আখেরী নবী, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার মুবারক অধিষ্ঠান ও পবিত্রতা বর্ণনার মাধ্যমে আল্লাহ পাক বিদ্বেষ পোষণকারীদের মন্দ স্বভাব ও জঘন্য দোষ এভাবে বর্ণনা করেছেন: “আপনার প্র
তিপালকের অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন। আর আপনার জন্য অবশ্যই রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার এবং আপনি অবশ্যই মহানতম চরিত্রের অধিকারী।” (সূরা ক্বলম : আয়াত শরীফ ২-৪)।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনাকে ওলীদ বিন মুগীরা পাগল বলে অপবাদ দিয়েছিল। এতে তার প্রতি অসন'ষ্ট হয়ে আল্লাহ পাক এই আয়াত শরীফ-এ আপন হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার মর্যাদা ও মর্তবা প্রকাশ করেছেন। অতঃপর ওলীদ বিন মুগীরার স্বভাব সম্পৃক্ত দোষ এবং আভ্যন্তরীণ কলঙ্ক ও গলদ বিশ্ববাসীর অবহিতির জন্য আল্লাহ পাক স্থায়ী দৃষ্টান্ত হিসেবে এভাবে পাক কুরআন-এ অন্তর্ভুক্ত করেছেন: “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি তার কথায় কর্ণপাত করবেন না। সে (ওলীদ বিন মুগীরা) মিথ্যে শপথকারী, অপমানিত, নিন্দাকারী, পরের দোষ বর্ণনাকারী, চোগলখোর, সৎকাজে নিষেধকারী, সীমা লংঘনকারী, পাপিষ্ঠ, বদ চরিত্র এবং অধিকন' সে অবৈধ সন্তান।” (সূরা ক্বলম : আয়াত শরীফ ১০-১৩)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ নাযিলের পর ওলীদ তার মাকে জিজ্ঞেস করে, “মুহম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম) উনাকে অপবাদ দেয়ার কারণে আমার দশটি দোষ বর্ণনা করা হয়েছে। এই দশটি দোষের মধ্যে আমি অবশ্যই নয়টিতে দোষী। কিন' দশম দোষটি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। অর্থাৎ আমি অবৈধ সন্তান কিনা, মা তুমি সে সম্পর্কে আমাকে সত্য সংবাদ দাও। নইলে তরবারির আঘাতে তোমার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলব।”
এর জবাবে তার মা প্রকম্পিত কণ্ঠে জানায়, “সত্যি তুমি অবৈধ সন্তান। তোমার পিতা ছিল অনেক ধন-সম্পদের মালিক, কিন' পুরুষত্বহীন। আমাদের সন্তানাদি না হলে ধন-সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে যাবে, এই আশঙ্কায় আমি এক রাখালের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম। তুমি সেই অবৈধ অবস্থানের ফসল।”
এখানেই শেষ নয়। আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন: “আমি তার নাসিকার উপর দাগ লাগিয়ে দিব।” (সূরা ক্বলম : আয়াত শরীফ ১৬) উদ্দেশ্য, যাতে তার (ওলীদ বিন মুগীরা) অন্তরের কলঙ্ক মুখাবয়বেই ধরা পড়ে। কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, জীবদ্দশাতেই তার আকৃতি পরিবর্তিত হয়েছিল, যদিও পরকালের শাস্তি তার জন্য অবধারিত।
আলোচ্য আয়াত শরীফ আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা, উনাকে অপবাদ দেয়া, হেয় প্রতিপন্ন করা এবং ঈদে মিলাদুননবির বিরোধীতা করার অপপ্রয়াসে যেসব হতভাগ্যরা লিপ্ত, তাদের মধ্যে বর্ণিত সমুদয় দশটি দোষ অথবা কিছু দোষ অবশ্যই বিদ্যমান থাকবে।