ঈদে মিলাদে হাবীবি পালনের ইতিহাস



The famous 8th-century historian Ibn Battuta relates in his Rihla, Vol. 1, p. 309 and 347, that on every Friday, after the salat, and on the birthday of the Prophet, the door of Ka`ba is opened by the head of the Banu Shayba, the doorkeepers of the Ka`ba, and that on the Mawlid, the Shafi`i qadi (head judge) of Mecca, Najmuddin Muhammad Ibn al-Imam Muhyiddin al-Tabari, distributes food to the shurafa' (descendants of the Prophet and to all the other people of Mecca.
১. হযরত আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন -
“ মদিনাবাসী ঈদে মিলাদুন্নবীতে খুবই আগ্রহ ,উৎসাহ ও আনন্দের সহিত এ দিবস উদযাপন করতেন “। 
 মাওরিদ আর রাওয়ী ফি মাওলিদ আন নাবী – পৃ-২৯ 

২. হযরত ইবনে যাওজী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন – 
"হারামাইন শরীফাইন এর  (মক্কা ও মদিনা) , মিসর , ইয়েমেন ও সিরিয়ার এবং আরব এর পূর্ব ও পশ্চিম জনপদের অধিবাসীরা,  নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম উদযাপন করতেন।  তাঁরা রবিউল আওয়াল এর চাঁদ দেখা আনন্দিত হতেন , গোসল করতেন এবং তাঁরা সুন্দর পোষাক পরিধান করতেন , সুগন্ধী মাখতেন দান করতেন এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিভিন্ন বিষয় শুনে জাহির করতেন। ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করে  করে যে নিরাপত্তা ও স্বস্থি , জীবিকার মানোন্নয়ন , শিশু ও সম্পদ বৃদ্ধি এবং শহরের শান্তি ও তাদের  সাফল্য লাভ হয়েছে তা প্রকাশ করতেন। 


 তাফসীরে রুহুল বয়ান – আল্লামা ইসলাইল হিক্কি ( ভলিউম ৯ ,পৃ ৫৬ ) 
  আদ দুররুল মুনাজ্জাম   পৃ ১০০/১০১ 
 আল মিলাদুন্নবি ,পৃ ৫৮
* মিলাদ আল উরুস – উর্দু “বয়ান ই মিলাদুননবি”, পৃঃ ৩৪/৩৫, লাহোর
৩. আজ থেকে ৭০০ বছর পুর্বে জড়ো হয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি পালন হত । ওমর বিন মুল্লা মুহম্মদ মউসুলি রহমতুল্লাহি আলাইহি এ দিবসকে নিয়মিতভাবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জারী রাখার প্রচলন চালু করেন । উনার অনুসরনে ইসলামের অমর সিপাহসালার সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বোনজামাই আরবলের বাদশাহ মালিক আবু সাঈদ মুজাফফর আল দীন রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবি অনুষ্ঠান পালন প্রচলন করেন । ( তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথম করেছেন কিন্তু তাঁর পুর্ব থেকেও ঈদে মিলাদুন্নবি পালন হত ) 
'তারিখ-ই-মারাত আয জামান'' এর মতে ঐ অনুষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা খরছ করা হত । হিজরি ৭ম শতকের শুরুতে সে যুগের বিখ্যাত ওলামা ও প্রসিদ্ধ ফোজালাগণের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব আবুল খাত্তাব উমর বিন হাসান দাওহিয়া ক্বলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ঈদে মিলাদুন্নবির উপর একটি বই লিখেন যার নাম দেন ‘আত-তানভির ফি মাওলিদিল সিরাজ আন নাজির।  তিনি বাদশাহকে এই বই উপহার প্রদান করেন। তিনি নিজে গ্রন্থখানা পাঠ করে বাদশাহকে শুনান। বাদশাহ প্রীত হয়ে তাঁকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা উপহার দেন।“ 
শুধু আরবলের বাদশাহ কিংবা মিশরের সুলতান নন , সুলতান আবু হামু মুসা তালামসানী এবং পুর্বেকার আন্দালুস ও আকসার শাসকেরা ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন। এ দিবসে উনারা হাজার হাজার স্বর্নমুদ্রা ব্যয় করতেন। আল্লামা ইবনে জুজরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সাক্ষী ছিলেন। আবদুল্লাহ তন্সী সুম্মা তালামসানী এ উদযাপনের উপর বিস্তারিত একটি বই লিখেছেন যার নাম দিয়েছেন “ রাহ আল আরওয়াহ “
রেফারেন্স –
 ১. সুবুল আল হুদা ওয়ার রিশাদ ফি সিরাহ খায়ের আল-ইবাদ – মুহব্বদ বিন আলী ইউসুফ দামিশকি  
 ২. আদ – দূরর আল – মুনাজ্জাম ফি হুকমী মাওলিদিন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  
 ৩. আনওয়ার আস সাতিয়া ১৩০৭ হিজরি , পৃ ২৬১ ,
৪।. ওয়াফায়াত আল দায়ান আনবা আবনা আয জামান, কায়রো প্রকাশিত
৫. আল্লামা মুহম্মদ রাজা মিশরি মুহম্মদুর রসুলুল্লিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, লাহোর প্রকাশিত পৃ ৩৩

