১৫’শ ঈসায়ী সালেও এই উপমহাদেশে জাতীয়ভাবে জাঁকজমকভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদ পালন করা হতো।

১৫’শ ঈসায়ী সালেও এই উপমহাদেশে জাতীয়ভাবে জাঁকজমকভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদ পালন করা হতো।

১৫শ ঈসায়ী সালেও এই উপমহাদেশে জাতীয়ভাবে জাঁকজমকভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা হতো।
বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদকুলী খাঁর সময় এই আমল এত ব্যাপকভাবে পালন হতো যে বাদশা মালেক মুজাফর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাইতেও বেশি রাজকীয়ভাবে সেটাই মনে হয়।

বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসবইয়ের ২য় খন্ডে ১৯৭ পৃষ্ঠায় তাকালে আমরা দেখতে পাই,
১) বাংলার মুসলমানগন অত্যান্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে ও ধুমধামের সাথে ঈদে মীলাদ পালন করতো।
২) নবাব এ দিনকে বিশেষ উৎসবের দিনে হিসাবে পালনের ব্যবস্থা করেন।
৩) রবিউল আউয়াল মাসের প্রথম ১২ দিন পালনের ব্যবস্থা করেন।
৪) এ উপলক্ষে তিনি সম্পূর্ণ মুর্শিদাবাদ শহর ও পর্শ্ববর্তী এলাকা আলোকমালায় সজ্জিত করতেন।
৫) ১ লক্ষ মানুষ শুধু আলোক সজ্জার কাজে নিয়োজিত থাকতেন।
৬) কামান গর্জনের মাধ্যমে সড়ক ও নদীপথ আলোকিত হয়ে উঠতো।
৭) মুসলমান শাষনকর্তাগন ও জনসাধারনগন এই উপমাহাদেশব্যাপী ঈদে মীলাদ পালন করতো।
৮) আওলাদে রসূল ও আলেমদের উপহার দেয়া হতো।
৯) রাজ প্রসাধে রবিউল আউয়াল শরীফ মাসের ১ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত উলামায়ে কিরাম উনাদের মজলিস হতো।
১০) ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাদীছ শরীফ আলোচনা করতেন।

উপরোক্ত ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয়, সেসময় এই্ উপমহাদেশে এত সমৃদ্ধশালী ছিলো তার মূল কারন ছিলো এত মর্যাদার সাথে ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সেসময় ১ টাকায় ৮মন চাল পাওয়া যেত। মানুষের কোন অভাব ছিলো না। মানুষজন সুখী ও সমৃদ্ধ ছিলো।

আর আজকে মানুষ এত আযাবে আছে তার কারন কি? কারন হচ্ছে ব্রিটিশরা যাওয়ার সময় ওহাবী মতবাদ রেখে গেছে ঈমান ধ্বংস করার জন্য। তারা এখন পবিত্র এই আমলকে বিদয়াত হারাম ফতোয়া দেয়। নাউযুবিল্লাহ।
মানুষ যদি আবার সেই সমৃদ্ধ অর্জন করতে চায় তাহলে আবারো ঈদে মীলাদ পালন করতে হবে

বিস্তারিত

ব্রিটিশ আমলেও কত জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

দেখুন ঢাকায় ব্রিটিশ আমলেও কত জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
১) পথঘাট সাজানো হতো
২) সারা শহরে ঘটা করে পালন হতো।
৩) মহল্লায় মহল্লায় মীলাদ মাহফিল ও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করতো।
৪) নবাব পরিবারগুলোও মীলাদ মাহফিল করতো।
৫) বিশেষ প্রতিযোগিতা মাহফিল আয়োজন করা হতো।
৬) অসংখ্য মানুষ এ অনুষ্ঠান দেখতে আসতো।

(তথ্যসূত্র: এই ঢাকা সেই ঢাকা কত স্মৃতি কত কথা। লেখক- ড. মুহম্মদ আলমগীর)

আজ থেকে ১০০/১৫০ বছর আগেও এত জাঁকজমকের সাথে পালিত হতো তাহলে বর্তমানে এত বিরোধিতা কেন?
বর্ণনায় বোঝা যায় রোজার ঈদের চাইতেও বেশি আনন্দ ও আয়োজন হতো ১২ রবিউল আউয়াল শরীফে সে সময়। আর আজ বিদয়াত হারাম ফতোয়াবাজী হয় !!!
মূলত যা প্রমাণ হয় সেটা হচ্ছেতখনও ওহাবী মতবাদের শিকড় এত দৃঢ় ভাবে স্থাপিত হয়নি। পুরো দুনিয়াতেই পালিত হয়েছে কেউ বিরোধিতা করে নি। ব্রিটিশরা যে মতবাদের বীজ বপন করে গেছে সেই ওহাবী মতবাদ আজ ডাল পালা মেলে বট বৃক্ষ রূপে বিস্তার লাভ করেছে। করছে বিরোধিতা....
আর বাঙালিও নিজেদের সাংস্কৃতি (মীলাদকিয়াম) ভুলে পহেলা বৈশাখথার্টি ফাস্ট নাইটভ্যালেন্টাইন ডেবিভিন্ন পুজায় গিয়ে মশগুল হয়েছে ।
আফসোস আমাদের জন্য......!

বিস্তারিত

পবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফই বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সঠিক তারিখ

পবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফই বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সঠিক তারিখ


ধর্মব্যবসায়ী, মুনাফিক, ভ- শ্রেণীর কিছু লোক মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য বলে থাকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। তাই মতভেদযুক্ত বিষয়ে আমল করা যাবে না। অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা যাবে না। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
আসলে এই বাতিল ফিরক্বাগুলো মুনাফিক হওয়ার কারণে সত্য বিষয় গোপন করে। দেখুন, ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার তারিখ, বার, মাস সবই বর্ণনা করা আছে। হাফিযে হাদীছ হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেটা বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেন-

عَنْ حَضْرَتْ عَفَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ سَلِيْمِ بْنِ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ سَعِيْدِ بْنِ مِينَا رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيّ وَحَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ الثَّانِـيْ عَشَرَ مِنْ شَهْرِ رَبِيْعٍ الْاَوَّلِ.

