যেমন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে
কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﻳﻮﻡ ﻭﻟﺪ ﻭﻳﻮﻡ ﻳﻤﻮﺕ ﻭﻳﻮﻡ ﻳﺒﻌﺚ ﺣﻴﺎ .
- অর্র্থ: ‘উনার প্রতি সালাম (শান্তি), যে দিন তিনিবিলাদত শরীফ লাভ করেছেন এবং যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করবেন এবং যেদিন তিনিপুনরুত্থিত হবেন।’ (সূরা মারইয়াম-১৫)
অনুরূপ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম সম্পর্কে
উনার নিজের বক্তব্য কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
ﻭﺍﻟﺴﻠﻢ ﻋﻠﻰ ﻳﻮﻡ ﻭﻟﺪﺕ ﻭﻣﻮ ﺍﻣﻮﺕ ﻭﻳﻮﻡ ﺍﺑﻌﺚ ﺣﻴﺎ
- অর্র্থ: ‘আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি বিলাদত শরীফ লাভ করি, যে দিন আমি বিছাল শরীফ লাভ করি এবং যেদিন পুনরুত্থিত হবো।’ (সূরা মারইয়াম -৩৩)
আর হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে- আল্লাহ পাক- উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﺣﻴﺎﺗﻰ ﺧﻴﺮ ﻟﻜﻢ ﻭﻣﻤﺎﺗﻰ ﺧﻴﺮ ﻟﻜﻢ .
- অর্র্থ: ‘আমার হায়াত-মউত সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণ বা খায়ের-বরকতের কারণ।’ (কানযুল উম্মাল)
এছাড়া, হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে- আল্লাহ পাক- উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﺍﻥ ﻣﻦ ﺍﻓﻀﻞ ﺍﻳﺎﻣﻜﻢ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻓﻴﻪ ﺧﻠﻖ ﺍﺩﻡ
ﻭﻓﻴﻪ ﻗﺒﺾ .
- অর্র্থ: ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছে জুমুআর দিন। এ দিনে হযরত আদম আলাইহিস সালাম পয়দা হয়েছেন এবং এ দিনেই তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেছেন।’ (নাসায়ী শরীফ)
অতঃপর আল্লাহ পাক- উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﺍﻥ ﻫﺬﺍ ﻳﻮﻡ ﺟﻌﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻴﺪﺍ .
- অর্র্থ: ‘এ জুমুআর দিন হচ্ছে এমন একটি দিন, যে দিনকে আল্লাহ পাক ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ (জন্ম) দিবস এবং বিছাল শরীফ (ইন্তিকাল) দিবস উভয়টিই বান্দা-বান্দি ও উম্মতের জন্য রহমত, বরকত , সাকীনা এবং ঈদ বা খুশি প্রকাশের কারণ। অর্থাৎ বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ দিবস পালন বা উদযাপন করা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ সম্মত।
এ বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট ও অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয এ হাদীছ শরীফ দ্বারা, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে বলেন, “হে আনাস (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) আপনি যদি রোযা রাখতে চান তবে ‘ইয়াওমুল ইছনাইন’ বা সোমবার শরীফ-এ রোযা রাখবেন। কেননা সোমবার শরীফ-এ আমার বিলাদত শরীফ হয়েছে, আমার প্রতি পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে, আমার মি’রাজ শরীফ হয়েছে এবং আমার বিছাল শরীফ সোমবার শরীফ-এই হবে।”
উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উম্মতেরকে বিলাদত ও বিছাল শরীফ দিবস উদযাপন করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ, মুহাক্কিক্ব-মুদাক্কিক্ব অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কিরাম উনারা এ হাদীছ শরীফ- এর উপর ভিত্তি করেই বিলাদত ও বিছাল শরীফ দিবস পালন বা উদযাপন করেন এবং পালন বা উদযাপন করাকে জায়িয বা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ সম্মত বলে ফতওয়া দেন। মূল কথা হলো- হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের বিলাদত ও বিছাল শরীফ দিবস পালন বা উদযাপন করা শুধু জায়িযই নয় বরং সুন্নতেরও অন্তর্ভূক্ত। এটাকে যারা নাজায়িয ও বিদয়াত বলে ফতওয়া দেয় তারা চরম জাহিল ও কাট্টা গুমরাহ।