قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ.
“বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে। সুতরাং এরই প্রতি তাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা সঞ্চয় করছ। [সুরা ইউনুস: ৫৮]
ঈদে মিলাদুন্নবি পালনে উপরের বর্নিত আয়াতের হুকুম যেই ভাষায় প্রয়োগ করা হয়েছে ,পবিত্র কোরআনের অন্য কোথাও এমনিভাবে জোর তাগিদের সাথে হুকুম আসেনি ।একটূ ফিকির করলে এই আয়াতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনে কমপক্ষে ১০ টি তাগিদ রয়েছে –
১ ) قُلْ – قُلْ (কুল ) শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে কোন কথা শুরু করা হলে ,ইহাই এক প্রকারের জোর তাগিদ । যার উদ্ধেশ্য এই যে আপাদ-মস্তক নিমগ্ন হয়ে যাও ।
২ ) بِفَضْلِ اللّهِ আল্লাহর ফজলের কারনে । প্রশ্ন তৈরি হয় , আল্লাহর ফজলের কারন কি ? এই ফজল নবিজি । কারন নবিজি দুনিয়ায় না আসলে আমরা কোরআন পেতামনা । এই ফযল ও তাগিদ ।
৩ ) وَبِرَحْمَتِهِ – আল্লাহর রহমতের কারনে । প্রশ্ন হল রহমতের কারন কি ? রহমত কে ? ইহাও ৩য় তাগিদ ।
৪ ) بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ – ফযল ও রহমত একত্রীকরন । ফজলের পরে রহমতের উল্লেখ করাও তাগিদ ।
৫ ) فَبِذَلِكَ – জালিকা ( ذَلِكَ ) এর পরে ফা-কে এজাফত( সম্মান ) করা হয়েছে। ‘ফা’ – আরবী কাওয়ায়েদ অনুযায়ি তাগিদের জন্য ব্যবহৃত হয় বা তাগিদের জন্য আসে ।
৬ ) بِذَلِكَ – ফজল ও রহমত এর উল্লেখ করার পরে ইশারা বায়িদ লওয়াও তাগিদের অন্তর্ভুক্ত ।
৭ ) فَلْيَفْرَحُو – ‘ফালইয়াফরাহু ‘ শব্দের উপর পুর্ন ‘ফা ‘ হরফ এজাফত করা হয়েছে ,যার ফলে তাগিদ করা হয়েছে ।
৮ ) فَلْيَفْرَحُو – ইয়াফরাহু এর উপর ‘লাম’ ও তাগীদের জন্য হয়ে থাকে ।
৯ ) هُوَ خَيْرٌ – এখানে ‘হুয়া ‘ তাগিদের জন্য এসেছে ।
১০ ) مِّمَّا يَجْمَعُونَ – ইহাও তাগীদের কালাম ।
বর্নিত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ১০ তাগিদের সাথে যে হুকুম প্রদান করেছেন ইহা এই যে, فَلْيَفْرَحُو – ‘ফালইয়াফরাহু ‘ – খুশি পালন কর অর্থাৎ ঈদ পালন কর । কেননা فَبِذَلِكَ – ফাবিজালিকা ‘ শব্দ দ্বারা যেই হাবিব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথা বলা হয়েছে ,তিনি আগমন করেছেন ।
উপরোক্ত ১০ তাগীদের পরে বিষয়টি এমন চুড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে যে এই খুশি প্রকাশ করা সমস্ত আমল থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ হবার ঘোষনা স্বয়ং আল্লাহ পাক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ ।
এখন এই খুশি প্রকাশ অর্থাৎ ঈদে মিলাদুননবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কেউ পালন না করে ,বিরোধীতা করে তাহলে তার জীবনের কোন আমল কাজে আসবে কি ?
সে কি আল্লার বান্দা ,নবীর উম্মত হিসেবে পরিচয় দিতে পারবে ?
অতএব বিরোধীতা করার জন্য বিরোধীতা করে ঈদে মিলাদুন্নবীকে ” বিদয়াত ” বলার আগে একবার হলেও চিন্তা করে দেখুন আপনি কার বিরোধীতা করছেন ?