৪. মুসলমানগণ বড় বড় শহরে বছরের পর বছর ধরে ঈদে মিলাদে হাবীবি পালনার্থে একত্রিত হতেন
শিরাতে হালাবিয়া , পৃ ৮০


৫.“ফয়ূযুল হারামাইন” কিতাবে শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি আরো বলেনঃ 
“আমি এর পূর্বে মক্কা মু’আযযামায় বেলাদত শরীফের বরকতময় ঘরে উপস্থিত ছিলাম। আর সেখানে লোকজন সমবেত হয়ে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর একত্রে দরুদ শরীফ পাঠা করছিলেন। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুভাগমনের সময় সংঘটিত অলৌকিক ঘটনাবলী ও তার নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে সংঘটিত ঘটনাবলী আলোচনা করছিলেন। তারপর আমি সেখানে এক মিশ্র নূরের ঝলক প্রত্যক্ষ করলাম। আমি বলতে পারিনি যে, এ নূরগুলো চর্মচক্ষে দেখেছিলাম এবং এটাও বলতে পারি না যে, এগুলো কেবল মাত্র অন্তর চক্ষুতে দেখেছিলাম। এ দুটোর মধ্যে প্রকৃত ব্যাপার কি ছিল, তা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। অতঃপর আমি গভীরভাবে চিন্তা করলাম এবং উপলব্ধি করতে পারলাম যে, এই নূর বা জ্যোতি ঐ সব ফিরিশতার, যারা এ ধরণের মজলিস ও উল্লেখযোগ্য (ধর্মীয়) স্থানসমূহে (জ্যোতি বিকিরণের জন্য) নিয়োজিত থাকেন। আমার অভিমত হল সেখানে ফিরিশতাদের নূর ও রহমতের নূরের সংমিশ্রণ ঘটেছে”।
 ফয়ূযুল হারামাইন (আরবী-উর্দু), পৃষ্ঠা নং- ৮০-৮১

৬. মক্কা শরিফের পত্রিকা আল ক্বিবলা পত্রিকা মতে ঈদে মিলাদুন্নবি – 
ঈদে মিলাদ্দুন্নবি মক্কা এবং এর অধিবাসীরা পালন করতেন যার নাম ছিল ইয়ম আল ঈদ মাওলিদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । মুসলমানেরা উত্তম খাবার রান্না করতেন । মক্কা শরিফের আমির এবং হিজাজের কমান্ডার তাঁর সেনাদের সাথে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা শরীফ যিয়ারত করতেন এবং ক্বাছীদা পাঠ করতেন।  মক্কা শরীফ থেকে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থান পর্যন্ত আলোকসজ্জা করা হত এবং দোকান পাট সুসজ্জিত করা হত। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থানে সকলে মিলে ক্বাছীদা পাঠ করতেন । ১১ রবিউল আউওয়াল শরীফের রাতে বাদ ইশা ঈদে মিলাদুন্নবি পালনের লক্ষে একস্থা হতেন। ১১ রবিউল আউওয়াল শরীফের মাগরীব থেকে ১২ রবিউল আউওয়ালের আছর নামাজ পর্যন্ত প্রতি নামাজের পরে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হত ।

রেফারেন্স - 
 মাসিক তরিকত –লাহোরঃ জানুয়ারী ১৯১৭ , পৃ ২/৩

৭. ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বইতে মিলাদুন্নবি সম্পর্কে লিখেন –
হারামাইন শরীফে , মিশর , ইয়েমেন , সমগ্র আরবের মুসলমান অনেকদিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন । রবিউল আউওয়াল মাসের চাঁদ দেখে তাদের সুখের সীমা ছাড়িয়ে যেত । তাঁরা একসাথ হয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন । যার কারনে উনারা সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থান করেছেন। 
 বায়ান আল মাওলিদ আন নাবী , পৃ ৫৮ 

৮. শায়খুল ইসলাম ইবনে হাজর আল হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেন –
আমাদের সময়ে যখন ঈদে মিলাদুন্নবি প্লাওনের জন্য জড়ো হতেন ,তাঁরা ভালো কাজের মধ্যে মশগুল থাকতেন। যেমন – দান সদকা কর হত, যিকির হত, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা হত। 
 ফতোয়ায়ে আল হাদিথিয়াহ – পৃ – ২০২
৯. Encyclopedia of Islam verifies:
 সমগ্র ইসলামিক বিশ্ব আনন্দ ও খুশির সাথে এ দিবস পালন করে আসছে এবং এখনো করছেন।
 [Encyclopedia of Islam, Vol. 21, Page 824, Published By: Punjab University, Lahore]