আন নিয়ামাতুল কুবরা আলাল আনাম বইয়ের প্রকাশিত হবার পুর্ব থেকেই ঈদে মিলাদুন্নবীর ফযিলত বর্নিত আছে

এই কিতাবটি মিশর থেকে প্রকাশিত, বিশ্ব বিখ্যাত মাওলুদে বারজাঞ্জির শরাহ। কিতাবে নাম হচ্ছে, “তালহীনুছ ছানজী”। লেখক হচ্ছেন, আব্দুর রহীম সূয়ুতি আল মালেকী রহমতুল্লাহি আলাইহি। প্রকাশকাল ১৩২১ হিজরী। আজ থেকে ১১৮ বছর আগের। 
উক্ত কিতাবের ৫ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 
قوله صلي الله علي و سلم من عظم مولدي كنت شافعا له يوم القيامة ومن انفق درهما في مولدي فكانما انفق جبلا من ذحب احمر في سبيل الله تعالي
অর্থ: “হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, যে পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করলো সে কিয়ামতে দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে, এবং যে মীলাদ শরীফ পালন করতে এক দিরহাম খরচ করবে সে আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ দান করার ফযিলত লাভ করবে।” (তালহীনুছ ছানজী ৫ পৃষ্ঠা) 
আপনারাই বলেন এসব বর্ণার ভিত্তি না থাকলে কি এত কিতাবে আসে? তাও আবার মাকতাবায়ে হাকীকার প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর আগের প্রকাশ কালে?
বিস্তারিত

পবিত্র মীলাদ শরীফ কিয়াম শরীফের বিরোধীতা না করার ব্যাপারে দেওবন্দীদের ইজমা

বর্তমানে বাংলাদেশে যারা দেওবন্দ সিলসিলার ধারক বাহক দাবি করেন, তাদের জন্য মীলাদ শরীফ অস্বীকার করা নিজেদের মুরুব্বীদের ইজমার বিরোধীতার নামান্তর হবে। আজ থেকে ৫ বছর আগে বাংলদেশের দেওবন্দী সিলসিলার অন্যতম কাজি মুতাসিম বিল্লাহর আয়োজনে দেওবন্দী শীর্ষ মৌলবীরা একটা বৈঠকে মীলাদ শরীফ কিয়াম শরীফ বিষয়ে ঐক্যমত্যে দাখিল হয়। তারা পবিত্র মীলাদ শরীফ ও কিয়াম শরীফের বিরোধীতাকে নিজেদের মুরুব্বীদের বিরোধীতা ও ফিতনা ফাসাদ, হিংসা বিদ্বেষের কারন বলে সম্মত হয়। তারা নিজেরাও বিরোধীতা থেকে ফিরে আসে এবং অন্যদেরও বিরোধীতা না করতে আহ্বান জানায়।


উক্ত বিষয়ে যারা ঐক্যমত্য পোষন করে তাদের কয়েকজনের নাম হচ্ছে,
১) কাজি মুতাসিম বিল্লাহ
২) মুহিউদ্দীন খান (সম্পাদক মাসিক মদীনা)
৩) মুফতী ওয়াক্কাস
৪) আহমদুল্লাহ আশরাফ
৫) মুফতী মাহমুদুল হাসান
৬) উবায়দুর রহমান খান নদভী
৭) মওলানা নুরুল আমীন
৮) আনোয়ারুল করীম
৯) মাওলানা সালমান
১০) ড. ফরুক আহমদ
১১) আনিসুর রহমান

এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাদেরই লেখা “ঐক্যের ডাক’ বইটাতে পাবেন। তারা প্রত্যেকে এই মর্মে লিখিত কাগজে স্বাক্ষরও করেছেন যে মীলাদ কিয়ামের বিরোধীতা করা যাবে না।

বইখানা পড়তে এখানে ক্লিক করেন ঐক্যের ডাকঐক্যের ঢাক


তবে বর্তমানে যারা নিজেদের দেওবন্দী কওমী দাবি করেন আবার মীলাদ শরীফের বিরোধীতাও করেন তারা কারা? এরা কি নিজেদের মুরুব্বীদের ঐক্যমত্য থেকে সরে নিজেদের আরেকটি ফির্কা বানিয়েছে?
বিস্তারিত

সর্বসম্মতক্রমে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত ১২ রবিউল আউওয়াল

 সর্বসম্মতক্রমে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত ১২ রবিউল আউওয়াল

১. ইমাম ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি (৮৫-১৫১ হি): হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন ( ইবনে আল জাওজি আল ওয়াফা , ৮৭ ) 
২. ইমাম ইবনে হিসাম রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ২১৩হি):  
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলের ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন  (সিরাতুননবী, ভলিউম ১ ,পৃ ১৫৮ )
৩. ইমাম ইবনে জারীর আত তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ২২৪-৩১০হি):  
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলের ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন  ( তারিখ উল উমাম ওয়াল মুলুক, ভলিউম ২, পৃ ১২৫ )
৪. আল্লামা আবু উল হাসান আলী বিন মুহম্মদ আল মাওয়ার্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ৩৭০-৪৮০হি):  
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  আসহাবুল ফিল ঘটনার ৫০ দিন পর ১২  রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন  ( আইলাম ঊন নবুয়া, ১৯২) 
৫. ইমাম আল হাফিজ আবু উল ফাতাহ আল আন্দুলাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৭১-৭৩৪ হি):  হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলের ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন  (আয়ুন আল আসর, ভলি ১, পেজ ৩৩) 
৬. আল্লামা ইবনে খালদুন রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ৭৩২- ৮০৮ হি): 
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলের ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন। যা ছিল কিসরা নওশেরওয়ান  এর ৪০ তম বছর ( আত তারিখ ,ভলি ২, পেজ ৩৯৪ ) 
৭. মুহম্মদ আস সাদিক ইব্রাহীম আরজুন রহমতুল্লাহি আলাইহি:  
বিভিন্ন সুত্র থেকে ইহাই প্রতিষ্ঠিত সত্য যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলে , কিসরা ণওশেরওয়ান রাজত্বকালীন ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন  ( মুহম্মদ রাসুলুল্লাহ , ভলি ১ , পেজ ১০২) 
৮.শায়েখ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৯৫০- ১০৫২হি):  
যে সিরাতবীদ এবং ইতিহাসবিদগণ এই মত প্রকাশ করেন যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমূল ফীলে দুনিয়ায় আগমন করেন।ইহাই প্রতিষ্ঠিত সত্য যে সে মাস ছিল রবিউল আউওয়াল এবং তারিখ ছিল ১২। সকল স্কলারগণ ইহাতেই মত প্রকাশ করেছেন।( মাদারেজুন নবুয়াহ, ভলি ২, পেজ ১৪ )
৯. সালাফী নবাব সাদিক হাসান খান ভোপালী বলে” হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মক্কা শরীফে ফজর বেলায় ,সোমবার ,১২ রবিউল আউওয়াল শরীফে হয়। (আস সুমামাতুল আনবারিয়া ফি মাওলিদ খায়ের আল বারিয়া, পৃ ৭) 
১০. ওহাবী সালাফীরা যাকে গুরু মানে সে ইবনে কাশীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন “ ইবনে আবী সাইবাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘মুসান্নাফে’ হযরত আফফান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ননা করেন যে “হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হস্তী বছরের ১২ রবিউল আউওয়াল সোমবারে শরীফে দুনিয়ায় আগমন করেন”।( সিরাতুননবী , ভলি ১, পেজ ১৯৯ )  
১১. ইমাম কুস্তলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন “হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দুনিয়ায় আগমন করেন এবং মক্কা শরীফের মুসলমানগণ এই দিনে জন্মস্থান প্রত্যক্ষ করতে যেতেন”। (আল লাদুন্যিয়া, ভলি ১্পে‌ জ ৮৮) 

