যারা বলে “নবীজীর (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে, ১২ই রবিউল আউয়াল জন্মদিন এটা সবচেয়ে দুর্বল মত।” তাদের এ কথার সমর্থনে পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফ-এর ছহীহ্ কোন দলীল-প্রমাণ নেই। তাই সম্পূর্ণ উদ্ভট ও মনগড়া কথা। কাজেই তা গ্রহণযোগ্য নয়।
আর “১২ই রবিউল আউয়াল আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর দিন এটাই সবচেয়ে ছহীহ্ ও মশহুর মত।”
যেমন, এ প্রসঙ্গে হাফিয আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ ছহীহ্ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন,
عن عفان عن سعيد بن مينا عن جابر وابن
عباس رضى الله عنهما قالا ولد رسول الله صلى الله
عليه وسلم عام الفيل يوم الاثنين الثانى
عشر من شهر ربيع الاول.
অর্থঃ- “হযরত আফফান থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ ‘হস্তি বাহিনী বর্ষের ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার হয়েছিল।” (বুলুগুল আমানী শরহিল ফাতহির রব্বানী, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
উক্ত পবিত্র হাদীস শরীফ বর্ণনার সনদের মধ্যে প্রথম বর্ণনাকারী হযরত আফফান সম্পর্কে মুহাদ্দিছগণ বলেছেন, “আফফান একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য ইমাম, প্রবল স্মরণশক্তি ও দৃঢ়প্রত্যয় সম্পন্ন ব্যক্তি।” (খুলাসাতুত্ তাহযীব)
“দ্বিতীয় বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনে মীনা। তিনিও অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।” (খুলাসাহ্ তাক্ববীব) আর তৃতীয় হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। এ দু’জন উচ্চ পর্যায়ের ফক্বীহ্ ছাহাবীর বিশুদ্ধ সনদ সহকারে বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হলো যে, “১২ই রবিউল আউয়াল হচ্ছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র বিলাদত দিবস।” এ ছহীহ্ ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনার উপরই ইমামগণের ইজমা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (সীরাত-ই-হালবিয়াহ, যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব, মাসাবাতা বিস্ সুন্নাহ্ ইত্যাদি)
উপরোক্ত বিশুদ্ধ বর্ণনা মুতাবিক ১২ই রবিউল আউয়াল হচ্ছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র বিলাদত দিবস। এটাই ছহীহ্ ও মশহুর মত। এর বিপরীতে যেসব মত ঐতিহাসিকগণ থেকে রয়েছে তা অনুমান ভিত্তিক ও দুর্বল। তা গ্রহণযোগ্য নয়।