ফেরেস্তাগনের কিয়াম : দিবা -রাত্রি ২৪ ঘন্টা :
আল্লাহর ৭০ হাজার ফেরেস্তা সর্বদা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারক দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে নুরের পাখা রওজা মোবারকে সামিয়ানার মত বিস্তার করে দুরূদ ও সালাম পেশ করে থাকেন | অথচ আমরা ফেরেস্তাদের অনুকরনে ৫/১০ মিনিট দাড়িয়ে দুরূদ ও সালাম পেশ করলে বেদাত হয়ে যায় বলে এক শ্রেনীর আলেম ও মুসলমান নামধারী দুশমনে রাসুলরা ফতোয়া দিয় বসে ! ফেরেস্তারাও কি তাহলে বেদাতে লিপ্ত ?
এই প্রসঙ্গে একটি হাদিস শরীফ উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি | "হযরত নোবাইহাতা ইবনে ওহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি তাবেয়ী হতে বর্নিত ; একদিন হযরত কা'ব আহবার রহমতুল্লাহি আলাইহি ( তাবেয়ী ) হযরত আয়েশা আলাইহাস সালাম খেদমতে উপস্থিত হলেন , অতঃপর সাহাবায়ে কেরাম তথা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে- মানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে লাগলেন | হযরত কা'ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন : এমন কোন দিন উদয় হয়না- যে দিনে ৭০ হাজার ফেরেস্তা নাজিল হয়ে রাসুলুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারাক বেষ্টন করে তাঁদের নুরের পাখা বিস্তার করে সন্ধা পর্যন্ত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দুরুদ ও সালাম পাঠ না করেন | অতঃপর যখন সন্ধা হয়ে আসে তখন তাঁরা আকাশে আরোহন করেন এবং তাদের অনুরূপ সংখ্যায় (৭০ হাজার ) ফেরেস্তা দ্বারা অবতরন করে তাদের মতই দুরুদ ও সালাম পাঠ করতে থাকেন | আবার কেয়ামতের দিন যখন জমিন (রওজা মোবারক) বিদীর্ন হয়ে যাবে , তখন তিনি ৭০ হাজার ফেরেস্তা দ্বারা বেস্টিত হয়ে প্রেমাস্পদের রুপ ধারন করে আসল প্রেমিকের সাথে শীঘ্র মিলিত হবেন |"
[ দারমী ও মিশকাত বাবুল কারামত
হাশিয়াহ ]
উল্লেখিত হাদিসে নিম্নোক্ত বিষয়ঘুলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ ও প্রণিধানযোগ্য :
১. কা'ব আহবার রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারকে ৭০ হাজার
ফেরেস্তা নাজিল হতে নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন | এটি উনার কারামতের প্রমান |
[ লোমআত ]
২.আম্মাজান হযরত আয়েশা রাদ্বি আলাইহাস সালাম উপস্থিতিতে কা'ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এ সাক্ষ্য
দিয়েছেন |
৩. রওজা মোবারাকে দিনে ৭০ হাজার এবং রাত্রে ৭০ হাজার ফেরেস্তা নাজিল হয় এবং তাদের ডিউটি হলো , রওজা মোবারক বেষ্টন করে নুরের পাখা রওজা মোবারকে সামিয়ানা স্বরূপ বিছিয়ে দাঁড়ি্যে দাঁড়িয়ে দুরুদ ও সালাম পাঠ করা |ইহাই মিলাদ ও কিয়ামের সারাংশ | মুসলমানগন ফেরেস্তাদের অনুকরনে কেয়াম সহকারে দরূদ ও সালাম পড়ে থাকেন |
[ আনওয়ারে আফতাবে সাদাকাত ]
৪. হাদিসে উল্লেখিত " মিসলাহুম" শব্দ দ্বারা প্রমানিত হলো যে সব সময় নিত্য নতুন অন্য একদল ফেরেস্তা আসেন | জীবনে একবারই তাঁরা এ সুযোগ পেয়ে থাকেন |
৫. উক্ত ফেরেস্তারা অন্য কোন আমল না করে কেয়াম অবস্থায় শুধু দরূদ ও সালাম পড়েন |
৬. রওজা মোবারকে পলা ক্রমে দিন রাত ২৪ ঘন্টাই মিলাদ ও কেয়াম হয় |
৭. মিলাদ মাহফিলে উত্তম ভাবে আলোক সজ্জা করা ও সামিয়ানা টাঙ্গানো বৈধ |
৮. হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়ানোর জন্য চোখের সামনে উপস্থিত থাকা শর্ত নহে | কেননা , ফেরেস্তাদের চোখের সামনে শুধু রওজা মোবারাক পরিদৃষ্ট ছিল |
৯. কেয়ামতের দিবসে পর্যন্ত কেয়াম সহ দুরুদ ও ষালামের এই ধারা অব্যাহত থাকবে | দুশমনেরা তা বন্ধ করতে পারবে না |
১০. কেয়ামতের দিবসে রওজা মোবারক অক্ষত থাকবে ধ্বংস হবে না |
১১. রোজ হাশরে ৭০ হাজার ফেরেস্তা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পরিবেস্টন করে ও জুলুছ করে খোদার দরবারে নিয়ে যাবেন । নবীজির জুলুছ করা ফেরেস্তাগনের ই সুন্নত |
১২. সে দিন খোদা হবেন হাবীব এবং নবী (সা) হবেন মাহবূব | হাদিসে উল্লেখিত " ইয়ারকাউনা " শিব্দটি বাবে নাছারা হতে উৎপন্ন ক্রিয়া পদ | মুল ধাতু " ঝিফাফুন " অর্থ মিলন | খোদার সাথে সে দিন প্রিয় মাহবুবের মিলন হবে |
[ লোমআত ]
"আমরা মিলাদুন্নবীর মাহফিল জীবন ভর
করে যাবো | হে নজদীগন ( আব্দুল ওয়াহাব
নজদীর অনুশারীগন ) ! তোমরা জ্বলতে থাক |
জ্বলে মরাই তোমাদের কাজ