বিস্তারিত

হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি জন্মঅনুষ্ঠান বা মীলাদ শরীফ পালন করার হাদীছ বর্ণনা করেছেন


পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী অস্বীকারকারীরা বলে হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি কি এই অনুষ্ঠান পালন করার কথা কোন হাদীছ শরীফে এনেছেন? আর জন্মদিন পালন করা খৃষ্টানদের কালচার। আপনারা কেন তা পালন করেন?
মজার কথা হলো আমীরুল মু’মিনিন ফিল হাদীছ হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মীলাদ শরীফ পালন করা পক্ষে উনার কিতাবে দুইটি বাব রচনা করে দুইখানা হাদীছ শরীফ এনেছেন। উক্ত হাদীছ শরীফে স্পষ্ট ভাবেই আমরা দেখতে পাই জন্মগ্রহন উপলক্ষে দাওয়াত দেয়া, অনুষ্ঠান করা, খাদ্য খাওয়ানো সবই সুন্নতের অর্ন্তভূক্ত। হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবের নাম হচ্ছে “আল-আদাবুল মুফরাদ”।



ইমাম হযরত বুখারী রহতুল্লাহি আলাইহি রচিত আদাবুল মুফাররাদ কিতাব

বিশ্ব বিখ্যাত এই কিতাবের ৬০২ নং বাব যার নাম হচ্ছে 
بَابُ الدَّعْوَةِ فِي الْوِلَادَةِ – (শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষ্যে দাওয়াত) এই অধ্যায়ের অধীনে একটা হাদীছ শরীফ এনেছেন। উক্ত হাদীছ শরীফ থেকে জানা যায় একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার রোযা ভঙ্গ করে শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষ্যে দাওয়াতের খানা খেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,

আদাবুল মুফাররাদ কিতাবে ৬০২ নং বাবের শিরোনাম ও হাদীছ শরীফ


عَنْ حَضْرَتْ بِلَالِ بْنِ كَعْبٍ الْعَكِّيِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ زُرْنَا حَضْرَتْ يَـحْيَى بْنَ حَسَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِـي قَرْيَتِهِ اَنَا وَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيمُ بْنُ اَدْهَمَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَ حَضْرَتْ عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ قَرِيرٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَ حَضْرَتْ مُوسَى بْنُ يَسَارٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَجَاءَنَا بِطَعَامٍ، فَاَمْسَكَ حَضْرَتْ مُوسٰى رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَكَانَ صَائِمًا فَقَالَ حَضْرَتْ يَـحْيَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَمَّنَا فِـي هٰذَا الْمَسْجِدِ رَجُلٌ مِنْ بَنِي كِنَانَةَ مِنْ اَصْحَابِ النَّبِيّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُكَنَّى حَضْرَتْ اَبَا قِرْصَافَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً، يَصُوْمُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا، فَوُلِدَ لِاَبِـيْ غُلَامٌ، فَدَعَاهُ فِـي الْيَوْمِ الَّذِيْ يَصُوْمُ فِيْهِ فَاَفْطَرَ، فَقَامَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيمُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَكَنَسَهُ بِكِسَائِهِ، وَاَفْطَرَ حَضْرَتْ مُوْسٰى رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ حَضْرَتْ اَبُو عَبْدِ اللهِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَبُو قِرْصَافَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اسْـمُهُ جَنْدَرَةُ بْنُ خَيْشَنَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ.

অর্থ : “হযরত বিলাল ইবনে কা’বিল ‘আক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি, হযরত ইবরাহীম ইবনে আদহাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল আযীয ইবনে কুদাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মূসা ইবনে ইয়াসার ইয়াহইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবনে হাসান বাকরী ফালাসতিনী রহমতুল্লাহি আলাইহির সাথে উনার গ্রামে গিয়ে সাক্ষাত করলেন। হযরত ইবনে হাসান বাকরী ফালাস্তিনী রহমতুল্লাহি আলাইহি আমাদের জন্য খাবার আনলেন। হযরত মূসা রহমতুল্লাহি আলাইহি রোযাদার হওয়ায় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। হযরত ইয়াহইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কিনানা গোত্রীয় একজন ছাহাবী, যাঁর উপনাম হযরত আবূ কিরসাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু চল্লিশ বছর যাবত এই মসজিদে ইমামতি করেন। তিনি এক দিন রোযা রাখেন এবং এক দিন বিরতি দেন। আমার একজন ভাই জন্মগ্রহণ করলে আমার পিতা উনাকে দাওয়াত দেন। সেটি ছিল উনার রোযা রাখার দিন। তিনি রোযা ভাঙ্গলেন। হযরত ইবরাহীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উঠে দাঁড়িয়ে উনাকে উনার চাদরখানা হাদিয়া দেন এবং হযরত মূসা রহমতুল্লাহি আলাইহিও রোযা ভাঙ্গেন। হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ছাহাবী হযরত আবূ কিরসাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম মুবারক হযরত জানদারা ইবনে খায়শানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।” (আদাবুল মুফরাদ ৪৬০ পৃষ্ঠা: বাবুদ্ দা’ওয়াতি ফীল বিলাদাত : হাদীছ শরীফ নং ১২৫৩)
এই হাদীছ শরীফ থেকে আমরা দেখতে পেলাম একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু নফল রোজা ভঙ্গ করেও জন্মদিন অনুষ্ঠানের হাজির হয়েছেন খাবারও খেয়েছেন। বিরোধীতাকারীরা কি এখন উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বিদয়াতি বলবে? নাউযুবিল্লাহ।
হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত কিতাবের ৬০৪ নং বাব যার নাম হচ্ছে 
بَابُ الدُّعَاءِ فِي الْوِلَادَةِ - সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্য দোয়া করা) এখানে আরো একটি সহীহ হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। 


আর এই হাদীছ শরীফ হতে জানা যায় যে, এক দুইজন নয় বরং একদল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত দাওয়াতে এসে খাওয়া দাওয়া  করেছেন এবং শিশুর জন্য দোয়া করেছেন,

عَنْ حَضْرَتْ مُعَاوِيَةَ بْنَ قُرَّةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ لَمَّا وُلِدَ لِـي اِيَاسٌ دَعَوْتُ نَفَرًا مِنْ اَصْحَابِ النَّبِيّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَطْعَمْتُهُمْ فَدَعَوْا فَقُلْتُ‏‏ اِنَّكُمْ قَدْ دَعَوْتُـمْ فَبَارَكَ اللهُ لَكُمْ فِيْمَا دَعَوْتُـمْ وَاِنّـيْ اِنْ اَدْعُوْ بِدُعَاءٍ فَاَمّنُوْا قَالَ‏ فَدَعَوْتُ لَهُ بِدُعَاءٍ كَثِيْرٍ فِـيْ دِينِهِ وَعَقْلِهِ وَكَذَا قَالَ‏‏ فَاِنّـيْ لَاَتَعَرَّفُ فِيْهِ دُعَاءَ يَوْمِئِذٍ‏.‏

