ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা হযরত সা্লাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি’র জয়লাভের মূল রহস্য



ইতিহাস বলছে,
সাহাবীগণ ঈদে মীলাদুন নবী পালন করতেন (https://goo.gl/i8UX7a)
ইমাম মুজতাহিদগণ ঈদে মীলাদুন নবী পালন করতেন (https://goo.gl/iTtzaa)
এবং মুসলিম মিল্লাতে ঈদে মীলাদুন নবী পালন হয়ে আসছিলো (https://goo.gl/N6aQLJ)
কিন্তু এ অনুষ্ঠানগুলো উনারা করতেন প্রত্যেকে আলাদাভাবে, পারিবারিকভাবে কিংবা জামাতবদ্ধ হয়ে। কিন্তু খিলাফত বা সালতানাতের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হতো না। অথচ বর্তমানে প্রায় প্রত্যেক মুসলিম দেশেই ঈদে মীলাদুন নবী সরকারিভাবে চালু আছে।

১০৯৯ সনে ইংরেজ, ফ্রেঞ্চ ও জার্মান শক্তি একত্রে মুসলমানদের প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ দখল করে নেয়। মুসলিম জাতির বীর যোদ্ধা হযরত সালাউদ্দিন অাইয়ুবী রহমতুল্লাহি এমন একটি সময়ে আসেন (১১৩৮-১১৯৩ সন) যখন মুসলিম জাতি দ্বিধাবিভক্ত। কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য যে মনোবল তথা শক্তি দরকার সেটা নাই। এর উপরে ইরাকের খলিফার নৈতিক অধঃপতনের কারণে মুসলিম জাতির তখন টালমাটাল অবস্থা। এমন সময় হযরত সালা্উদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি’র আগমন।
তিনি চিন্তা করলেন-“এমন একটা কিছু করা দরকার, যার মাধ্যমে মুসলিম জাতির ঈমানি চেতনা ‍বৃদ্ধি পাবে এবং মুসলমানরা কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মনোবল অর্জন করতে পারবে।”
তখন হযরত সালাউদ্দিন অাইয়ুবি রহমতুল্লাহির বোন জামাই এবং ন্যায় পরায়ন ও তাকওয়াধারী বাদশাহ মালিক মুজাফফর রহমতুল্লাহি হযরত সালাউদ্দিন আইয়ুবিকে একটি বুদ্ধি দিলেন। বললেন-, সালাতানাতের পক্ষ থেকেই ঈদে মীলাদুন নবী উদযাপন করার জন্য। এতে মানুষের মধ্যে ঈমানি চেতনা বৃদ্ধি পাবে এবং মুসলমানরা কাফিরদের বিরুদ্ধে শক্ত জবাব দিতে পারবে। হযরত সালাউদ্দিন আইয়ুবি রহমতুল্লাহি বুদ্ধিটি গ্রহণ করলেন এবং হজ্জে আগত হাজি সাহেবদের জানিয়ে দিলেন তারা এ যেন এ বছর থেকে সবাই একত্রে ঈদে মীলাদুন নবী পালন করে (৫৭৯ হিজরী/১১৮৩ সন)। এর পরের বছর (৫৮০হিজরী/১১৮৪ সন) হযরত সালাউদ্দিন অাইয়ুবী রহমতুল্লাহি ঈদে মীলাদুন নবী উপলক্ষে সালতানাতের পক্ষ থেকে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সহিত ঈদে মীলাদুন নবী’র আয়োজন করলেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন, এরমধ্যে ছিলো নবীজির জীবনী লেখনি এবং নাত শরীফ রচনা প্রতিযোগীতা। এ প্রতিযোগীতায় শায়েখ জাফর আল লায়তানি প্রথম পুরষ্কার লাভ করেন।
নবীজির বিলাদত দিবস বা ঈদে মীলাদুন নবী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সহিত পালন করার কারণে মুসলমানদের মধ্যে ঈমানি চেতনা ফিরে আসে এবং মুসলমানরা কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার আত্মিক শক্তি লাভ করেন। দেখা যায় মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই (৫৮৩হিজরী/১১৮৭ সন) মুসলমানরা কাফিরদের পরাজিত করে জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সুবহানাল্লাহ।
(তথ্যসূত্র:https://goo.gl/gIEqCy)
উল্লেখ্য ঐ সময় সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি’র মুসলিম সালতানাত যতদূর বিস্তৃতি ছিলো সব অঞ্চলেই ঈদে মীলাদুন নবী সরকারিভাবে পালন শুরু করা হয়। বর্তমানে মুসলিম দেশগুলোতে যে সরকারিভাবে ঈদে মীলাদুন নবী পালন হচ্ছে সেটাও ঐ অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায়ই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।