খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চালু ছিল এবং এর জন্য অন্যকে তাগীদ করেছেন।



মক্কা শরীফের অন্যতম প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শিহাব উদ্দিন আহমদ ইবনে হাজার আল হায়তামী আশশাফী রাহমাতুল্লাহে আলাইহি (জন্ম- ৮৯৯ হিজরী, ওফাত- ৯৭৪ হিজরী) তাঁর সুবিখ্যাত “আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের মধ্যে নিম্নোক্ত হাদীস গুলো তিনি বর্ণনা করেন-
১। সর্বশ্রেষ্ট সাহবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন-
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ مَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَنَرَفِيْقِى فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”।
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭]


২। দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ اَخْيَا الاسْالاَمُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করলো, সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো”।
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭]
৩। তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান বিন আফফান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قرأة مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَكَا نَّمَا ثَهِيد غَزُوَةِ بَدَر رَوحُنَيْنُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন নবীজীর সাথে বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো”।
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮]
৪। চুতর্থ খলিফা হযরত আলি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন-
مَنْ عَظَّمَ مَوْ لِدِ النَّبِى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَكَانَ سَبَبَا لِقرا ته لا يَحْرُمُ مِنَ الدُّنْيَا اِلا َّبِالاِ يْمَانِ وَيَدْخُلُ الجَنَّهَ بِغَيْرِ حِسَاب
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করবে এবং উদ্যোক্তা হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮]
বিখ্যাত মুহাদ্দীস আল্লামা ইউসুফ নাবহানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মতে হাদীসগুলো সম্পূর্ণ সহীহ এবং সনদ নির্ভরযোগ্য। তিনি তাঁর ‘জাওয়াহেরুল বিহার’ এর গ্রন্থে ৩য় খন্ডের ৩৫০ পৃষ্ঠায় তা উল্লেখ করেছেন ।
অপরদিকে মক্কা শরীফের স্বনামধন্য আল্লামা ইবন হাজর হায়তামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর নির্ভরতা প্রশ্নাতীত। তাঁর “আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের উপর বহু শরাহ লিখা হয়েছে অর্থাৎ তাঁর লিখিত কিতাবকে আলেমগণ নির্ভরযোগ্য হিসেবেই গণ্য করতেন এবং সেই সাথে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করতেন। তন্মধ্যে আল্লামা দাউদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লামা সাইয়িদ আহমদ আবেদীন দামেস্কি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি অন্যতম। তাঁর রিওয়াতকৃত উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণীত হল যে, খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চালু ছিল এবং তারাও এর জন্য অন্যকে তাগীদ করেছেন।