অর্থ : “হযরত মুআবিয়া ইবনে কুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উনার আওলাদ ইয়াস জন্মগ্রহণ করলে তিনি হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একদল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে দাওয়াত করে খাবার পরিবেশন করেন। উনারা দোয়া মুবারক করলেন। হযরত মুআবিয়া ইবনে কুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, আপনারা দোয়া মুবারক করেছেন। মহান আল্লাহ পাক আপনাদের দোয়া মুবারকের উসীলায় আপনাদের বরকত দান করুন। হযরত মুআবিয়া ইবনে কুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি তখন বললেন, তিনিও কতগুলো দোয়া করবেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম যেন আমীন বলেন। হযরত মুআবিয়া ইবনে কুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি উনার আওলাদের দ্বীনদারি, জ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের জন্য অনেক দোয়া করলেন। হযরত মুআবিয়া ইবনে কুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি সেদিনের দোয়ার প্রভাব লক্ষ্য করেছেন।” (আদাবুল মুফরাদ ৪৬১ পৃষ্ঠা  : বাবুদ্ দু‘য়ায়ি ফীল বিলাদাত : হাদীছ শরীফ নং ১২৫৫) 

উক্ত হাদীছ শরীফ থেকেও আমরা দেখতে পেলাম হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন জামায়াত বদ্ধ ভাবে জন্ম অনুষ্ঠানে যেতেন এবং দোয়া পাঠ করতেন, পরিশেষে খাবার খেতেন। আর এটাই খাছ সুন্নতী ত্বরীকা। যারা আজ বিরোধীতা করতে করতে বিদয়াত শিরিক ফতোয়া দিচ্ছে, খৃষ্টানদের কালচার বলছে তারা কি জানে এটা কতবড় বেয়াদবি? তারা পক্ষান্তরে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের বিরোধীয় লিপ্ত হয়ে বেঈমান হয়ে পড়ছে। সেইসাথে সাধারন মানুষকেও বিভ্রান্ত করছে। সূতরাং আমরা যদি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন উপলক্ষে অনুষ্ঠান করি, খুশি প্রকাশ করি, খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করি সেটা অবশ্যই সুন্নতের অর্ন্তভূক্ত। যা উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে প্রমাণ হয়। আল্লাহ পাক সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।
বিস্তারিত

বাদশা মুজাফফর আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগে থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী জাঁকজমকের সাথে পালিত হতো

বাদশা মুজাফফর আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগে থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী জাঁকজমকের সাথে পালিত হতো
বাদশা মুজাফফর আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগে থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী জাঁকজমকের সাথে পালিত হতো। মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন জুফার মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ৪৯৭- ৫৬৫ হিজরী) তিনি উনার “দুররুল মুনাজ্জাম” গ্রন্থে লিখেন,
وقال العلامة ابن ظفر - رحمه الله تعالى -: بل في الدر المنتظم: وقد عمل المحبون للنبي صلى الله عليه وسلم فرحا بمولده الولائم -، فمن ذلك ما عمله بالقاهرة المعزية من الولائم الكبار الشيخ أبو الحسن المعروف بابن قفل قدس الله تعالى سره، شيخ شيخنا أبي عبد الله محمد بن النعمان، وعمل ذلك قبل جمال الدين العجمي الهمذاني وممن عمل ذلك على قدر وسعه يوسف الحجار بمصر وقد رأى النبي صلى الله عليه وسلم وهو يحرض يوسف المذكور على عمل ذلك
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আশিকগন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিলাদত শরীফের খুশিতে খাওয়া – দাওয়া ও দাওয়াতের আয়োজন করে আসছেন। কায়রো যে সকল ব্যক্তি বড় বড় দাওয়াতের আয়োজন করেছেন, তাদের মধ্যে শায়েখ আবুল হাসান যিনি মশহুর ছিলেন ইবনে কুফুল কুদ্দিসা সিরহুল নামে। তিনি আমাদের শায়েখ আবু আব্দুল্লাহ ইবনে নুমান রহমতুল্লাহি আলাইহি। এই বরকতময় আমল হযরত জামালুদ্দীন আযমী হামদানী রহতুল্লাহি আলাইহিও করেছেন। মিশরে হযরত ইউসূফ হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও ব্যাপক পরিসরে উদযাপন করেছেন। এরপর তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখলেন যে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইউসুফ হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উল্লেখিত আমলের জন্য উৎসাহ প্রদান করেছেন। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফি সিরাতে খাইরুল ইবাদ ১ম খন্ড ৩৬৩ পৃষ্ঠা)
ইতিহাসই সাক্ষী বাদশা মুজাফফর আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগে থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করা হতো। আয়োজন করা হতো। দাওয়াত করে মানুষকে খাওয়ানো হতো।
বিস্তারিত

তারিখ পালনের কোন ভিত্তি কি শরীয়তে আছে?

