উল্লেখ্য, মীলাদ শরীফের প্রবর্তক বাদশাহকে যারা বিদয়াতী ও ফাসিক বলে তারা প্রকৃতপক্ষে মীলাদ শরীফ বিদ্বেষী বিদয়াতী ও ফাসিক বলার কারণ স্বরূপ বলে, প্রথমতঃ মীলাদ মাহফিল আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় ছিলনা, সে হিসেবে তিনি বিদয়াতী। আর দ্বিতীয়তঃ মীলাদ মাহফিলে উক্ত বাদশাহ্ প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করতেন, এ টাকা-পয়সা খরচ করাকে তারা অপচয় সাব্যস্ত করে তাঁকে ফাসিক বলে থাকে।
মীলাদের ব্যবস্থা আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানাতেই ছিলো
অথচ মীলাদ শরীফ সম্পর্কে বলতে হয়, এটি আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানাতেই ছিল।
এ প্রসঙ্গে হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, “তিনি একদিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ঘরে গেলেন। তিনি সেখানে দেখতে পেলেন যে, হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁরা নিজ সন্তানাদি ও আত্মীয়-স্বজনদের একত্রিত করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ (জন্ম বৃত্তান্ত) আলোচনা করছেন। এটা দেখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি হলেন এবং বললেন, হে আমের! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক তোমার জন্য তাঁর রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করেছেণ এবং সকল ফেরেশতাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। আর যারা তোমার ন্যায় এরূপ আমল করবে, তারাও তোমার ন্যায় নাযাত পাবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলুদিল বাশীর ওয়ান্ নাযীর, সুবুলুল হুদা ফী মাওলুদিল মুস্তফা)
আরো বর্ণিত আছে যে, “একদিন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সেখানকার সকল লোকদেরকে তাঁর নিজ ঘরে একত্রিত করে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ বা জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা করেন, যা শুনে উপস্থিত সকলেই আনন্দচিত্তে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন। এমন সময় রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হলেন এবং তাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।” (মাওলুদুল কবীর, দুররুল মুনাজ্জাম, সুবুলুল হুদা ফী মাওলুদিল মুস্তফা)
অতএব, যে মীলাদ শরীফের অস্তিত্ব আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় ছিলো সে মীলাদ শরীফ পাঠকারীকে বিদয়াতী বলা কুফরী।
সূতরাং উল্লিখিত বাদশাহকে বিদয়াতী বলা কাট্টা কুফরী হবে।