পারে সেজন্য ‘১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উপলক্ষে বোনাস’ প্রদান করতে হবে- মুশরিকদের পহেলা বৈশাখে নয়!