 তারিখ পালনের কোন ভিত্তি কি শরীয়তে আছে?
অনেকে বলেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের তারিখ সংশ্লিষ্ট করে আজকেও সে তারিখে কেন পালন করতে হবে? তারিখ পালনের কোন ভিত্তি কি শরীয়তে আছে?
আমি উত্তর দিবো অবশ্যই আছে। কিন্তু বুঝতে গেলে প্রশ্নকারীদের অন্তরটা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত থাকতে হবে। বুখারী শরীফে একটা হাদীছ শরীফ আছে। বুখারী শরীফের “কিতাবুল জানায়েয” অধ্যায়ে একটা পরিচ্ছেদ আছে ‘বাবু মাওতা ইয়াওমাল ইছনাইন’। এখনে একটা হাদীছ শরীফ আছে,
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلْتُ عَلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ فَقَالَ فِي كَمْ كَفَّنْتُمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ‏.‏ وَقَالَ لَهَا فِي أَىِّ يَوْمٍ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ‏.‏ قَالَ فَأَىُّ يَوْمٍ هَذَا قَالَتْ يَوْمُ الاِثْنَيْنِ‏.‏ قَالَ أَرْجُو فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَ اللَّيْلِ‏.‏ فَنَظَرَ إِلَى ثَوْبٍ عَلَيْهِ كَانَ يُمَرَّضُ فِيهِ، بِهِ رَدْعٌ مِنْ زَعْفَرَانٍ فَقَالَ اغْسِلُوا ثَوْبِي هَذَا، وَزِيدُوا عَلَيْهِ ثَوْبَيْنِ فَكَفِّنُونِي فِيهَا‏.‏ قُلْتُ إِنَّ هَذَا خَلَقٌ‏.‏ قَالَ إِنَّ الْحَىَّ أَحَقُّ بِالْجَدِيدِ مِنَ الْمَيِّتِ، إِنَّمَا هُوَ لِلْمُهْلَةِ‏.‏ فَلَمْ يُتَوَفَّ حَتَّى أَمْسَى مِنْ لَيْلَةِ الثُّلاَثَاءِ وَدُفِنَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ‏
অর্থ: হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কয় খণ্ড কাপড়ে আপনারা হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাফন দিয়েছিলেন? হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, তিন খণ্ড সাদা সাহুলী কাপড়ে, এগুলোতে (সেলাইকৃত) জামা ও পাগড়ী ছিল না। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোন দিন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহুু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছাল শরীফ প্রকাশ করেন? হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, সোমবার। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আজ কি বার? হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, আজ সোমবার। তিনি [হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম ] বললেন, আমিও সেটাই আশা রাখি যে, আজ সন্ধ্যার মধ্যে যেন এই ইহকাল ত্যাগ করতে পারি। এরপর অসুস্থকালীন আপন পরিধেয় কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য করে তাতে জাফরানী রং এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, আমার এ কাপড়টি ধুয়ে তার সাথে আরো দু’খণ্ড কাপড় বৃদ্ধি করে আমার কাফন দিবেন। হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, এটা (পরিধেয় কাপড়টি) পুরাতন। তিনি বললেন, ইন্তেকাল প্রাপ্ত ব্যাক্তির চেয়ে জীবিতদের নতুন কাপড়ের প্রয়োজন অধিক। আর কাফন হল বিগলিত শবদেহের জন্য। তিনি মঙ্গলবার রাতের সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেন, প্রভাতের পূর্বেই উনাকে দাফন করা হয়। (বুখারী শরীফ: কিতাবুল জানায়েয : হাদীছ নং ১৩০৪)
এখন ফিকিরের বিষয় হলো, ইন্তেকালের সময়ও তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা ভুলেন নাই। তিনি বিছাল শরীফের তারিখ কি সেটা খোঁজ করেছেন, নিজেও বরকত ও সুন্নতের খেয়ালে সেই বারে বিছাল প্রকাশের আকাঙ্খা করেছেন।
এ থেকে কি এটা প্রমান হয় না যে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সব কিছু সেটা তারিখ / বার/ মাস/ সময় সবই মর্যাদাপূর্ণ ও সেটা পালন করার চেষ্টা করা উম্মতের দায়িত্ব? যদি তাই না হতো তবে সিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম জীবনের শেষ সময় এসে কেন সেই বারে ইন্তেকাল প্রকাশের আগ্রহ করলেন? 
যিনি জীবনের কঠিনতম সময়ে সেই বারে ইন্তেকাল প্রকাশের আরজি করতে পারেন তিনি কি নবীজীর বিলাদত বা জন্ম তারিখে বা বারে খুশি প্রকাশ করতে ভুলে গেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ।
ভুলেন নাই বলেই সর্বশ্রেষ্ট সাহবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক আলাইহিস সালাম বলেন-
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ صلي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَان رفيقي فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭, মাদারেজ আস সউদ ১৫ পৃষ্ঠা, নাফহাতুল আম্বরিয়া” ৮ পৃষ্ঠা, ই'য়ানাতুত ত্বলেবীন)
বিস্তারিত

হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং ঈদে মিলাদুন্নবীর ফযিলত বর্ননা করেছেন

আপনারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সুন্নীরা সবাই কমবেশি “মাওলুদে বারজাঞ্জি” শরীফের নাম শুনেছেন। আমাদের দেশ সহ এই উপমহাদেশে মীলাদ শরীফে যে তাওয়াল্লুদ শরীফ পাঠ করা হয় সেটা “মাওলুদে বারজাঞ্জি”। 
হযরত কারামত আলী জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “বরাহিনুল কতেয়া ফি মাওলিদে খাইরুল বারিয়া” কিতাবেও এই তাওয়াল্লুদ শরীফ দেখতে পাবেন। 
যাইহোক, এই বিখ্যাত কিতাবে অনেক গুলো শরাহ বা ব্যাখ্যা গ্রন্থ হয়েছে। একটা ব্যাখ্যা গ্রন্থের নাম হচ্ছে “মাদারেজ আস সউদ”। লেখক, আল্লামাতুশ শায়ক হযরত নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এই কিতাবের ১৫ পৃষ্ঠায়, (স্ক্যান কপিতে মার্ক করা দ্রষ্টব্য) রয়েছে,
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, 
من عظم مولدي كنت شفيعا له يوم القيامة من أنفق درهما في مولدي فكأنما أنفق جبلا من ذهب في سبيل الله تعالى
অর্থ: যে পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করলো সে কিয়ামতে দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে, এবং যে মীলাদ শরীফ পালন করতে এক দিরহাম খরচ করবে সে আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ দান করার ফযিলত লাভ করবে। (মাদারেজ আস সউদ ১৫ পৃষ্ঠা)


বিস্তারিত

হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বর্ননায় ঈদে মিলাদুন্নবীর ফযিলত

আপনারা জানেন পবিত্র মীলাদ শরীফের দলীল বিষয়ে বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ইবনে হাজার হায়ছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর “আন নি’মাতুল কুবরা আলাম” কিতাবে অনেক দলীল রয়েছে। এমনকি সেখানে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের পবিত্র বক্তব্য রয়েছে। আমরা যখন উক্ত কিতাব পেশ করি তখন একশ্রেনীর উগ্রপন্থী মানুষ উক্ত কিতাবকে অস্বীকার করে অনেক বক্তব্য দেয়। তারা বলে নিয়মাতুল কুবরা কিতাবে এমন কোন বক্তব্য নাই। তুরষ্কের “মাকতাবায়ে হাক্কীকাহ” প্রকাশনা থেকে এই কিতাব জাল করে বের করা হয়। নাউযুবিল্লাহ। তারা বলে খুলাফায়ে রাশেদীন উনাদের পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে এমন কোন বক্তব্য অন্য কোন কিতাবেও পাওয়া যায়নি। অথচ আমরা এই দলীল অসংখ্য নির্ভযোগ্য কিতাবে দেখেছি। 
আপনারা অনেকে বিখ্যাত আলেমে দ্বীন হাদীয়ে বাঙ্গাল হযরত কারামত আলী জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাম শুনেছেন। উনার জন্ম ১২১৫ হিজরী এবং ওফাত ১২৯০ হিজরী। অর্থাৎ ওফাত থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৪৯ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। উনার এক আওলাদ হাফিজ আব্দুল আউয়াল জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন বিখ্যাত আলেম। উনার জন্ম তারিখটা আমার সঠিক জানা নেই। উনার লিখিত একটা কিতাব হচ্ছে “নাফহাতুল আম্বরিয়া”। তাও সে অনুপাতে হিসাব করলে ১৭০/১৮০ বছর আগের কিতাব। সেখানে পবিত্র মীলাদ শরীফ সর্ম্পকে খুলাফায়ে রাশেদীন উনাদের বর্ণনা গুলোতো আছেই বরং স্বয়ং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে সরাসরি একটি বর্ণনাও আছে। “নাফহাতুল আম্বরিয়া” কিতাবে ৮ পৃষ্ঠায় (স্ক্যান কপি দ্রষ্টব্য) হাদীছ শরীফ গুলো লক্ষ্য করুন,
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, 
قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ من عظم مولدي كنت شفيعا له يوم القيامة من أنفق درهما في مولدي فكأنما أنفق جبلا من ذهب في سبيل الله تعالى
অর্থ: যে পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করলো সে কিয়ামতে দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে, এবং যে মীলাদ শরীফ পালন করতে এক দিরহাম খরচ করবে সে আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ দান করার ফযিলত লাভ করবে। (নাফহাতুল আম্বরিয়া পৃষ্ঠা ৮)
এখন কথা হচ্ছে যদি এসব বর্ণনার কোন ভিত্তিই না থাকতো তাহলে কি উলামায়ে কিরামগন উনাদের কিতাবে বর্ণনা করতেন? 


