হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন

 হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন এবং খুশি প্রকাশ করেছেন। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে যা পোষ্টে সংযুক্ত চিত্রে দৃশ্যমান-

অর্থ: হযরত খারীম ইবনে আউস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন *তাবুক জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলেন, তখন আমি উনার ছোহবত মুবারক-এ গেলাম। এ সময় হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনার ছানা-ছিফত- প্রশংসা করতে চাই। তিনি বললেন, বলুন, মহান আল্লাহ পাক আপনার যবান মুবারককে হিফাযত করুন। অতঃপর তিনি বললেন:

১। (দুনিয়াতে আসার) আগে আপনি ছায়ায় দিনাতিপাত করতেন এবং এমন সুমহান স্থানে (জান্নাতে) অবস্থান করতেন, যেখানে পাতা মিলিত করা হয়। (হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে)

২। অতঃপর আপনি যমীনে (হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালামের মাধ্যমে) তাশরীফ নিলেন। তখন আপনার মানুষের আকৃতি ছিলো না, না ছিলেন নূরী গোশত পিন্ড, না নূরী জমাট রক্ত খণ্ড।

৩। আপনি সেই নূর মুবারক যা নৌকায় আরোহণ করেছিলেন এবং নসর (প্রতিমা) ও নসর পূজারীদেরকে ওই পানি গ্রাস করেছিলো। (হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে)।

৪। আপনি এমনিভাবে জিসিম মুবারক থেকে রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হতে থাকেন এবং যা শতাব্দীর পর শতাব্দী অতিবাহিত হয়েছিলো।

৫। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন আগুনে অবস্থান করেন, তখন আপনি উনার জিসিম মুবারক-এ ছিলেন। এমতাবস্থায় অগ্নির কি সাধ্য ছিলো যে, হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে স্পর্শ বা পোড়াতে পারে।

৬। অবশেষে আপনার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ। আপনার রূহ মুবারক খন্দকের উচ্চস্থানকে ঘিরে নিলো, যার নিচে অন্যান্য পাহাড়ের মধ্যবর্তী অংশ আছে।

وانت لـما ولدت اشرقت الارض + وضاءت بنورك الأفق

فنحن فى ذلك الضياء وفى + النور وسبل الرشاد تخترق

৭। এরপর আপনার যখন বিলাদত শরীফ প্রকাশ পেলো  তখন সারা পৃথিবী আপনার নূর মুবারক-এ আলোকিত হয়ে গেলো।*

৮। এখন আমরা সেই মহান নূর মুবারকের ছোহবতে আছি। আমাদের সম্মুখে হিদায়েতের পথ উন্মুক্ত। সুবহানাল্লাহ! 

(দলীল: মুসতাদরেকে হাকিম ৩/৩৬৯-৩৭০ ) : হাদীস ৫৪১৮, দালায়েলুন নবুয়াত ২/৯৮৩: হাদীছ ২০২০, মা’রিফাতুছ ছাহাব লি আবু নুয়াইম ২৫৩১, খাছায়িছুল কুবরা, সিয়ারু আলাম আননুবালা ৩/৮৬, সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ১/৭০, সিরাতুন নববিয়্যাহ লি ইবনে কাছীর ১/১৯৫, বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/৩১৭, তারিখুল ইসলাম লি ইমাম যাহাবী ১/৪৩, মুখতাসারু তারিখুত দিমাষ্ক ১/১২১)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে কয়েকটি বিষয় আলোচনা করবো, 

* তাবুক জিহাদ যা ৯ম হিজরীতে সংঘটিত হয়েছে। অর্থাৎ হুযুর পাক ছল্লাল্লা

হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক যখন ৬১ বছর তখন এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ ‍জিহাদে প্রায় ৩০ হাজার মুসলমান সৈন্য অংশগ্রহন করেন। 

এ থেকে যা প্রতিয়মান হয়, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের ৬১ বছর পর উনার সামনে এবং হাজার হাজার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের উপস্থিতিতে উনার সম্মানিত চাচা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনার মীলাদ শরীফের আলোচনা করেছেন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যম দিয়ে পরবর্তী বংশ পরম্মরায় কিভাবে দুনিয়াতে তাশরিফ আনলেন সে আলোচনা করেছেন। এবং উনার সম্মানিত আগমনে শুকরিয়া আদায় করে খুশি প্রকাশ করেছেন। 

এটাইতো পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন যা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা করেছেন এবং সে সুন্নত অনুযায়ী আমরাও করছি। এ আমল কিভাবে বিদয়াত বলা যেতে পারে?

