চোক্কা মৌলভীদের নিত্য নতুন ফতওয়াবাজি

চোক্কা মৌলভীদের নিত্য নতুন ফতওয়াবাজির ফল : ইসলাম একটি কাটকোট্টার ধর্ম !
বর্তমান প্রজন্মের কাছে ইসলাম ও বিনোদন এ দুটো শব্দ সম্পূর্ণ বিপরীতার্থক শব্দ। এমন একটি ধারণার উদ্ভভ হয়েছে যে-
যে সঠিকভাবে ইসলাম পালন করে, তার পক্ষে বিনোদন লাভ করা সম্ভব নয়। যদি সে ইসলাম থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তবেই কেবল বিনোদন লাভ করা সম্ভব। নাউযুবিল্লাহ।
সত্যিই বলতে, বর্তমানে বিনোদনের যতগুলো মাধ্যম চালু আছে তার প্রত্যেকটি হারাম। আপনি একটি সাধারণ অনুষ্ঠানে গেলে দেখবেন- বিনোদনের যতগুলো আইটেম আছে সবগুলোই শরীয়ত বিরুদ্ধ কাজ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে । যেমন ধরুন-


১) কেউ হয়ত সেলফি তুলছে কিংবা ভিডিও করছে। অথচ বুখারী শরীফে ছবিকে জাহান্নামী হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।
২) ছেলে-মেয়েরা হয়ত একত্র হয়ে কথা বলছে। অথচ বেপর্দা হওয়া কবিরা গুনাহ।
৩) কেউ হয়ত খেলাধূলায় মত্ত হয়েছে। এটাও হাদীস অনুসারে হারাম।
৪) হয়ত গান বাজনা কিংবা বেপর্দা নাচ হচ্ছে, সেটাও হারাম।
৫) বর্তমানে অনেক অনু্ঠানে মদ গেলানো হচ্ছে।
কিন্তু কেন এমন সিচুয়েশন তৈরী হলো ?
কেন হালাল কাজ করে বিনোদন লাভ করা সম্ভব নয় ?
কেন হারাম কাজগুলোর মধ্যেই শুধু বিনোদন রয়েছে ?
নাউযুবিল্লাহ।
আসলে ইসলাম কখনও বিনোদনশূণ্য ধর্ম ছিলো না, একজন মানুষের বিনোদন লাভের জন্য যতগুলো হালাল উপাদান দরকার তার সবগুলোই ইসলামে নিহিত রয়েছে। কিন্তু চোক্কা মৌলভীদের আলগা ফতওয়াবাজির কারণে মানুষ সেসব থেকে সরে গেছে। আর যেহেতু একটি গ্লাস কখনও খালি থাকতে পারে না। হয় সে পানি দ্বারা পূর্ণ
হবে, নয়ত বাতাস দ্বারা। ঠিক তেমন একজন মানুষ কখনই খালি থাকতে পারে না। হয় সে হালাল উপায়ে বিনোদন করবে, আর সেটা না পেলে সে হারাম উপায়ে বিনোদন লাভের চেষ্টা করবে। নাউযুবিল্লাহ।
যেমন ধরুণ, চোক্কা মৌলভীরা আলগা ফতওয়া দেয়, যে কোন দিবস পালন করা নাকি হারাম। উদাহরণস্বরূপ- জন্মদিন পালন করাও নাকি হারাম। অথচ ‘ইসলামের কোথাও জন্মদিন পালন করা হারাম’ এমন একটাও দলিল নেই । বরং শুক্রবার আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টি হয়েছেন এবং ঐ দিন দুনিয়া থেকে বিদায় নিবেন বলে ঐ দিনকে খুশির দিন বলা হয়েছে। চৌক্কা মৌলভীদের ফতওয়া দেওয়া উচিত ছিলো- জন্মদিন পালন করা হারাম নয়, বরং জন্মদিনে হারাম কাজ করা হারাম।
হাদীস শরীফে বর্ণিত নবীজি বিভিন্ন সময় এমন অনেক কাজ শিক্ষা দিয়েছেন, যা পালন করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনোদনভাবে সৃষ্টি হয়। যেমন:
১) ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন দিবস পালন করা,
২) বিভিন্ন মাহফিল করা ও তবারকের ব্যবস্থা
৩) মিছিল করা ও তাকবীর দেওয়া,
৪) হামদ-নাত-ক্বসিদা পাঠ করা,
৫) বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নতুন কাপড় পরিধান করা, সুগন্ধি দেওয়া,
৬) উত্তম খাদ্য খাওয়া ও খাওয়ানো,
৭) প্রশংসাসূচক স্তুতি (আল্লাহ ও রাসূলের) বর্ণনা করা।
৮) ঘর-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান সাজানো,
৯) বিনোদনমূলক কথা বলা (অবশ্যই হালাল)।
১০) শরীয়তের বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করা।
সত্যিই বলতে, মুসলমানদের বিনোদনমূলক কাজগুলোর প্র্যাকটিস কমে যাওয়ার কারণেই তার অলটারনেটিভ হিসেবে হারাম কাজগুলো ঢুকে গেছে। যদি মুসলমানদের মধ্যে হালাল বিনোদনের ব্যবস্থাগুলো চালু থাকতো তবে একদিকে যেমন ইসলামী ঐতিহ্যগুলোর প্রচার ঘটতো, তেমনি কাফিরদের কুফরী সিস্টেমগুলো মুসলমানদের ভেতর প্রবেশ করতে পারতো না। কিন্তু একমাত্র চোক্কা মৌলভীদের আলগা ফতওয়াবাজির কারণে মুসলমানরা হালাল বিনোদন থেকে দূরে সরে গেছে। এরাই বিভিন্ন ইসলামী দিবস পালন দেখলে, মেহমানদারি দেখলে, মিছিল-তাকবীর দেখলে বিদাত বিদাত ফতওয়া ছেড়েছে। ফলস্বরূপ ইসলাম হয়ে গেছে বিনোদনশূণ্য, এক কাঠকোট্টা’র ধর্ম।