বিস্তারিত

সোমবার রোজা রাখা নিয়ে বাতিল ফির্কার বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের জবাব

সোমবার রোজা রাখা নিয়ে বাতিল ফির্কার বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের জবাব


যারা সিয়া সিত্তার অন্যতম কিতাব “মুসলিম শরীফের” হাদীস শরীফ মানে তারা পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধীতা করতে পারে না। এই বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থে একটা হাদীস শরীফ বর্ণিত আছে,
عَنْ أَبِى قَتَادَةَ الأَنْصَارِىِّ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ... وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ قَالَ ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَوْمٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَىَّ فِيهِ. 
অর্থ: হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার উনার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি জওয়াবে বলেছিলেন, ইহা এমন একখানা দিন যে দিনে আমি দুনিয়ায় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি এবং এ দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রকাশ করা হয়েছে তথা এ দিনে আমার উপর পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল শুরু হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ মুসলিম - পরিচ্ছেদ: ইস্তিহবাবু ছিয়ামি ছালাছাতি আইয়ামিন মিন্ কুল্লি শাহরিন ওয়া ছাওমি ইয়াওমি আরাফাতা ওয়া আশূরা ওয়াল ইছনাঈন ওয়াল খমীছ- হাদীস নম্বর ১১৬১)

এছাড়া উক্ত হাদীস শরীফ ছহীহ ইবনি খুযাইমাহ কিতাবুছ ছিয়াম বাবু ইস্তিহ্বাবি ছওমি ইয়াওমিল্ ইছনাইন ইযিন্ নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বুলিদা ইয়াওমুল্ ইছনাইনি ওয়া ফীহি ঊহিয়া ইলাইহি ওয়া ফীহি মাতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধ্যয়ে ও সুনানু আবী দাঊদ পরিচ্ছেদ: ফী ছাওমিদ্ দাহরি তাতাওউয়ান- ২৪২৬ নম্বর হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে।

উক্ত হাদীস শরীফ থেকে যে বিষয়গুলো পরিষ্কার হচ্ছে সেটা হলো-
১) হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের বিলাদত শরীফ পালন বা ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করেছেন।
২) ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন উপলক্ষে তিনি শুকরিয়া স্বরূপ রোজা রেখেছেন।
৩) এতটাই গুরুত্ব দিয়েছেন যে, প্রতি সপ্তাহে বিলাদত শরীফের যে বার অর্থাৎ সোমবার সেদিন নিদৃষ্ট করে নিয়ে পালন করেছেন।
৪) পরবর্তী উম্মত যদি ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করে তবে সেটা সুন্নাতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হবে।
৫) কেউ যদি ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করা বিদয়াত বলে তাহলে একটি খাছ সুন্নতকে বিদয়াত বলার কারনে কুফরী হবে।
৬) কেউ যদি বলে ঈদে মীলাদে হাবীবী খাইরুল কুরুনে ছিলো না, কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা হবে।
৭) কেউ যদি বলে ৬০০ হিজরীর পরে ঈদে মীলাদে হাবীবী চালু হয়েছে সেটা নবীজীর প্রতি স্পষ্ট অপবাদ দেয়া হবে।

এখন বাতিল ফির্কারা যে কথাটা বলে থাকে তা হচ্ছে,
প্রশ্ন: ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা রেখেছেন, আপনারা কি রোজা রাখেন? রোজা না রেখে আপনারা কেন খাওয়া দাওয়া অনুষ্ঠান করেন?

উত্তর: হ্যাঁ আমরাও রোজা রাখি। তবে আপনাদের এই প্রশ্নের মাধ্যমে কিন্তু এটাই প্রমাণিত হলো শরীয়তে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবীর দলীল রয়েছে। সূতরাং আপানারা ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিদয়াত বলতে পারেন না। আপনাদের এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে রোজা রেখেছেন সেটা কেন রেখেছেন? অবশ্যই শুকরিয়া স্বরূপ। কারন তিনি হচ্ছেন সবচাইতে বড় নিয়ামত। আর আল্লাহ পাক নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বলেছেন। নবীজীর বিলাদত শরীফ এবং বিলাদত শরীফের  বার ও তারিখ সবকিছু হচ্ছে নিয়ামতপূর্ণ। নিয়ামত প্রাপ্তি হচ্ছে খুশির বিষয়, আনন্দের বিষয়, শুকরিয়া আদায় করার বিষয়। নিয়ামতের শুকরিয়া প্রকাশ করার অন্যতম উপায় হচ্ছে ইবাদত। যেটা রোজা রেখে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন। এর থেকেও প্রমাণিত হয় যে, বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন এবং বরকতী বিশেষ দিন সমূহের দিন খুশি প্রকাশ করা বা তা পালন করতে হবে। কারন স্বয়ং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার আগমনের বারে শুকরিয়া আদায় করে রোজা রাখতেন। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন উপলক্ষে নিজেই নিজের আগমন দিবস পালন করেছেন। সূতরাং এই সুস্পষ্ট শরীয়তসম্মত আমলকে অস্বীকার করার কোন উপায় নাই।
আর যেহেতু ইবাদতের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করতে হয় তাই কেউ যদি ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন উপলক্ষে রোজা রাখে, সলাত- সালাম পাঠ করে, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, যিকির করে, মানুষকে খাবার খাওয়ায়, দান ছ্বদকা করে, কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ থেকে আলোচনা করে সবই গ্রহনযোগ্য। কারন প্রতিটিই ইবাদতের অর্ন্তভূক্ত। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে রোজা রেখে শুকরিয়া আদায় করে ঈদে মীলাদে হাবীবী পালনের বিষয়টা স্পষ্ট করে দিলেন। এখন উম্মত যেকোন শরীয়ত সম্মত উপায়ে শুকরিয়া আদায় করতে পারবে।

আর এই রোজা রাখাকে ঈদে মীলাদে হাবীবী পালনের ভিত্তি হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন যুগশ্রেষ্ঠ ইমাম হযরত জালালুদ্দীন সূয়ূতি রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। নিম্নে সে দলীল উল্লেখ করা হয়েছে:
আর স্থান ও কালের ফযীলতের ভিত্তি হচ্ছে ওইগুলোতে সম্পনকৃত ইবাদতসমূহ, যেগুলো আল্লাহ্ পাক ওইগুলোর সাথে, অর্থাৎ ওই কাল ও স্থানগুলোর সাথে নির্দিষ্ট করেছেন। কেননা, একথা সর্বজন বিদিত যে, স্থান ও কালের মহত্ব (বুযুর্গী) তো (কখনো) ওইসব সত্তা থেকে হয় না বরং সেগুলোর এসব বুযুর্গী ওইগুলোর অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যাদি (অথবা সম্পর্ক ইত্যাদি)’র কারণেই অর্জিত হয়ে থাকে, যেগুলোর সাথে এ স্থান ও কাল নির্দিষ্ট হয়ে থাকে। এখন আপনারা ওইসব বৈশিষ্ট্য ও বরকতরাজি দেখুন, যেগুলো আলাহ্ তা‘আলা রবিউল আউয়াল মাস ও সোমবারের সাথে নির্দিষ্ট করেছেন। আপনি কি দেখেননি যে, সোমবার রোযা রাখলে বড় ফযীলত রয়েছে? কেননা, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর বেলাদত শরীফ এ দিনে হয়েছে। সুতরাং যখন এ মাস আসে, তখন এ মাসের উপযোগী সম্মান প্রদর্শন ও গুরুত্ব প্রদান করা, আর নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর অনুসরণ করা উচিৎ। কারণ, তাঁর পবিত্র অভ্যাস ছিলো যে, তিনি ফযীলতমণ্ডিত সময়গুলোতে বেশী ইবাদত করতেন এবং অধিক পরিমাণে দান-খায়রাত করতেন।
প্রসঙ্গে আমি (ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূত্বী) ও মীলাদের (বৈধতার) জন্য একটি মূলনীতি বের করেছি। তাহচ্ছে- ইমাম বায়হাক্বী হযরত আনাস রাদ্বিয়ালাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নুবূয়ত প্রকাশের পর নিজের আক্বীক্বা করেছেন, অথচ উনার দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার বেলাদত শরীফের সপ্তম দিনে তাঁর আক্বীকা করেছিলেন। আর আক্বীক্বা দ্বিতীয়বার করা যায় না। সুতরাং এই আক্বীকা মুবারকের কারণ এটা বলা যাবে যে, তিনি আলাহ্ তা‘আলার এ শুকরিয়া আদায় করার জন্য তা করেছেন যে, তিনি তাঁকে‘রাহমাতালিল আ-লামীন’ (সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমত) করেছেন এবং উম্মতের জন্য তাঁর বেলাদত শরীফের উপর আলাহর শোকর আদায় করাকে শরীয়তসম্মত করার জন্য পুনরায় আক্বীক্বা করেছেন। যেমন তিনি সশরীরে নিজের উপর দুরূদ পড়তেন। সুতরাং আমাদেরও উচিত হবে মীলাদে পাকে লোকজনকে জমায়েত করে, তাদেরকে খানা খাইয়ে এবং অন্যান্য বৈধপন্থায় খুশী প্রকাশ করে মহামহিম আলাহ্ তা‘আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করা। 
হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র আশুরা শরীফের দুই রোজাকে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনেন ভিত্তী হিসাবে দলীল দিয়েছেন। তিনি বলেছেন শুকরিয়া স্বরূপ এ রোজা রাখা হয়। আল্লাহ পাকের নিয়ামতের শুকরিয়া বিভিন্ন ভাবে করা যায়। রোজা রেখে, সিজদা করে, তিলওয়াত করে, দান ছদকা করে। আর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন সবচাইতে বড় নিয়ামত।” (হুসনুল মাকাছিদ ফি আমালিল মাওলিদ ৬৩, আল হাবী লিল ফতওয়া ১০৫, সুবহুল হুদা ওয়ার রাশাদ ১ম খন্ড ৩৬৬ পৃষ্ঠা, হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীন ২৩৭ পৃষ্ঠা) 

সবচাইতে বড় কথা এই বিশেষ দিবস সমূহ পালনের আদেশ স্বয়ং আল্লাহ পাক দিয়েছেন। বিশেষ দিন সমূহ স্মরন সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,

وَذَكِّرْهُم بِأَيَّامِ اللَّـهِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
অর্থ: তাদেরকে আল্লাহর দিনসমূহ স্মরণ করান। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা ইব্রাহিম ৫)
ফিকিরের বিষয় হচ্ছে , নবীজীর আগমনের দিবস কতটা তাৎপর্যপূর্ণ ও ফযিলতপূর্ণ। এই দিন হচ্ছে অন্য সকল দিনের চাইতেও শ্রেষ্ঠ। আর এমন দিনের স্মরন করানোর আদেশ আল্লাহ পাক নিজেই দিয়েছেন। আল্লাহ পাকের আদেশ অনুযায়ী এই বিশেষ দিন স্মরন করা, সে দিনের বিশেষ ঘটনাবলী আলোচনা করা, সে দিন যার কারনে শ্রেষ্ঠ হলো উনার ছানা সিফত করা, শুকরিয়া আদায় করা এটা আল্লাহ পাকের নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত। 
আর এদিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা ও শুকরিয়া আদায় করা একমাত্র ধৈয্যশীল ও শোকর গুজার বান্দাদের পক্ষেই সম্ভব। কোন নবী বিদ্বেষী বিদয়াতি ওহাবীদের পক্ষে সম্ভব নয়।

বিদয়াতি ওহাবীরা আরো একটা আপত্তি উত্থাপন করে, মুসলিম শরীফের উক্ত হাদীস শরীফেতো বিলাদত শরীফ ছাড়াও নবুওয়াত শরীফ প্রকাশ ও কুরআন শরীফের নাযিলের বিষয় বলা হয়েছে। সেটার কি ফয়সালা?
ফয়সালা হচ্ছে, মূল নিয়ামত হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি যদি না তাশরীফ নিতেন তবে অন্য কোন কিছুর অস্তিত্বই হতো না। অন্য বিষয় সমূহ নিয়ামতপূর্ণ হয়েছে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের মাধ্যমে। সূতরাং হাদীস শরীফে শুকরিয়া আদায়ের মূল উপলক্ষ্য হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, আর উনার সাথে সংশ্লিষ্ঠ হওয়ার কারনে অন্যবিষয় সমূহ মর্যাদাবান হয়েছে।

তারা আরো বলে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করেছেন, আপনারা বছরে একদিন পালন করেন কেন?
এর জবাবে বলতে হয়, আমরা বছরে শুধূ একদিন ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করি না। বরং বছরের প্রতিটি দিনই ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করে থাকি। যেরূপ পালন করেছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন উনারা (http://bit.ly/2gaDfsm) । আমরা প্রতিদিনতো বটেই, অনন্তকালব্যাপী মীলাদে হাবীবী পালন করতে চাই, কবরে হাশরে, মিযানে, জান্নাতে সবখানেই। ১২ রবিউল আউয়াল জাঁকজমকের সাথে করা হয় কারন সেই দিবস হচ্ছে খাছ একটা দিবস। ১২ রবিউল আউয়াল শরীফ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ এনেছেন (http://bit.ly/2fZhJby )।
যেহেতু ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত তাই সমগ্র মুসলিম মিল্লাতে এটা পালিত হয়েছে, এখনো হচ্ছে (http://bit.ly/2gGmgyR)। হাজার বছর ধরে পালিত হয়ে আসা একটা সুন্নত আমলের বিরোধীতা ৩০/৪০ বছর ধরে আগাছার মত গজিয়ে ওঠা নব্য ওহাবীরা ছাড়া কেউ করে নাই (http://bit.ly/2gT5Ssq)।
বিস্তারিত

হযরত নুরউদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী পালনের দলীল


এই কিতাবে আছে হযরত নুরউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রতিবছর ঈদে মীলাদে হাবীবী পালন করতেন। এবং এসময় মুওছুলের শাষক ও নেতৃস্থানীয়রা উপস্থিত থাকতেন। নূরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মুহব্বত করতেন ও পত্র লিখতেন। (কিতাবের নাম : ইকদুল জুমান ফি তারীখী আহলিল জামান, লেখক : হযরত বদরুদ্দীন আইনী হানাফী রহমতুল্লাহি)
আপনারা কি জানেন কে ছিলেন এই নুরউদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি?
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি - দুঃসাহসী এক যোদ্ধা , সফল এক সমরনায়ক , অসাধারণ এক সেনাপতি । ইসলামের শত্রুরা আজও তাঁকে সম্বোধন করে "গ্রেট সালাদিন বলে , মুসলিমবিশ্ব স্মরণ করে জাতীয় বীর হিসেবে । মুসলিম মিল্লাতের ইতিহাসের পাতায় সোনার হরফে লেখা রয়েছে তাঁর নাম সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ছিলেন হযরত নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর ভাতিজা ও খলীফা।

সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন তেমনি একজন সুলতান যিনি ইসলামিক রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি বায়তুল মুকাদ্দাস ক্রসেডারদের দ্বারা দখলের প্রায় ৯০ বছর পর পুনরায় তাদের হাত থেকে মুক্ত করেন, এবং সেখানকার মুসলিম নাগরিকদের তাদের অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করেন। ১১৬৯ সালের ২৩ মার্চ। সালাহুদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি গভর্নর ও সেনাপ্রধান হয়ে মিসর আগমন করেন। ফাতেমী খিলাফতের কেন্দ্রীয় খলীফা তাকে এ পদে নিয়োগ দিয়ে বাগদাদ থেকে প্রেরণ করেন । তার (দ্বাদশ শতাব্দীর) আগে থেকেই ইউরোপ, ফ্রান্স ও জার্মানী ইসলামিক রাষ্ট্র ভাঙ্গার জন্য ক্রশ ছুঁয়ে শপথ করে, ইসলামের নাম নিশানা মুছে দিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্রশের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শুরু করে নানা চক্রান্ত । সেইসঙ্গে তারা চালায় সশস্ত্র অভিযান .. মুসলিমদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দখল করে রাখে ইসলামের মহান স্মৃতি চিহ্ন প্রথম ক্বিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস।
রাজনীতি, কূটনীতি, ভূগোল, ইতিহাস, পড়াশুনা ও প্রত্যক্ষ যুদ্ধ কৌশলের উপর গভীর জ্ঞান ও আগ্রহের কারণে চাচা শেরেকাহ ও নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাকে স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রদান করেন । নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে মিশরের গভর্নরের পদের জন্য মনোনীত করেন । সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি'ও চিন্তা চেতনায় ছিলেন সালাহুদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি"র মতই। সেসময় যেখানে ইসলামী খিলাফতের সব আমীর, গভর্নর, উজিররা খৃষ্টানদের চক্রান্তে পা দিয়ে তাদের থেকে সুন্দরি মেয়ে ও প্রচুর ধনসম্পদ এবং মূলত ক্ষমতার লোভে ইসলামী রাষ্ট্র থেকে স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখতো , ঠিক তখনই সালাহুদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্রকে ইহুদী–খৃষ্টানদের চক্রান্ত থেকে মুক্ত করে বাইতুল মুকাদ্দাস কে সেই ক্রুসেডারদের থেকে মুক্ত করার জন্য একের পর এক জিহাদ করে গেছেন।
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি মিশরের স্থায়িত্ব আনার পরই আবার তার সেই বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার শপথ পূরণ করার জন্য বের হয়ে যান। তিনি সর্ব প্রথম খৃষ্টানদের ফিলিস্তিনের শোবক দুর্গ অবরোধ করে সেটা জয় করে ফেলেন। পরে নুরুদ্দীন জঙ্গীর সহায়তায় কার্ক দুর্গও জয় করেন। কার্ক দুর্গ অবরোধ করার সময় সুদানীরা আবারো মিশরে সমস্যা তৈরি করলো ক্রসেডারদের সাহায্যে । ততক্ষণাৎ সুলতান আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি কার্কের অবরোধ নুরুদ্দীন জঙ্গীকে দিয়ে মিশরে চলে আসেন। পরে নুরুদ্দীন জঙ্গী কার্ক দুর্গ সহ ফিলিস্তিনের আরও কিছু জায়গা দখল করেন । ফিলিস্তিনের শোবক ও কার্ক দুর্গ পরাজয়ের প্রতিশোধ স্বরূপ ক্রসেডাররা পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নেয়। স্পেনের পূর্ণ নৌ বহর এতে যুক্ত হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়ামও যুক্ত হয়। গ্রিস ও সিসিলির জঙ্গি কিশতিগুলোও যুক্ত হয়। ব্রিটিশরা ভাবতো, তারা চাইলে একাই মুসলিমদের পরাজয় করতে পারে তাই তারা যুক্ত হতে চায় নি।কিন্তু তাদের পোপের অনুরোধে তাদের কিছু যুদ্ধ জাহাজ যুক্ত করে ।
এদিকে সুলতান আইয়ুবী ক্রসেডার গোয়েন্দা মারফত তাদের আগমনের খবর পেয়ে যান, তিনি এটাও জেনে যান যে তারা আগে এসে মিশরের উপকুলের আলেকজান্দ্রিয়া অঞ্চল দখল করবে। তাই সুলতান আইয়ুবী ক্রসেডার আলেকজান্দ্রিয়া থেকে সকল জনগণকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যান এবং সেখানের ঘরগুলোতে মুসলিম সৈন্য দিয়ে ভরে রাখেন। ক্রসেডাররা যখন উপকুলে এসে ভিড়ে এবং আক্রমণের জন্য কোন সৈন্য না দেখে খুশিতে আত্মহারা , আর হেসে খেলে উপকূলের আলেকজান্দ্রিয়া দখল করতে যায় ।রাতে যখন তারা নগরীতে প্রবেশ করে তখনই সৈন্যরা ঘর থেকে বেরিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করে নিঃশেষ করে দেয়। ঐ দিকে তাদের জাহাজগুলোতে যেই সৈন্যদেরকে রেখে এসেছিল তাদের উপর হঠাৎ পেছন থেকে সুলতান আইয়ুবীর যুদ্ধ জাহাজ আক্রমণ করা শুরু করে। মুসলিম সৈন্যরা মিনজানিকের সাহায্যে বড় বড় আগুনের গোলা ও পাথর মারতে শুরু করে ক্রসেডারদের জাহাজের উপর। ক্রসেডাররা পালাতে থাকে জাহাজ নিয়ে এবং ধ্বংস হতে থাকে। ক্রসেডারদের আরেকটা অংশ ফিলিস্তিন থেকে আক্রমনের জন্য আসলে সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গী তাদের উপর আক্রমণ করে তাদের পরাজয় করে দেন । এই যুদ্ধ শেষে নুরুদ্দীন জঙ্গী সুলতান আইয়ুবীকে তার অধিকৃত অঞ্চল দিয়ে সিরিয়ায় নিজ এলাকায় চলে যান । সালাহুদ্দীন আইয়ুবীর যুদ্ধ কৌশলের সবচেয়ে চমৎকার কৌশল ছিল তার গেরিলা হামলা। তার সৈন্যরা গেরিলা বাহিনী দিয়ে শত্রু সেনা বহরের পেছনের অংশে আঘাত হেনে বাতাসে মিলিয়ে যেতো। তাঁর এই কৌশলের আজো সামরিক বিশ্লেষকরা প্রশংসা করে । ১১৭৪ সালের মে মাসে নুরুদ্দীন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালে নেমে আসে শোকের ছায়া। সালাহুদ্দীন আইয়ুবী হারান তার প্রাণপ্রিয় চাচাকে যিনি বরাবরই তাকে সাহায্য দিয়ে আসতেন বিভিন্ন সময়ে ।