বিস্তারিত

হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের মহাপবিত্র মীলাদ শরীফের আলোচনা করেছেন

বাতিল ফির্কার লোকেরা বলে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ। অথচ তারা স্বল্প জ্ঞানের কারনে অনেক দলীলই খুঁজে পায় না। এমন হাদীছ শরীফ আছে যার থেকে প্রমাণ হয় স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  নিজের মহাপবিত্র মীলাদ শরীফের  আলোচনা করেছেন। হাদীছ শরীফে  বর্ণিত আছে,

عن عائشة قالت : تذاكر رسول الله صلى الله عليه و سلم وأبو بكر ميلادهما عندي وكان رسول الله صلى الله عليه و سلم أكبر من أبي بكر فتوفي رسول الله صلى الله عليه و سلم وهو ابن ثلاث وستين [ وتوفي أبو بكر رضي الله عنه وهو ابن ثلاث وستين ] لسنتين ونصف التي عاش بعد رسول الله صلى الله عليه و سلم . يعني أبا بكر 

অর্থ: উম্মুল মু’মিনিন হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, আমার কাছে  হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং  হযরত ছিদ্দীকে আকবর আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনারা  নিজেদের পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  হযরত সিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বড় ছিলেন। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৬৩ বছর বয়স মুবারকে পর্দা করেন। (হযরত সিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিও ৬৩ বছর বয়সে বিছাল শরীফ প্রকাশ করেন) তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে আড়াই বছর দুনিয়াতে অবস্থান করেন। 

(মুজামুল কবীর তাবরানী ১/৫৮ : হাদীছ শরীফ ২৮, মাযমাউয যাওয়ায়েদ ৯/৫২: হাদীছ শরীফ নং ১৪৩৯২; প্রকাশনা: দারুল ফিকর বাইরুত লেবানন, আল ইছাবা লি ইবনে হাজার ৪/১৬৯, সিরাতুন নাবাবিয়া ইবনে কাছীর ৪/৫১২, বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৫/২৭৮, তারীখে মাদীনাতু দিমাষ্ক ৩০/২৬)

ইমাম হযরত নুরুদ্দীন ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উপরোক্ত হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করে বলেন,

  رواه الطبراني وإسناده حسن

ইমাম হযরত তাবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এটা বর্ণনা করেন, বর্ণনাটির সনদ হাসান। (মাযমাউয যাওয়ায়েদ ৯/৫২: হাদীছ শরীফ নং ১৪৩৯২)

উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে প্রমাণ হলো, স্বয়ং হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত সিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনারা  নিজেদের সম্মানিত মীলাদ শরীফ বা পবিত্র বিলাদত শরীফের আলোচনা করতেন। সুতরাং প্রমাণ হলো পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আলোচনা  করা খাছ সুন্নত । সুবহানাল্লাহ।

বিস্তারিত

ঈদে মিলাদুন্নবির কিতাব নিয়ামাতুল কুবরায় ঈদে মিলাদ পালনের ফযিলত ( পান্ডূলিপি )


ওহাবী বাতিল ফির্কার ধারণা আন নিমাতুল কুবরা আলাল আলামকিতাব যার দলীল দেয়া হয় সেটার কোন পান্ডুলিপী নেই। তাদের এহেন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ এই কিতাবের পূর্ণ পান্ডুলিপী বর্তমানে কিং সাউদ ইউনিভার্সিটিতেমওজুদ আছে। যার পান্ডুলিপী নং হচ্ছে ৩৫০৬। পান্ডুলিপীটি হস্তগত হয়েছে ১২৭৬ হিজরীতে। এই পান্ডুলিপীর পাতা সংখ্যা ৩২ টি। পাতার সাইজ ১৫ সে.মি বাই ২৩ সে.মি। প্রতিটি পৃষ্ঠা ১৯ লাইনে বিন্যাস্ত।

রাজারবাগ শরীফএর সুবৃহৎ লাইব্রেরী- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ লাইব্রেরীতে পান্ডুলিপী পূর্ণ একটা অনুলিপি বিদ্যমান রয়েছে।

উক্ত পান্ডুলিপী সাথে বর্তমান প্রকাশিত আন নিমাতুল কুবরা আলাল আলামকিতাবে কিছু শব্দগত ও বর্ণনাগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও বিষয়বস্তু সমূহ একই। উক্ত পান্ডুলিপীতে পবিত্র মীলাদ শরীফ সর্ম্পকে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ক্বওল শরীফ সহ একখানা মারফু হাদীছ শরীফও বিদ্যমান রয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হলো,
قال النبي صلى الله عليه وسلم من عظم مولدي وهو ليلة اثني عثر من ربيع الاول يتخاذه فيها طعاما كنت له شفيعا يوم القيامه ومن انفق درهـما في مولد النبي اكراما فكانـما انفق جبلا من ذهب احـمر في اليتامي في سبل الله
অর্থ : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি পবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করলেন এবং তাতে খাদ্য খাওয়ালেন তিনি ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন এবং যিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ পালন করতে এক দিরহাম খরচ করবেন তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় এক পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করার ফযীলত লাভ করবেন।” (নিয়মাতুল কুবরা মাখতুত ১ম পৃষ্ঠা)

যেখানে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের বর্ণনা, বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি, হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের প্রত্যেকের ক্বওল শরীফই বিদ্যমান আছে। যাদের কাছে আন নিমাতুল কুবরা আলাল আলামকিতাবখানা আছে তারা পান্ডুলিপীর পৃষ্ঠাগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখে নিতে পারেন।

বিস্তারিত

ঈদে মিলাদুন্নবি নিয়ে বানোয়াট হাদিস অপপ্রচার করছে ওহাবি সালাফিরা

ঈদে মিলাদুন্নবি নিয়ে বানোয়াট হাদিস অপপ্রচার করছে ওহাবি সালাফিরা


বাংলার সালাফী, আহলে হাদিসদের দ্বারা পরিচালিত @ Salat নামাজ (https://www.facebook.com/SalatPrayers) @ পেইজ থেকে ২৬শে ফেব্রুয়ারি নিচের হাদীছ শরীফ শেয়ার করেছে,
///// যে ব্যক্তি জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী, কুলখানি বা কোনও দিবস পালন করেছে ততবার সে বিদআত করেছে। আমার সুপারিশ তার জন্য প্রযোজ্য নয়।
দলিল হিসেবে দেয়া হয়েছেঃ- বুখারী শরীফ- ২৬৯৭, মুসলিম শরীফ - ১৭১৮, মিশকাত শরীফ - ১৪০ /////
পোস্ট লিংকঃ- http://bit.ly/2FO96K6 , আর্কাইভ - http://archive.is/MfkwM
উপরের হাদীছ শরীফ পড়ে সাধারণ মানুষ সবাই মনে করছে ইসলামে জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী সহ যাবতীয় দিবস পালন ইসলামে জায়েজ নেই। যে এসব পালন করবে সে জান্নাতেই যেতে পারবে না !?! (নবীজী উনার সুপারিশ ব্যতীত কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না।)
উক্ত হাদীছ শরীফ এর কি আসলে কোন অস্তিত্ব আছে? চলুন দেখে যাক রেফারেন্স দেয়া উক্ত কিতাবে এমন হাদীছ শরীফ আছে কিনা? আমি সালাফী, আহলে হাদিসদের হাদীছ শরীফ ওয়েব সাইট থেকে রেফারেন্স দিচ্ছি। আপনাদের যাদের কাছে মূল কিতাব আছে তারা মূল কিতাব থেকেই দেখুন।
১। বুখারী শরীফ। (ইসলামি ফাউন্ডেশন) http://prntscr.com/irq65a
২। বুখারী (আহলে হাদিসদের) http://prntscr.com/irq778
৩। মুসলিম শরীফ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) http://prntscr.com/irq8ch
৪। মুসলিম শরীফ (হাঃ একাডেমী) http://prntscr.com/irq9c4
৫। মিশকাত শরীফ (http://prntscr.com/irqaao)
কি দেখতে পেলেন? কোথাও এমন কোন হাদীছ শরীফ এর বর্ণনা পাওয়া গেল না। পাবেন কিভাবে ? এটা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ নয়। এই জাল, বানোয়াট হাদীছ শরীফ 'আহলে হাদিস, সালাফী'দের নিজস্ব প্রডাক্ট। এর সাথে মুসলমানদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণই হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপরে মিথ্যে অপবাদ। (নাউযুবিল্লাহ!) এমনকি এই জাল হাদিস পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ খিলাফ, বিপরীত।

উক্ত জাল হাদীছে দাবী করা হয়েছে ইসলামে কোন দিবস পালন জায়েজ নেই। এই দাবী সম্পূর্ণই পবিত্র কুরআন শরীফ এর বিপরীত দাবী। কেননা বিশেষ দিবস সমূহ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
وَذَكِّرْهُم بِأَيَّامِ اللَّهِ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
>>> অর্থ: আর তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিবসসমূহকে স্মরণ করিয়ে দিন। নিশ্চয়ই উক্ত দিবসসমূহের মধ্যে প্রত্যেক ধৈর্যশীল-শোকরগোযার বান্দাদের জন্যে নিদর্শনাবলী (নিয়ামত) রয়েছে।” [সূরা ইবরাহীম শরীফ, আয়াত শরীফ: ৫]

জন্মদিন পালন সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ থেকে দলিল দেখুন,
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ হয়েছে-
>>> "আর শান্তি বর্ষিত হোক আমার উপরে যে দিন আমার জন্ম হয়েছিলো, আর যে দিন আমি ইন্তেকাল করবো । আর যে দিন আমাকে পুনরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায় । (পবিত্র সূরা মারইয়াম : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
>>> “আমার প্রতি সালাম (অবারিত শান্তি) যেদিন আমি বিলাদতী শান (জন্মদিবস) প্রকাশ করি, যেদিন আমি বিছালী শান (দুনিয়া থেকে বিদায়) প্রকাশ করবো এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মারইয়াম : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

এবার পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে দেখুন,
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই জন্মদিন পালন করেছেন।
>> "হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি জওয়াবে বলেছিলেন, ইহা এমন একখানা দিন যে দিনে আমি দুনিয়ায় বিলাদতী শান (দুনিয়ায় আগমন) মুবারক প্রকাশ করেছি এবং এ দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রকাশ করা হয়েছে তথা এ দিনে আমার উপর পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল শুরু হয়েছে।" (সহীহ মুসলিম পরিচ্ছেদ: ইস্তিহবাবু ছিয়ামি ছালাছাতি আইয়ামিন মিন্ কুল্লি শাহরিন ওয়া ছাওমি ইয়াওমি আরাফাতা ওয়া আশূরা ওয়াল ইছনাঈন ওয়াল খমীছ- হাদীস নম্বর ১১৬১ // মুসলিম শরীফ ইসলামিক সেন্টারঃ নাম্বার - ২৬১৬)
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার করা আমলকে বিদআত, কাফের মুশরিকদের অনুসরণ বলা লোক গুলো কি কুফরি করছে না ?? কোন সাহসে সুন্নত আমলকে বিদআত বলে ??

আজ ছিল পবিত্র জুমুয়া বার। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়। জুমুয়ার দিন ঈদ বা বিশেষ হওয়ার ৫টি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ২টি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার এই দিনে দুনিয়ায় আগমন এবং বিদায় গ্রহণ।
>> ১."তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছে, জুমুয়ার দিন। এদিনে আদম আলাইহিস সালাম পয়দা হয়েছেন এবং এদিনেই তিনি ওফাত বা ইন্তেকাল লাভ করেন! [সহীহ নাসায়ী শরীফ -জুমুয়ার অধ্যায়]
>> ২. "এ জুমুয়ার দিন হচ্ছে এমন একটি দিন, যেদিনকে আল্লাহ পাক ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন!" [সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ; মুসনাদে আহমদ শরীফ; মিশকাত শরীফ - জুমুয়ার অধ্যায়]

জন্মদিন পালন করা বিদআত বা কাফের মুশরিকদের অনুসরণ দাবী করা সম্পূর্ণই পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ বিরোধী দাবী। এর সাথে ইসলামের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই।
তবে বেপর্দা হয়ে, গানবাজনা করে, কেক কেটে জন্মদিন পালন ইসলামে জায়েজ নাই। শুধু জন্মদিন নয় শরিহতের খিলাফ কিছু করে কোন কিছু করা ইসলামে জায়েজ নাই।
এই 'সালাফী, আহলে হাদিস'রাই সারাদিন অমুকটা হাদিস জাল, তুমটা হাদিস জাল বলে বেড়ায়। (মূলত তাদের অজ্ঞতার কারণে বলে থাকে। বুখারী, মুসলিম শরীফের বাহিরে কোন হাদীছ শরীফের রেফারেন্স দিলেই জ্বাল বলে। ক্ষেত্রবিশেষ চিপায় পরলে এই কিতাবের হাদীছ শরীফও জাল বলে।)
তবে সবাই যে এদের মত ধোঁকাবাজদের ধোঁকায় পরে এমন নয়। কিছু অল্প সংখ্যক মানুষ আছেন যারা সব সময় সঠিক বিষয় খোঁজে। ঐ পোস্টের কমেন্ট বক্সে তেমন কিছু লোক দেখবেন। যারা সাথে সাথে হাদীছ শরীফ খুঁজে না পেয়ে কমেন্ট বক্সে বলে গেছে। কিন্তু পোষ্টদাতারা তাদের জাল, বানোয়াট হাদিস তথা ভ্রান্ত মতবাদের উপর অটল রয়েছে। এতদিনে নিজেদের ভুল স্বীকার করেনি। উক্ত পোস্ট রিমুভও করেনি।
মহান আল্লাহ পাক এই সমস্ত বিভ্রান্ত ছড়ানো লোকদের হিদায়াত দান করুন।


বিস্তারিত

আহমদ শফীকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার দাবি

আহমদ শফীকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার দাবি


হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানানো হয়েছে। রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত শোকরানা মাহফিলে এ দাবি জানান মাওলানা ফরীদ ঊদ্দীন মাসঊদ।

জাতীয় দ্বীনী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘আজ  কওমি মাদ্রাসা শুধু নয়, সারাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন।

তিনি বলেন,  আমার ভাই (মুফতি রুহুল আমীন) আপনাকে কওমি জননী বলেছেন। সেই মায়ের দরদ দিয়ে এদেশের গ্রামাঞ্চলে মসজিদের  ইমাম-মুয়াজ্জিন আছেন যারা ৭০০-৮০০ টাকা বেতন পান। ভারত-মিসরসহ অনেক দেশে  ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়া হয়। আমরা হিসেবে করে দেখেছি ইমামদের  ৫ হাজার ও মুয়াজ্জিনদের ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তবে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটির বেশি টাকা লাগবে না। প্রধানমন্ত্রী আল্লাহ বড় আপনার দিল দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের  আপনি আশ্রয় দিয়েছেন। আরেকটি দাবি হচ্ছে,  বাংলাদেশের কোনও আলেমকে আজ  পর্যন্ত  স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়নি। আহমদ শফী কওমির খেদমত করেছেন, ওলামা কেরামকে একত্রিত করে সেবা করেছেন। আমি মনে করি উনি (শফী) স্বাধীনতা পদক পেতে পারেন। আশা করছি এ বছর স্বাধীনতা পদক প্রদানের সময় এ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত এই শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কওমি সনদের স্বীকৃতি দেওয়ায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত শোকরানা মাহফিলে সারাদেশ থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও আলেমরা উপস্থিত হন। সকাল ৯টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে মাহফিল শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা শাহ আহমদ শফী। প্রধানমন্ত্রী সকাল পৌনে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। মঞ্চে আসন গ্রহণ করার আগে কওমি নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দিয়ে স্বীকৃতি প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানান শাহ আহমদ শফী। এছাড়াও শুকরিয়া আদায় করে দোয়া করেন শফী।

অনুষ্ঠান মঞ্চে কওমি আলেম ওলামাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন।

বিস্তারিত

প্রধানমন্ত্রীর অবদান সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে: আল্লামা শফী

প্রধানমন্ত্রীর অবদান সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে: আল্লামা শফী

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তরের (ইসলামিক শিক্ষা ও আরবি) স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করায় আজ রোববার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে শুকরানা মাহফিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য শুরু করেছেন।

কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমি বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এই শুকরানা মাহফিল হচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সংগঠনটির চেয়ারম্যান। তিনি সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন। তিনি কওমি শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অবদান ইতিহাসে সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

আল্লামা শফী শুকরিয়া স্বারক প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

বেলা ১১ টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেখানে পৌঁছান। বেলা পৌনে একটার দিকে প্রধানমনন্ত্রী বক্তব্য শুরু করেন।

তবে সকাল থেকেই মাহফিলে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছেন।

মাহফিল উপলক্ষে সারা দেশ থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ইমামদের ঢাকায় আনা হয়েছে। সকাল থেকে ঢাকার বাইরে থেকে আসা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আসা শুরু করেন। তাঁদের বহনকারী বাস শুকরানা মাহফিল উপলক্ষে পূর্ব নির্ধারিত স্থানে রেখে তাঁরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা হোন। অনেকেই হেঁটেই পৌঁছান সেখানে।

নরসিংদীর দারুল তাকওয়া মাদ্রাসা থেকে আসা দুজন শিক্ষক নুরুল আমিন ও ফয়জুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে একটি বাস রিজার্ভ করে আজ সকালে তাঁরা ঢাকা পোঁছান। তিনি জানান, ভোরে তাঁরা নরসিংদী থেকে রওনা হন। ব্রাহ্মনবাড়িয়া, সিলেট, নরসিংদী সহ ওই অঞ্চলের বাসগুলোকে তেজগাঁও এলাকায় রাখতে হয়েছে। বাস রেখে তাঁরা হেঁটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছেছেন। ওই দুই শিক্ষক দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তেরর স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
নরসিংদীর নাদিয়াতুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক রমজান আলী জানান, তাঁদের মাদ্রাসায় ৪০ জন ছাত্রী রয়েছে। তবে মাহফিলে শুধু তাঁরা শিক্ষকেরা অংশ নিতে এসেছেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে সকাল ১০টার দিকেই কওমি মাদ্রাসার বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সমাগম হতে দেখা যায়।

শাহবাগ মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দীর দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে, বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে।
http://archive.is/28wf7,  http://archive.is/W01ZA

বিস্তারিত

প্রধানমন্ত্রীকে কওমি জননী উপাধীতে ভুষিত করলো ধর্ম ব্যবসায়ী হেফাযত

 প্রধানমন্ত্রীকে   কওমি জননী উপাধীতে ভুষিত করলো ধর্ম ব্যবসায়ী হেফাযত

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোকরানা মাহফিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কওমি জননীউপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গওহরডাঙ্গার চেয়ারম্যান ও গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমীন এ উপাধি দেন।

আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত এ শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কওমি সনদের স্বীকৃতি দেয়ায় সংবর্ধনা দেয়া হয়।

রোববার সকাল ৯টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে এ মাহফিল শুরু হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে মাহফিলে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগেই আলেমদের সমাগমে একপ্রকার জনসমুদ্রে পরিণত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা শাহ আহমদ শফী।

http://archive.is/YwFlm 
বিস্তারিত

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাঝে পবিত্র ‘মীলাদ’ শব্দ মুবারক উনার ব্যবহার

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাঝে পবিত্র ‘মীলাদ’ শব্দ মুবারক উনার ব্যবহার


পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত মীলাদ শব্দ মুবারক :

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَـمُوْتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ : আর (হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম) উনার প্রতি সালাম (অবারিত শান্তি) যেদিন তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, আর যেদিন তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর যেদিন উনাকে পুনরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায়।সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

অনুরূপভাবে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিজের বক্তব্য মুবারক উল্লেখ করে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَالسَّلَامُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدْتُّ وَيَوْمَ اَمُوْتُ وَيَوْمَ اُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ : আমার প্রতি সালাম (অবারিত শান্তি) যেদিন আমি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করি, যেদিন আমি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবো এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

সুতরাং মূল অক্ষরে وُلِدْتُّ শব্দ মুবারক পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই ব্যবহৃত হয়েছে; যার অর্থ বিলাদত শরীফ গ্রহণ বা যমীনে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ। সাধারণ বাংলায় যাকে বলা জন্মগ্রহণ করা। এ শব্দ মুবারক প্রমাণ করে মীলাদের মূল অস্তিত্ব পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই বিদ্যমান।

এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَـمْ يَلِدْ وَّلَـمْ يُوْلَدْ
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি কারো থেকে বিলাদত শরীফ লাভ করেননি বা জন্মগ্রহণ করেননি এবং কাউকে জন্ম দেননি।” (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)

মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য বিলাদত শরীফ গ্রহণ করা বা কাউকে জন্ম দেয়া উনার শান মুবারক উনার খিলাফ। তথাপি এখানে يُوْلَدْيَلِدْ শব্দ মুবারক দ্বারা বিলাদত শরীফ বা জন্মগ্রহণ বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَوَالِدٍ وَّمَا وَلَدَ
অর্থ : শপথ জনকের এবং যা জন্ম দেয়।” (পবিত্র সূরা বালাদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যেও وَلَدَوَالِدٍ শব্দ মুবারক দ্বারা বিলাদত শরীফ বিষয়ে বুঝানো হয়েছে।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মীলাদ অর্থে ব্যবহৃত শব্দ মুবারক এক নজরে ছক আকারে দেখানো হলো-
ক্রম    পবিত্র আয়াত শরীফ  শব্দ মুবারক
      وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَـمُوْتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا      وُلِدَ
      وَالسَّلَامُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدْتُّ وَيَوْمَ اَمُوْتُ وَيَوْمَ اُبْعَثُ حَيًّا     وُلِدتُّ
      لَـمْ يَلِدْ وَلَـمْ يُوْلَدْ   يَلِدْيُوْلَدْ
      وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ     وَالِدٍوَلَدَ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত মীলাদ শব্দ মুবারক :

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنِ حَضْرَتْ الـمُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدّهٖ قَالَ وُلِدْتُّ اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ وَسَاَلَ حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامَ قُبَاثَ بْنَ اَشْيَمَ اَخَا بَنِيْ يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ اَاَنْتَ اَكْبَرُ اَمْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَكْبَرُ مِنّي وَاَنَا اَقْدَمُ مِنْهُ فِي الْمِيْلَادِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ.
অর্থ : হযরত মুত্তালিব ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে কাইস ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হতে এবং উনার পিতা উনার দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাতীর বছরেপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, আমিও সেই হাতীর বছরেই পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কুবাস বিন আশিয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে প্রশ্ন করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড় না আপনি বড়? তিনি উত্তরে বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার থেকে বড়, আর আমি উনার পূর্বে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি।” (তিরমিযী শরীফ, হযরত আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবনু ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি (২৭৯ হিঃ), আস সুনান, প্রকাশনা- বৈরুত, দারু ইহ্য়ায়িত তুরাসিল আরাবী, হাদীছ শরীফ নং ৩৬১৯)

আবার অন্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ بِـهٰذَا الْـحَدِيْثِ زَادَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرَاَيْتَ صَوْمَ يَوْمِ الْاِثْنَيْنِ وَيَوْمِ الْـخَمِيْسِ قَالَ ‏فِيْهِ وُلِدْتُّ وَفِيْهِ اُنْزِلَ عَلَىَّ الْقُرْاٰنُ.
অর্থ : হযরত আবূ ক্বাতাদা আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইয়াওমুল ইছলাইনিল আযীম শরীফ ও ইয়াওমুল খ¦মীস রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, এদিন (ইয়াওমুল ইছলাইনিল আযীম শরীফ) আমি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি, আর এদিনই আমার উপর ওহী বা পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে।” (মুসলিম শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৮০৭, আবূ দাঊদ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৪২৮, সুনানে কুবরা লি বায়হাক্বী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৮২১৭, ইবনে খুজাইমা শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২১১৭, মুসনাদে আবি আওয়ানা : হাদীছ শরীফ নং ২৯২৬, মুসনাদে আহমদ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২২৬০৩)

আবার অন্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ مَوْلُودٍ اِلَّا يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ‏.
অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক শিশু তার স্বভাবের উপর জন্মলাভ করে।” (মুসলিম শরীফ, কিতাবুল ক্বদর : বাবু মানা কুল্লি মাওলুদিন ইউলাদু আলাল ফিতরাতি ওয়া হুকমি মাওতি আত্বফালিল কুফফারি ওয়া আত্বফালিল মুসলিমীন : হাদীছ শরীফ নং ২৬৫৮)

সুতরাং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মাওলুদশব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি পবিত্র হাদীছ শরীফ শাস্ত্রের হযরত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা স্ব স্ব কিতাবে মীলাদ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেমন-
১. বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত আবূ ঈসা মুহম্মদ ইবনু ঈসা তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি (হিজরী ২৭৯) তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব জামে তিরমিযী শরীফ উনার ২য় খ-ের ২০৩ পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম রচনা করে নাম দিয়েছেন-
بَابُ مَا جَاءَ فِىْ مِيْلَادِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ যা রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সম্পর্কে এসেছে। এখানে তিনি মীলাদুন নবীশব্দটি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সংক্রান্ত বিষয় বুঝাতে ব্যবহার করেছেন।

২. ইমাম হযরত বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৪৫৮ হিজরী) তিনি উনার বিখ্যাত সীরাত সংক্রান্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব দালায়িলুন নুবুওওয়াতনামক কিতাবের ১ম খ-ের ৪৯ পৃষ্ঠায়
اَبْوَابُ مِيْلَادِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
শীর্ষক একটি অধ্যায় এনেছেন, যেখানে স্পষ্ট মীলাদে রসূলশব্দটি উল্লেখ করেছেন।
যেখানে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার বৃত্তান্ত (জীবন বৃত্তান্ত মুবারক) মুবারক আলোচনা করেছেন।

সুতরাং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হযরত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের স্পষ্ট দলীল দ্বারাই মীলাদ ও মীলাদুন নবী শব্দ মুবারক উনার প্রমাণ পাওয়া গেলো। সুবহানাল্লাহ। অর্থাৎ মীলাদুন নবীশব্দ মুবারক উনার শরয়ী সুস্পষ্ট ভিত্তি বিদ্যমান।

যেহেতু মীলাদুন নবীশব্দ মুবারক উনার সুস্পষ্ট শরয়ী ভিত্তি বিদ্যমান। আর এই শব্দ মুবারক দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের বিষয়টি বুঝানো হয়।

আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে বান্দা-বান্দিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশি প্রকাশ করতে আদেশ মুবারক করেছেন। সুতরাং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ মুবারক গ্রহণ উপলক্ষ্যে খুশি মুবারক প্রকাশ করাকেই বলা হয় ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অর্থাৎ ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার শরয়ী ভিত্তি অবশ্যই রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

বিস্তারিত