নবীজীর প্রতি সলাত সালামের যে কি গুরুত্ব আর কি মর্যাদা এটা প্রকৃত ঈমানদার ব্যাতীত কেউ বুঝবে না। আল্লাহ পাক বলেনঃ
ان الله وملاءكته يصلون على النبى يا ايها الذين امنوا صلوا عليه و سلمو ا تسليما
অর্থঃ "নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাকুল সালাত পাঠান নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর। কাজেই হে ঈমানদাররা! তোমরাও তার ওপর যথাযোগ্য মর্যাদায় সালাত পাঠাও, আর সালাম জানাও।
(সূরা আহজাব : ৫৬)।
এ আয়াতের তাফসীরে একটা ঘটনা বর্নিত আছেঃ
হযরত ইব্রাহিম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে আল্লাহ পাক অনেক শান মান দান করেছিলেন। ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম উনার ২০০ টা কুকুর ছিলো, যাদের প্রত্যেকের গলায় স্বর্ণের পাত লাগানো ছিলো চিহ্নিত করার জন্য । আর ছিলো অনেক ফসলের জমি। কুকুর গুলো সেগুলা পাহারা দিয়ে রাখতো। তো একদিন স্বয়ং ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তিনি নিজে জমি পরিদর্শনে গেলেন। হঠাৎ দেখতে পেলেন এক বিভৎস্য , কদাকার কি যেন একটা উনার দিকে আসতেছে। জিনিসটা কাছাকাছি আসতে লাগলো, এমন ভয়ানক আকৃতি যে মানুষ জন দেখলে পালিয়ে যাবে। কাছাকাছি আসলে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম বললেন, তুমি কে? তোমার আকৃতি এমন কেন?
তখন সেই আকৃতির প্রানী বললো, সে কথা জানানোর জন্যই আপনার কাছে এসেছি। আমি একজন ফেরেশতা। একটা আমল করার ব্যাপারে না করলে কি হয় এটা পরীক্ষা করতে গিয়ে এমন বিকৃত আকৃতির হয়ে গেছি, এবং দুনিয়ায় নিক্ষিপ্ত হয়েছি। অনেকের কাছেই সুপারিশের জন্য গেছি, কিন্তু কাজ হয় নি। তখন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম বললেন, তুমি কি করেছিলে?
সে বললো, আল্লাহ পাক আদেশ করলেন সকল ফেরেশতাদের কে সার্বক্ষণিক ভাবে আখেরী রসূল হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সলাত পাঠ করতে। আমি ভাবলাম না করলে কি হতে পারে? এটা ভাবা মাত্র আমাকে দুনিয়াতে নিক্ষেপ করা হলো, চেহারা বিকৃত হয়ে গোলো। হে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম আপনিতো আল্লাহর খলীল , আপনি আমার জন্য সুপারিশ করুন। তখন হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সুপারিশ করার জন্য হাত তুললেন। বললেন, আয় আল্লাহ পাক আপনার যে রসূলের প্রতি প্রতি সলাত সালামের এত মূল্য সেই নবীর সলাত সালামের উসিলায় এই ফেরেশতাকে ক্ষমা করুন। তখন, আল্লাহ পাক বললেন, হে আমার খলীল ! আপনি এমন এক সুমহান উসীলা দিয়ে দোয়া করেছেন যা অবশ্যই কবুল করতে হবে। আমার হাবীবের উসীলায় কিছু চাইলে আমি তা ফিরিয়ে দেই না। তখন সেই ফিরিশতাকে ক্ষমা করে ফিরিয়ে নেয়া হলো। সুবহানাল্লাহ্ !!!
এখন চিন্তা করুন, নবীজীর প্রতি সলাত সালামের কি ফযিলত। আর সে কারনেই আল্লাহ পাক বলেছেন, হে ঈমানদারগন তোমরা আমার রসূলের প্রতি সলাত পাঠ করো, এবং সালাম দাও আদবের সাথে।"
সূতরাং নবীজীর আগমন দিবসের সম্মানার্থে আমাদের উচিত বেশি বেশি সলাত সালাম পাঠ করা। তাহলেই আমাদের কল্যান। আর যারা অন্ধের মত না বুঝে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরোধীতা করে তাদের কি পরিনাম হবে সেটাও চিন্তা করুন।