পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শরীয়তে ফযীলতপূর্ণ‌ বিশেষ দিবস ও বার্ষিকী পালনের প্রথা বন্ধ করা হয় নি


ধর্মব্যবসায়ী, আশাদ্দুদ দরজার উলামায়ে সূ’ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে বলেছে, ‘নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছাড়াও ইসলামে কম-বেশি সোয়া লাখের মত নবী-রসূল, সোয়া লাখের বেশি ছাহাবী, লক্ষ লক্ষ গাওছ, কুতুব আওলিয়ার জামাত ছিলেন। তাহলে এতজনের বার্ষিকী কিভাবে পালন সম্ভব। তাই ইসলাম বার্ষিকী পালনের প্রথা বন্ধ করে দিয়েছে।’ নাঊযুবিল্লাহ!

এর জাওয়াব হলো:- জাহিল, গুমরাহ, ভ- উলামায়ে সূ’দের উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা, মনগড়া, দলীলবিহীন এবং তা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর মুখালিফ হওয়ার কারণে কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

কেননা হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, যখন নূরে নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করে মদীনা শরীফ-এ তাশরীফ নিলেন, সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পেলেন ইহুদী সম্প্রদায় আশূরার দিন রোযা রাখছে। তাদেরকে রোযা রাখতে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা এ দিনে কেন রোযা রাখছো?’ তারা বলল, এই দিনে আমাদের যিনি নবী ও রসূল হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার প্রতি আল্লাহ পাক তাওরাত শরীফ নাযিল করেছিলেন
এবং উনাকে উনার ক্বওমসহ লোহিত সাগর পার করিয়ে নিয়েছিলেন এবং উনার শত্রু ফিরআউন ও তার সঙ্গীদেরকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন, সেজন্য হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম শুকরানাস্বরূপ রোযা এদিনে রেখেছেন তাই আমরাও এ দিনে খুশি প্রকাশ করে রোযা রেখে থাকি। এটা শুনে আল্লাহ পাক- উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের চেয়ে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার বেশি হক্বদার। এটা বলে তিনিও রোযা রাখলেন এবং উনার উম্মতদেরকে রোযা রাখার আদেশ করলেন। সুবহানাল্লাহ! 

প্রকৃতপক্ষে এ আশূরার দিনটি শুধু হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার ঘটনার জন্যেই যে খুশি প্রকাশের দিন তা নয় বরং হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে আখিরী রসূল, নূরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন না কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এই আশূরার দিনে।

অতএব, আশূরার দিনে খুশি প্রকাশ করাটা আমভাবে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস উনাদের উপলক্ষেই হচ্ছে। আর এই দিনকে পালন করা বা সম্মান করার জন্য শরীয়তে আদেশ করা হয়েছে। যেমন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
اكرموا عاشوراء من المحرم من اكرم عاشوراء من المحرم اكرم الله بالجنة ونجاه من النار.
অর্থ: ‘তোমরা আশূরা মিনাল মুহররমকে সম্মান করো। যে ব্যক্তি আশূরা মিনাল মুহররমকে সম্মান করবে আল্লাহ পাক তাকে জান্নাত দিয়ে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে সম্মানিত করবেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রমাণিত হলো, নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ, বিছাল শরীফ এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা সংঘটিত দিনসমূহ পালন করা বা তাতে খুশি প্রকাশ করাটা দ্বীন ইসলাম জারী রেখেছে। আদৌ বন্ধ করেনি।
অতএব, উলামায়ে সূ’রা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য প্রদানের কারণে কাট্টা মুরতাদ এবং ডাহা মিথ্যা বলার কারণে চরম মিথ্যাবাদী বলে পরিগণিত।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট