সর্বশ্রেষ্ঠ বেমাছাল তাজদীদ সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন সর্বত্তম ইবাদত।


জামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ,মুজাদ্দিদে আ’যম,গাউসুল আযম,ইমামুল আইম্মাহ,মুহিউস সুন্নাহ,হাকিমুল হাদিস,সাইয়্যিদুল খুলাফা,সাইয়্যিদুনা আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সর্বকালের,সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ, অভূতপূর্ব, বেমেছাল,সুমহান তাজদীদ মুবারক ‘হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ২৪ ঘণ্টা তথা দায়িমীভাবে সারা জীবন সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন,আর এই সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল সুবহানাল্লাহ!!! 

সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ কি? 

সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন,রহমাতুল্লিল আলামীন,নুরুম মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ,হুজুরপাক সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রানের নবীজি উনার সম্মানার্থে খুশি প্রকাশ করে,উনার শান,মর্যাদা ,উনার ফাজাইল-ফজিলত,বুজুর্গি,সম্মান বর্ণনা করে যে মাহফিল বা মজলিসের ইনতিজাম করা হয় সেই মাহফিল বা মাহফিল বা মজলিসই হছে সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ। উম্মত মাত্রই এই মহা সম্মানিত সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সাইয়্যিদুল আইয়াদ পালন করা ফরযের অন্তর্ভুক্ত।

খালিক, মালিক, রব, মহান আল্লহপাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

ﻳ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ َ قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
তরজমাঃ হে মানুষেরা! তোমাদের রব তায়ালা উনার তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন নছীহতকারী,অন্তরের আরোগ্য দানকারী, হিদায়েত দানকারী এবং মুমিনদের জন্য রহমত দানকারী।(অতএব হে আমার হাবীব সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফদ্বল ও রহমত স্বরুপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে সেজন্য তাদের উচিত খুশি প্রকাশ করা।আর এই খুশি প্রকাশ করার আমলটি হবে সমস্ত নেক আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ। (সূরা ইউনুসঃআয়াত শরীফঃ ৫৭, ৫৮)

আর কিভাবে হুজুর পাক সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে খুশি প্রকাশ করতে হবে সেটাও মহান আল্লহপাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে বলে দিয়েছেন, এই মর্মে মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ মুবারক করেন,

 ﺍِﻧَّـﺎۤ ﺍَﺭْﺳَﻠْﻨٰﻚَ ﺷَﺎﻫِﺪًﺍ  ﻭَّﻣُﺒَﺸّـِﺮًﺍ ﻭَّﻧَﺬِﻳْﺮًﺍ. ﻟِﺘُﺆْﻣِﻨُﻮْﺍ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻪٖ ﻭَﺗُﻌَـﺰِّﺭُﻭْﻩُ ﻭَﺗُﻮَﻗّـِﺮُﻭْﻩُ ﻭَﺗُﺴَﺒّـِﺤُﻮْﻩُ ﺑُﻜْﺮَﺓً ﻭَّﺍَﺻِﻴْﻠًﺎ .

তরজমাঃ “নিশ্চয়ই আমি আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শাহিদ তথা (উপস্থিত,হাজির, নাযির) সাক্ষ্যদানকারী,সুসংবাদদানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে সৃষ্টি করেছি, প্রেরণ করেছি। যেন তোমরা ঈমান আনতে পারো মহান আল্লাহপাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি। অতএব, তোমরা যথাযথভাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দাও,উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো তথা উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাতহ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ : ৮-৯)

অর্থাৎ হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম উনার শানা-ছিফত বর্ণনা করা, উনার তাযীম তাকরীম মুবারক(সম্মান মুবারক)করা,এবং খেদমত মুবারকের আনজাম দেওয়াই হচ্ছে সাইয়্যিদুল আইয়াদ বা সর্বশ্রেষ্ঠ আমল বা ইবাদত, কেননা উনি না আসলে আমরা এই দুনিয়াতে আসতাম না, রাসুল্লুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি না আসলে আসমান জমিন,কোন কায়িনাত সৃষ্টি হতো না আমারা উনার কারনেই আমারা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পেয়েছি সমস্ত আমল পেয়েছি, এজন্যেই হুজুর সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে "সায়্যিদুল আইয়াদ শরীফ" সর্বক্ষণ পালন করাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত, এই কারনেই যিনি বর্তমান জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ,জামানার মুজাদ্দিদ,সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম ঢাকা রাজারবাগ শরীফের মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এই সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত তথা "সাইয়্যিদুল আইয়াদ" পবিত্র রাজারবাগ শরীফে অনন্তকালব্যাপী সুমহান এই সাইয়্যিদুল আইয়াদের মাহফিল জারী করেছেন, সুবহানাল্লাহ!!!

শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই তিনি নিজেই উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার পর থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেই থাকবেন। (সুবহানাল্লাহ)!!!
আর যখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)!!!

হজরত সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লহু তায়ালাআনহুম উনারা ২৪ ঘণ্টাই দায়িমীভাবে সাইয়্যিদুল আইয়াদ পালন করেছেনঃ 

 সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﺍُﺑَـﻰِّ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻧّـِﻰْ ﺃُﻛْﺜِﺮُ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓَﻜَﻢْ ﺍَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﻣِﻦْ ﺻَﻠٰﻮﺗِﻰْ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻗُﻠْﺖُ ﺍَﻟﺮُّﺑُﻊَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺎِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻚَ . ﻗُﻠْﺖُ ﺍَﻟﻨّـِﺼْﻒَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻚَ ﻗُﻠْﺖُ ﻓَﺎﻟﺜُّﻠُﺜَﻴْﻦِ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻚَ ﻗُﻠْﺖُ ﺍَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﺻَﻠٰﻮﺗِﻰْ ﻛُﻠَّﻬَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺍِﺫًﺍ ﺗُﻜْﻔٰﻰ ﻫَﻤُّﻚَ ﻭَﻳُﻜَﻔَّﺮُ ﻟَﻚَ ﺫَۢﻧﺒُﻚَ .
অর্থ: “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনার উপর বেশি বেশি ছলাত মুবারক পাঠ করতে চাই, আপনার ছানা ছিফত মুবারক করতে চাই তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চাই। তাহলে আমি কী পরিমাণ সময় আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি কত ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা। আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি অর্ধেক সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার তিন ভাগের দুই ভাগ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো,আপনারমহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদশরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন।তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। তখন আমি বললাম,তাহলে আমি আমার সম্পূর্ণ সময় তথা ২৪ ঘণ্টারমধ্যে ২৪ ঘণ্টাই আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো,আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? তখন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি আপনি এরূপ করতে পারেন, তাহলে আপনার সমস্ত নেক মাক্বছূদগুলো পূর্ণ করে দেয়া হবে এবং আপনার সমস্ত গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!

দলিলসমূহঃ (√ তিরমিযী শরীফ, √ মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ২/৪২১, √ শুয়াবুল ঈমন শরীফ ৩/১৩৮, √ মিশকাত শরীফ,√ জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩২/৩৭৩,√ জামিউল উছূল শরীফ ১১/৮৪৬৭,  √ রিয়াদুছ ছালিহীন ১/৩৪৭ ইত্যাদি)।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট