১. মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা আদ দাহর শরীফ’ ৮ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “উনারা মহান আল্লাহ তায়ালা মুহব্বতে আহার করান অভাবগ্রস্ত ইয়াতীম ও বন্দিদেরকে।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা আদ দাহর শরীফ’ উনার ৯ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘(উনারা বলেন) ২. নিশ্চয়ই আমরা কেবলমাত্র মহান আল্লাহ পাক সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্যেই তোমাদেরকে আহার দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করিনা।’
৩. মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ’ উনার ২৮ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে মহান আল্লাহ তায়ালা নাম মুবারক স্মরণ করে দেয়া চতুষ্পদ জন্তু যবেহ করো। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার করো এবং দুস্থ অভাবগ্রস্তকে আহার করাও।”
৩. আর এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ মধ্যে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রচলন কর, মানুষকে খাদ্য খাওয়াও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা কর এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায পড় তাহলে শান্তির সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” সুবহানাল্লাহ!(তিরমিযী ১৮৫৫, ইবনে মাযাহ্ ১৩৯৫, আদাবুল মুফাররাদ ৯৮১, আবদ ইবনে হুমাইদ ৩৫৫, দারিমী
৪. ক্ষুধায় কাতর ব্যক্তি সব দিক দিয়ে দুর্বল হয়, খাবারের অভাবে সে অসহায় ও অচল হয়ে পড়ে তাই ক্ষুধার্তকে আহার করিয়ে পরিতৃপ্ত করা মহান আল্লাহর কাছে পসন্দনীয় আমল। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হ’তে বর্ণিত,"একদা এক ব্যক্তি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রশ্ন করলেন, ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ? হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ইসলামে সবচেয়ে ভাল কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার খাওয়ানো’।[বুখারী হা/১২; মুসলিম হা/৩৯; মিশকাত হা/৪৬২৯।] তাই ক্ষুধার্তকে খাদ্য দানকারী ব্যক্তি সর্বোত্তম আমলকারী বলে গণ্য হবেন।
৫. ঐ ব্যক্তি ক্বিয়ামতকে অস্বীকারকারী যে ব্যক্তি ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করে না এবং খাদ্য দান করতে উৎসাহিত করে না। কেননা মহান আল্লাহ বলেন,তুমি কি দেখেছ তাকে, যে বিচার দিবসে মিথ্যারোপ করে? সে হ’ল ঐ ব্যক্তি, যে ইয়াতীমকে গলাধাক্কা দেয় এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে উৎসাহিত করে না’ (মাঊন ১০৭/১-৩)।
৬. মহান আল্লাহ বলেন, ‘ঐ ব্যক্তিকে ধর এবং গলায় রশি লাগিয়ে দাও অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, সে তো ঈমান আনেনি মহান আল্লাহর উপরে আর সে অভাবী-ক্ষুধার্তদেরকে খাবার খাওয়ানোর ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করেনি’ (হাক্কাহ ৩০-৩৪)।
৭. হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা আলাইহাস সালাম থেকে বর্নিত " হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিষ্টি এবং মধু খেতে পছন্দ করতেন"
(সুনান ইবনে মাজাহ , খাদ্য অধ্যায় , ২৯/৩৪৪৮ এরাবিক )
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মানুষকে খাওয়ানো অবশ্যই শরীয়তসম্মত ও ফযীলতের কাজ। শুধু তাই নয় বরং মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের মাধ্যম ও কারণ। এখন তা যখনই খাওয়ানো হোক বা যাই খাওয়ানো হোক না কেন। কারণ পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মানুষকে খাওয়ানোর জন্য কোনো সময় ও প্রকার নির্ধারণ করে দেননি। যদি তাই হয়ে থাকে তবে এটাকে কী করে বিদয়াত বা নাজায়িয বলা যেতে পারে? তাছাড়া পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তো সুস্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে যে, “যে ব্যক্তি পবিত্র ইসলাম উনার মধ্যে কোন উত্তম (শরীয়তসম্মত) পদ্ধতি উদ্ভাবন করলো তার সে উদ্ভাবিত পন্থা যারা অনুসরণ বা আমল করবে তাদের সমপরিমাণ বদলা যে উদ্ভাবন করেছে সেও পাবে।” সুবহানাল্লাহ
মানুষকে খাদ্য খাওয়ানো একটা ইবাদত। যারা এ বিষয়কে টিটকারী তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করে তারা কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ এহানতকারী। আর অন্য একটা বিষয় হচ্ছে এরা নিম্ন শ্রেনীর ফ্যামিলির লোক। এরা নিজেরাও খায় না। অন্যকে খাওয়ানোর কথা ভাবে না। কলিকাতার হিন্দুদের মত এদের অবস্থা। যারা বলে অর্ধেকটি দিলুম, পুরাটা খাবেন।