অর্থ: হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত, তিনি হযরত ছালিম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ ঘটে হস্তি বাহিনী বর্ষের সুমহান ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ ইছনাইনিল আযীম শরীফ।” (দলীল: মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা; বুলুগুল আমানী শরহিল ফতহুর রব্বানী, ২য় খ- ১৮৯ পৃষ্ঠা; বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩য় খ- ১০৯ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা- দারূল ফিকর, বৈরূত লেবানন)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার রাবীগণ অত্যন্ত ছেকাহ বা বিশ্বস্ত। রাবীগণের নাম ও উনাদের সম্পর্কে রিজাল বিশারদগণ কি বলেছেন আসুন দেখা যাক। উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদে রাবীগণ হচ্ছেন- হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি।
সনদের উপরের দুজনতো ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, উনাদের তো কোনো তুলনা নেই। অপর তিন জন রাবী সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ছালিম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে তিনি ও হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের সম্পর্কে রিজালের কিতাবে বলা হয়েছে- উচ্চ পর্যায়ের নির্ভযোগ্য ইমাম, ছিকাহ, তীক্ষè স্মরণ শক্তিসম্পন্ন, বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য, দৃঢ় প্রত্যয়সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব।” (দলীল: খুলাছাতুত তাহযীব ২৬৮ পৃষ্ঠা, ত্বাকরীবুত তাহযীব, ২য় খ- ১২৬ পৃষ্ঠা)
শুধু তাই নয়, ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার অন্য সনদেও এ বিষয়ে হাদীছ শরীফ উল্লেখ আছে। হযরত ইমাম হাকিম নিশাপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ প্রসঙ্গে উনার কিতাবে উল্লেখ করেন,
হযরত আল্লামা ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি (তাবেয়ী) তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
হযরত ইমাম হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন- উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। (দলীল: আল মুস্তাদরাকে হাকিম ২য় খ- ৬৫৯ পৃষ্ঠা- কিতাবুল মানাকিব অধ্যায়, হাদীছ শরীফ নম্বর ৪১৮২)
সুতরাং আমরা ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার তারিখ জানতে পারলাম। এবার আসুন দেখা যাক, পরবর্তী উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এ বিষয়ে কি বলেছেন। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও আলিম হযরত আল্লামা ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন আমুল ফিল বা হস্তী বাহীনির বছর সম্মানিত ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ রাতের শেষ ভাগে।” (দলীল: কিতাবুল ওয়াফা পৃষ্ঠা ৮৭। লেখক- আল্লামা ইবনে জাওজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, প্রকাশনা- দারূল কুতুব ইসলামীয়া, বৈরূত লেবানন)
হাফিযে হাদীছ হযরত ইমাম কুস্তালানি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, প্রসিদ্ধ মত অনুসারে নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ...১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ তারিখে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার অধিবাসীদের মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার দিবসে উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার স্থান যিয়ারত করার আমল বর্তমান অবধি জারি রয়েছে।” (দলীল: শরহুল মাওয়াহেব, ১ম খন্ড ২৪৮ পৃষ্ঠা)
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ হযরত ইমাম ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ আমুল ফিল বা হস্তী বাহিনীর বছর রাতের শেষ ভাগে তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (দলীল: সিরাতে ইবনে হিশাম, ১ম খন্ড ১৫৮ পৃষ্ঠা)
ঐতিহাসিক হযরত ইবনে খালদুন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমুল ফিল বা হস্তী বাহিনীর বছর সুমহান ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ রাতে অর্থাৎ ছুবহে ছদিকের সময় পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন ছিলো বাদশাহ নাওয়াশেরের শাষণকাল।” (দলীল: সিরাতে নববীয়া, ৮১ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম জারির তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমুল ফিল বা হস্তী বাহিনীর বছর মহাসম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল রাতের শেষ ভাগে অর্থাৎ ছুবহে ছদিকের সময় পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (দলীল: তারিখে ওমুম ওয়াল মুলক, ২য় খন্ড ১২৫ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম যুরকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, “জমহুর উলামায়ে কিরাম উনাদের নিকট সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ হিসেবে মহাপবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফই প্রসিদ্ধ। মহাপবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ তারিখেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সুমহান দিবস হিসাবে সবাই পালন করে আসছেন।” (দলীল: বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩য় খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল মাওয়াহেব ২য় খন্ড ২৪৮ পৃষ্ঠা)
উপমহাদেশের বিখ্যাত আলিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ বিশারদ হযরত শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ হিসেবে সম্মানিত ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ তারিখই মশহুর। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার অধিবাসীদের আমল হলো- উক্ত তারিখে উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের স্থান যিয়ারত করতেন।” (দলীল: মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ ৮১ পৃষ্ঠা)
তিনি আরো বলেন, “প্রসিদ্ধ সীরাতবিদদের মতে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ হয়েছে হস্তীবর্ষের ৫০ দিন পর। এ মতই সর্বাধিক প্রসিদ্ধ যে- তা ছিলো পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার সম্মানিত ১২ তারিখ। প্রসিদ্ধ আলিম ও ইতিহাসবিদগণ উনারা এ বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপন করেছেন।” (দলীল: মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ, ৮১ পৃষ্ঠা)
উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত আছে, “সমস্ত মুসলমানগণ এ বিষয়ের উপর ইজমা করেছেন বা একমত হয়েছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাপবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ তারিখে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” (দলীল: মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ ৮২ পৃষ্ঠা)
শুধু তাই নয়, বর্তমানে যেসব গুমরাহ ওহাবী সালাফী বাতিল ফিরক্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার তারিখ মহাসম্মানিত ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে অস্বীকার করে, তাদের গুরু লা-মাযহাবী নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান ভুপালি সে তার কিতাবে লিখেছে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন পবিত্র মক্কা শরীফে খ্রিস্টান বাদশাহ আবরাহার হস্তী বাহিনীর বছর পবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফে ছুবহে ছাদিকের সময়, এটার উপর হযরত উলামায়ে কিরাম উনারা একমত হয়েছেন এবং এটা হযরত ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন ও ঐকমত্য পোষণ করেছেন।” (দলীল: শামামাতুর আনবার ইয়ার ফি মাওলিদে খায়রিল বারিয়াহ, ৭ পৃষ্ঠা)
সুতরাং এত স্পষ্ট এবং বিশুদ্ধ দলীল থাকার পরও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার তারিখ সম্মানিত ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ নিয়ে বিরোধিতা করা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তি ও গুমরাহীর নামান্তর।

বিস্তারিত