ইন্তিকাল দিবসে আনন্দ প্রকাশ করার বিধান নিয়ে কিছু কথা

ইন্তিকাল দিবসে আনন্দ প্রকাশ করা কি অন্যায় ? শরিয়ত কি বলে ?
উক্ত বক্তব্য কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর সম্পূর্ণ খিলাফ, যা কাট্টা কুফরী। কেননা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের বিলাদত শরীফ, বিছাল শরীফ, পুনরুত্থান প্রত্যেকটিই রহমত, বরকত ও সাকীনার কারণ এবং ঈদ বা খুশি প্রকাশের কারণ।


যেমন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- ‘উনার প্রতি সালাম (শান্তি), যে দিন তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন এবং যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করবেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।’ (সূরা মারইয়াম-১৫)
অনুরূপ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম সম্পর্কে উনার নিজের বক্তব্য কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- ‘আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি বিলাদত শরীফ লাভ করি, যে দিন আমি বিছাল শরীফ লাভ করি এবং যেদিন পুনরুত্থিত হবো।’ (সূরা মারইয়াম -৩৩)
আর হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে- আল্লাহ পাক এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘আমার হায়াত-মউত সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণ বা খায়ের-বরকতের কারণ।’ (কানযুল উম্মাল)
এছাড়া, হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে- আল্লাহ পাক- এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছে জুমুআর দিন। এ দিনে হযরত আদম আলাইহিস সালাম পয়দা হয়েছেন এবং এ দিনেই তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেছেন।’ (নাসায়ী শরীফ)
অতঃপর আল্লাহ পাক- এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘এ জুমুআর দিন হচ্ছে এমন একটি দিন, যে দিনকে আল্লাহ পাক ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
প্রতিভাত হলো যে, জুমুআর দিনটি আল্লাহ পাক- এর নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম- এর বিছাল শরীফ-এর দিন হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সে দিনটিকে খুশির দিন হিসেবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাহলে কি আল্লাহ পাক অন্যায় করেছেন? নাঊযুবিল্লাহ!
আর আল্লাহ পাক- এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই জুমুআর দিনকে খুশির দিন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তাহলে তিনিও কি এ ঘোষণা দিয়ে অন্যায় করেছেন? নাঊযুবিল্লাহ!
অতএব, শরীয়তের দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা নবীজীর বিছাল শরীফ-এর দিন ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফকে কারো পক্ষেই শোকের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব নয়। কাজেই, যেদিনটি শোকের দিন নয়, সেদিন কি করে শোক পালন করা যাবে? তাই আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফকে নিয়ামত মনে করে উক্ত দিনে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করাই হচ্ছে প্রত্যেক উম্মতের দায়িত্ব ও কর্তব্য।