মীলাদ-মাহলিলের উদ্দেশ্যে তাওফিক আন্দাজ বা সাধ্যমত ব্যয় করাটা অপব্যয়, অপচয় কোনটিই নয়। কারণ মীলাদ মাহফিল হচ্ছে একটি নেক বা দ্বীনি কাজ। এ উদ্দেশ্যে টাকা-পয়সা ব্যয় করা অপচয় তো নয়ই বরং ব্যয় করার জন্য যাতে কোনরূপ কার্পণ্য করা না হয় সে ব্যাপারে শরীয়তে আদেশ করা হয়েছে।
কালামুল্লাহ্ শরীফে পবিত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
والذين اذا انفقوا لم يسرفوا ولم يقتروا وكان بين ذلك قواما.
অর্থঃ- “আল্লাহ্ পাক-এর প্রিয় বান্দারা যখন দান বা ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয় করেনা এবং কৃপণতা ও ক্রটিও করেনা বরং উভয়ের মধ্যবর্তী সমতা বজায় রাখে।” (সূরা ফুরক্বান/৬৭)
اسراف –এর অর্থ সীমা অতিক্রম করা। শরীয়তের পরিভাষায় ‘ইসরাফ’ শব্দের ব্যাখ্যায় হযরত মুফাসসিরীন-ই-কিরামগণ বলেন, আল্লাহ্ তায়ালার নাফরমানী ও গুণাহর কাজে ব্যয় করার নাম অপব্যয় যদিও তা এক পয়সাও হয়।
اقتار –এর অর্থ ব্যয়ে ক্রুটি ও কৃপনতা করা। শরীয়তের পরিভাষায় ‘ইক্বতার’ শব্দের ব্যাখ্যায় হযরত মুফাসসিরীন-ই-কিরামগণ বলেন, যে সব কাজে আল্লাহ্ পাক ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যয় করতে বলেছেন তাতে কম ব্যয় করা। (তাফসিরে মাযহারী, মা’য়ারিফুল কুরআন, বায়নুল কুরআন ইত্যাদি)
মহান আল্লাহ্ পাক দান করার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, “তারা (লোকেরা) আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কি তারা দান করবে? আপনি বলে দিন, নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই দান করবে।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা/২১৯)
অর্থাৎ এ আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথে তাঁদের সন্তুষ্টি লাভের জন্য যথাসাধ্য ধন-সম্পদ খরচ করার জন্য বলা হয়েছে।
অতএব, মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টির জন্য যত টাকা-পয়সাই খরচ করা হোক না কেন তা কস্মিনকালেও অপচয় হবেনা; বরং তা ফযীলত ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ।