উনাদের এই বীরত্ত ও ইসলামের জন্য অবদান সম্ভব হয়েছে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী পালনের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে উনারা যে রহমত হাছিল করেন তার বাস্তবায়ন উনারা ইতিহাসের মধ্যেও ইতিহাস করে রেখে গেছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করবে।
বিস্তারিত

‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ কিতাবটা সহীহ।

পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী সর্ম্পকে দলীল দিতে গিয়ে আমরা “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাব থেকে দলীল দিই। কিন্তু যারা বিরোধীতা করে তারা বলে নি’মাতুল কুবরা কিতাব জাল কিতাব যা তুরষ্কের মাকতাবায়ে হাক্বীকা বের করেছে। 
মাকতাবায়ে হাক্কীকা এই বই বের করেছে সর্বোচ্চ ২৫/৩০ বছর আগে। 
আমি আজ আপনাদের আজ এমন এক দলীল দিবো যা থেকে বুঝতে পারবেন মাকতাবায়ে হাক্কীকা প্রকাশনীর ‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ কিতাবটা সহীহ। আজ থেকে প্রায় ১৩০ বছর আগের একটা কিতাব যার নাম “ইনয়াতুত ত্বলেবীন”। লেখক হচ্ছেন: আল্লামা সাইয়্যিদ আবু বকর মক্কী আদ দিময়াতী আশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৩০২ হিজরী)
উক্ত কিতাবের ৩য় খন্ড ৩৪৬ পৃষ্ঠায় আন্ডরলাইনকৃত অংশে বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত হাছান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জালালুদ্দীন সুয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের ঈদে মীলাদুন্নবী পালনের ফযীলত সংক্রান্ত বর্ণনা রয়েছে। 
যেহেতু “ইনয়াতুত ত্বলেবীন” কিতাবে বর্ণনা সমূহ রয়েছে, তাই “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” বর্ণনা গুলোকে নিঃসঙ্গ বর্ণনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই।



বিস্তারিত

মীলাদ শরীফ সম্পর্কে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের বর্ণনা করা হাদীস শরীফ

মীলাদ শরীফ সম্পর্কে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের বর্ণনা করা হাদীস শরীফ


মীলাদ শরীফ পাঠ করা অথবা ঈদে মীলাদুননবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা এটা খাস সুন্নত এর অন্তর্ভুক্ত।
হাদীস শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে–

عن العرباض بن سارية رضي الله عنه قال قال رسول صلي الله عليه و سلم عليكم بسنتي و سنة الخلفاء الراشدين المهدين تمسكوا بها و عضوا عليها بالنواجذ
অর্থ : হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের জন্য আমার সুন্নত এবং আমার খুলাফায়ে রাশেদীন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুন উনাদের সুন্নত অবশ্যই পালনীয় ! তোমরা তা মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো !” (দলীল– সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস শরীফ নং ৪২, তিরমিযী শরীফ, হাদীস শরীফ নং ২৬৭৬, আবু দাউদ শরীফ, হাদীস শরীফ নং ৪৬০৭, মুসনাদে আহমাদ শরীফ ৪/১২৬)
হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা নিজেরা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন , এবং আমল করার ফযীলত বর্ণনা করেছেন !
মীলাদ শরীফ সম্পর্কে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের বর্ণনা করা হাদীস শরীফ উল্লেখ করা হলো–
মক্কা শরীফের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ,ইমামুল মুহাদ্দেসিন আল্লামা শিহাব উদ্দিন আহমদ ইবনে হাজার আল হায়তামী আশশাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আলাইহি (যার জন্ম ৮৯৯ হিজরী, ইনতিকাল ৯৭৪ হিজরী) তার লিখিত “আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের মধ্যে নিম্নোক্ত হাদীস গুলো তিনি বর্ণনা করেন-
১। সর্বশ্রেষ্ট সাহবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক আলাইহিস সালাম বলেন-
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ صلي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَان رفيقي فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭)
(২) দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম বলেন-
مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ َاحيا الاسْالاَمُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করলো, সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো”। (দলীল-আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭)
(৩) তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান বিন আফফান আলাইহিস সালাম বলেন –
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قرأة مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَكَا نَّمَا ثَهِيد غَزُوَةِ بَدَر َوحُنَيْنُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮)
(৪) চুতর্থ খলিফা হযরত আলি কাররামাল্লাহু ওয়জহাহু আলাইহিস সালাম বলেন-
مَنْ عَظَّمَ مَوْ لِدِ النَّبِى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَكَانَ سَبَبَا لِقرا ته لا يَخرج مِنَ الدُّنْيَا اِلا َّبِالاِ يْمَانِ وَيَدْخُلُ الجَنَّهَ بِغَيْرِ حِسَاب
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাকে সম্মান করবে হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮)
আল্লামা ইউসুফ নাবহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ‘জাওয়াহেরুল বিহার’ এর গ্রন্থে ৩য় খন্ডের ৩৫০ পৃষ্ঠায় উপরে উল্লিখিত বর্ণনা উপস্থাপন করে বলেছেন যে, আমার উপরোক্ত হাদীস সমূহের সনদ জানা রয়েছে। কিন্তু কিতাব বড় হয়ে যাবার আশংকায় আমি সেগুলো অত্র কিতাবে উল্লেখ করিনি।
আল্লামা ইবন হাজর হায়তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্ভরতা প্রশ্নাতীত। তাঁর উক্ত কিতাবের উপর বহু শরাহ লিখা হয়েছে। তন্মধ্যে আল্লামা দাউদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লামা সাইয়িদ আহমদ আবেদীন দামেস্কি রহমাতুল্লাহি আলাইহি অন্যতম। উনার রিওয়াতকৃত উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণীত হল যে, খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও মিলাদুন্নাবী চালু ছিল এবং তারাও এর জন্য অন্যকে তাগীদ করেছেন।
উক্ত সহীহ হাদীস শরীফ সমুহ থেকে মীলাদ শরীফ পাঠ করা যে কত গুরুত্বপূর্ণ এবং খাস সুন্নত তা দিবালোক এর ন্যায় প্রমান হলো !
এখন যে সকল বাতিল গোষ্ঠি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিদয়াত বলবে তারা সুন্নত আমালকে বিদয়াত বলার কারনে মুরতাদ হয়ে যাবে !
বিস্তারিত