ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো
১. আপত্তি হলো ক্বিয়াম নিয়ে যেহেতু নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
لاتقوموا لما تقوموا الاعاجم يعظم بعضها بعضا
"তোমরা পারস্যের লোকদের মত ক্বিয়াম করনা। তারা একজন অপনজনকে যেমন তা’জীম করে তেমন নয়।"
- (আবু দাউদ- ৫২৩২)
১. প্রথম হাদীসে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পারস্যবাসীদের মত নতজানু হয়ে মূর্তিব্যৎ রাজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মত কিয়াম করতে নিষেধ করেছেন যা আসলেও নিষিদ্ধ। তিনি সকল প্রকার ক্বিয়ামকে এ হাদীস দ্বারা নিষেধ করেননি। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেননি ক্বিয়াম করনা বরং বলেছেন পারস্যবাসীদের মত ক্বিয়াম করনা। যেমন কেউ বলল তুমি গুরু-ছাগলের মত পানি পান করনা। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল পানি পান কর, তবে গরু-ছাগলের মত করে পান কর না। আমরা বরং দেখি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্নাতে ক্বিয়াম করতে আদেশ করেছেন যেমন-
عن ابى سعبد الخدرى قال لما نزلت بنوا قريظة على حكم سعد بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم وكان قريبا منه فجاء على حمار فلما دنا من المسجد قال رسول الله للارصار قومرا الى سيدكم
মদীনার ইহুদী সম্প্রদায় বনু কুরাইযাগণ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করলে মুসলিম বাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ হবার পর যখন আত্মসমর্পনের উদ্দেশ্যে যখন সাদ বিন মুয়াজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বিচার মেনে নিল, তখন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে আনতে লোক পাঠালেন। সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিকটেই একটি তাবুতে ছিলেন। তিনি যখন গাধার পিঠে করে আসার সময় মসজিদে নববীর নিকটবর্তী হলেন তখন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনছারদের উদ্দেশ্য করে বললেন " আপনারা আপনাদের নেতার উদ্দেশ্য দাঁড়িয়ে যান ।
বুখারী শরীফ- ৬২৬১
তাই আমরা বলতে পারি আমরা পারস্যের মানুষের মতো না দাঁড়িয়ে মাসনুন পদ্ধতিতে দাঁড়ালে তা হারাম হতে পারে না বরং তা অবশ্যই জায়েয।
২. আবার অপর হাদীসে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عن شره ان يتمثل لة الرجال قياما فليتبوا مقعدة من النار
- "যে ব্যক্তি এরূপ পছন্ত করে যে, লোকেরা তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে তৈরি করে নেয়" । তিরমিযী- ২৭৫৫
জবাব-
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভীতি প্রদর্শন করেছেন তা অহংকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা আমরা দেখেছি আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত হাদীসে রয়েছে-
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجلس معنا فى المسجد يحدثنا فاذا قام قمنا قياما حتى نراه قد دخل بعض بيوت ازواجه
" নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে বসে মসজিদে নববীতে হাদীস বয়ান করতেন। যখন তিনি মজলিস ত্যাগ করে দাঁড়িয়ে যেতেন আমরা দাঁড়াতাম। যে পর্যন্ত না তিনি তার কোনো হযরত উম্মাহাতুল মুমীনিন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের কারো হুজরা শরীফে না ঢুকতেন আমরা উনার সম্মানে দাড়িয়ে থাকতাম।"
আবু দাউদ- ৪৭৭৭
৩. আবার হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন-
وكانوا اذا رأوا لم يقومروا لما يعلمون من كراهته لذالك
" আর সাহাবায়ে কিরাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখে দাঁড়াবেন না। কেননা তারা অবগত ছিলেন সে, তিনি এরূপ করা পছন্দ করেন না।
- তিরমিযী- ২৭৫৪
জবাব -
আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের জবাবে আমরা বলব তিনি বলেছেন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ কিয়াম পছন্দ করতেন না আর এরূপ ক্বিয়াম বলতে কি বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قوله لذالك اى لقيامهم تواضعا لربه مخالفه لعادة المتبريف
"এরূপ বলতে উদ্দেশ্য হল যে ধরণের চরম বিনয় মূলক ক্বিয়াম আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হয়। অহংকারী ব্যক্তিদের জন্য যে ধরণের বিনয়মূলক ক্বিয়াম করা হয় হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ ক্বিয়াম অপছন্দ করতেন।"
যারা ক্বিয়াম কে অস্বীকার করে তারা নবিবিদ্বেষী , বাতিল ফিরকা