مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’ সম্পর্কে তিনটি শব্দ রয়েছে- مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’, مَوْلِدٌ ‘মাওলিদ’ ও مَوْلُوْدٌ ‘মাওলূদ’, যাد -ل-و মূলাক্ষর থেকে এসেছে। শব্দগুলো বানান ও উচ্চারণগত কিছু পার্থক্য থাকলেও মূল অক্ষর একই এবং একই অর্থ অর্থাৎ ‘বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ’ (জন্মবৃত্তান্ত, জন্মগ্রহণ সংক্রান্ত) বিষয় প্রকাশ করে। আবার এক দিক থেকে আলাদা অর্থ প্রকাশ করে। যেমন - مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’ শব্দের অর্র্থ জন্মের সময়, مَوْلِدٌ ‘মাওলিদ’ শব্দের অর্র্থ জন্মের স্থান, مَوْلُوْدٌ ‘মাওলূদ’ শব্দের অর্র্থ সদ্যপ্রসূত সন্তান। আর النبى ‘নবী’ শব্দ দ্বারা বুঝায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে।
অর্র্থাৎ আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে مِيْلَادُ النَّبِـىّ ‘মীলাদুন নবী’ বলতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ বুঝানো হয়ে থাকে।
مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’: مِيْلَادٌ শব্দখানি وَاحِدْ كُبْـرٰي এর صِيْغَةٌ বা শব্দরূপ। বাহাছ اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’ বা যন্ত্রবাচক বিশেষ্য থেকে এসেছে। যা وِلَادَةٌ মূল শব্দ থেকে উৎপত্তি। এ হিসাবে مِيْلَادٌ শব্দখানি মূলে ছিলো مِوْلَادٌ।
এ শব্দখানির শুরুতে مِيْمْ مَكْسُوْرْ (যের যুক্ত মীম) এবং পরে সাকিনওয়ালা و ওয়াও হরফ থাকায় উচ্চারণে কঠিন বিধায় اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’-এর ছীগাহ হিসাবে মীম হরফের নিচের যের’কে বহাল রেখে তার (যেরের) সমতা রক্ষার্থে সাকিনওয়ালা ওয়াও’কে বিলুপ্ত করে তদস্থলে يَاءٌ (ইয়া) হরফ’কে আনয়ন করে مِيْلَادٌ করা হয়েছে। যার আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক অর্থ হবে জন্মবৃত্তান্ত, জন্মের সময়, জন্ম, জন্মের তারিখ, বিলাদত শরীফ উনার সময় তারিখ ইত্যাদি।
অর্থাৎ مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’ শব্দটি اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’র অর্থ প্রকাশ করে না, বরং এ শব্দটি مَصْدَرٌ ‘মাছদার’ বা ক্রিয়ামূলের অর্থ প্রকাশ করে এবং اِسْمٌ ظَرْفٌ ‘ইসমে জরফ’-এর অর্থও প্রদান করে থাকে। একই বা অনুরূপ ওজনে শব্দ আসলেই যে ইসমে আলার অর্থ দিবে তা নয়। একই ওজনে শব্দ আসার পরও ইসমে আলার (যন্ত্রবাচক বিশেষ্যের) অর্থ প্রদান না করে বরং اِسْمٌ ظَرْفٌ ‘ইসমে জরফ’-এর অর্থ প্রদান করে থাকে এরূপ অনেক শব্দ সকল বিশ্বখ্যাত আরবী লুগাত বা অভিধানে রয়েছে। যেমন - مِيْرَاثٌ ‘মীরাছ’, مِيْعَادٌ ‘মীয়াদ’, مِيْقَانٌ ‘মীক্বান’, مِيْفَاءٌ ‘মীফা’, مِيْنَاءٌ ‘মীনা’, مِيْقَاتٌ ‘মীকাত’, مِـحْرٰبٌ ‘মিহরাব’ ইত্যাদি।
পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত মীলাদ অর্থে ব্যবহৃত শব্দ মুবারক এক নজরে ছক আকারে দেখানো হলো-
ক্রম পবিত্র আয়াত শরীফ শব্দ মুবারক
১ وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَـمُوْتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا وُلِدَ
২ وَالسَّلَامُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدْتُّ وَيَوْمَ اَمُوْتُ وَيَوْمَ اُبْعَثُ حَيًّا وُلِدتُّ
৩ لَـمْ يَلِدْ وَلَـمْ يُوْلَدْ يَلِدْ ও يُوْلَدْ
৪ وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ وَالِدٍ ও وَلَدَ
পবিত্র হাদীছ শরীফে ব্যবহৃত মীলাদ শব্দ মুবারক :
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنِ حَضْرَتْ الـمُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدّه قَالَ وُلِدْتُّ اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ وَسَاَلَ حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامَ قُبَاثَ بْنَ اَشْيَمَ اَخَا بَنِيْ يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ اَاَنْتَ اَكْبَرُ اَمْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَكْبَرُ مِنّي وَاَنَا اَقْدَمُ مِنْهُ فِي الْمِيْلَادِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ.
অর্থ : “হযরত মুত্তালিব ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে কাইস ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হতে এবং উনার পিতা উনার দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “হাতীর বছরে” পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, আমিও সেই হাতীর বছরেই পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কুবাস বিন আশিয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে প্রশ্ন করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড় না আপনি বড়? তিনি উত্তরে বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার থেকে বড়, আর আমি উনার পূর্বে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি।” (তিরমিযী শরীফ, হযরত আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবনু ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি (২৭৯ হিঃ), আস সুনান, প্রকাশনা- বৈরুত, দারু ইহ্য়ায়িত তুরাসিল আরাবী, হাদীছ শরীফ নং ৩৬১৯)
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত আবূ ঈসা মুহম্মদ ইবনু ঈসা তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি (হিজরী ২৭৯) উনার বিখ্যাত কিতাব তিরমিযী শরীফের ২য় খ-ের ২০৩ পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম রচনা করে নাম দিয়েছেন-
بَابُ مَا جَاءَ فِىْ مِيْلَادِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ যা রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সম্পর্কে এসেছে। এখানে তিনি ‘মীলাদুন নবী’ শব্দটি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সংক্রান্ত বিষয় বুঝাতে ব্যবহার করেছেন।
২. ইমাম হযরত বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৪৫৮ হিজরী) উনার বিখ্যাত সীরাত সংক্রান্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব “দালায়িলুন নুবুওওয়াত” নামক কিতাবের ১ম খ-ের ৪৯ পৃষ্ঠায়
اَبْوَابُ مِيْلَادِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
শীর্ষক একটি অধ্যায় এনেছেন, যেখানে স্পষ্ট ‘মীলাদে রসূল’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।
মীলাদুন নবী : মীলাদুন নবী শব্দ মুবারক সাধারণভাবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ বা বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের আলোচনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারক দ্বারা খাছভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের আলোচনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত থাকার কারণে যথাযথ আদব রক্ষার্থে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারকের সাথে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুক্ত করে ‘মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়।
ঈদে মীলাদুন নবী : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষ্যে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করাকে ঈদে মীলাদুন নবী বলা হয়ে থাকে। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত থাকার কারণে যথাযথ আদব রক্ষার্থে ঈদে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারকের সাথে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুক্ত করে ‘ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়।
অর্র্থাৎ আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে مِيْلَادُ النَّبِـىّ ‘মীলাদুন নবী’ বলতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ বুঝানো হয়ে থাকে।
مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’: مِيْلَادٌ শব্দখানি وَاحِدْ كُبْـرٰي এর صِيْغَةٌ বা শব্দরূপ। বাহাছ اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’ বা যন্ত্রবাচক বিশেষ্য থেকে এসেছে। যা وِلَادَةٌ মূল শব্দ থেকে উৎপত্তি। এ হিসাবে مِيْلَادٌ শব্দখানি মূলে ছিলো مِوْلَادٌ।
এ শব্দখানির শুরুতে مِيْمْ مَكْسُوْرْ (যের যুক্ত মীম) এবং পরে সাকিনওয়ালা و ওয়াও হরফ থাকায় উচ্চারণে কঠিন বিধায় اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’-এর ছীগাহ হিসাবে মীম হরফের নিচের যের’কে বহাল রেখে তার (যেরের) সমতা রক্ষার্থে সাকিনওয়ালা ওয়াও’কে বিলুপ্ত করে তদস্থলে يَاءٌ (ইয়া) হরফ’কে আনয়ন করে مِيْلَادٌ করা হয়েছে। যার আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক অর্থ হবে জন্মবৃত্তান্ত, জন্মের সময়, জন্ম, জন্মের তারিখ, বিলাদত শরীফ উনার সময় তারিখ ইত্যাদি।
অর্থাৎ مِيْلَادٌ ‘মীলাদ’ শব্দটি اِسْمُ اٰلَةٍ ‘ইসমে আলা’র অর্থ প্রকাশ করে না, বরং এ শব্দটি مَصْدَرٌ ‘মাছদার’ বা ক্রিয়ামূলের অর্থ প্রকাশ করে এবং اِسْمٌ ظَرْفٌ ‘ইসমে জরফ’-এর অর্থও প্রদান করে থাকে। একই বা অনুরূপ ওজনে শব্দ আসলেই যে ইসমে আলার অর্থ দিবে তা নয়। একই ওজনে শব্দ আসার পরও ইসমে আলার (যন্ত্রবাচক বিশেষ্যের) অর্থ প্রদান না করে বরং اِسْمٌ ظَرْفٌ ‘ইসমে জরফ’-এর অর্থ প্রদান করে থাকে এরূপ অনেক শব্দ সকল বিশ্বখ্যাত আরবী লুগাত বা অভিধানে রয়েছে। যেমন - مِيْرَاثٌ ‘মীরাছ’, مِيْعَادٌ ‘মীয়াদ’, مِيْقَانٌ ‘মীক্বান’, مِيْفَاءٌ ‘মীফা’, مِيْنَاءٌ ‘মীনা’, مِيْقَاتٌ ‘মীকাত’, مِـحْرٰبٌ ‘মিহরাব’ ইত্যাদি।
পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত মীলাদ অর্থে ব্যবহৃত শব্দ মুবারক এক নজরে ছক আকারে দেখানো হলো-
ক্রম পবিত্র আয়াত শরীফ শব্দ মুবারক
১ وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَـمُوْتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا وُلِدَ
২ وَالسَّلَامُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدْتُّ وَيَوْمَ اَمُوْتُ وَيَوْمَ اُبْعَثُ حَيًّا وُلِدتُّ
৩ لَـمْ يَلِدْ وَلَـمْ يُوْلَدْ يَلِدْ ও يُوْلَدْ
৪ وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ وَالِدٍ ও وَلَدَ
পবিত্র হাদীছ শরীফে ব্যবহৃত মীলাদ শব্দ মুবারক :
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنِ حَضْرَتْ الـمُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدّه قَالَ وُلِدْتُّ اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ وَسَاَلَ حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامَ قُبَاثَ بْنَ اَشْيَمَ اَخَا بَنِيْ يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ اَاَنْتَ اَكْبَرُ اَمْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَكْبَرُ مِنّي وَاَنَا اَقْدَمُ مِنْهُ فِي الْمِيْلَادِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ.
অর্থ : “হযরত মুত্তালিব ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে কাইস ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হতে এবং উনার পিতা উনার দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “হাতীর বছরে” পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, আমিও সেই হাতীর বছরেই পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কুবাস বিন আশিয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে প্রশ্ন করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড় না আপনি বড়? তিনি উত্তরে বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার থেকে বড়, আর আমি উনার পূর্বে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি।” (তিরমিযী শরীফ, হযরত আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবনু ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি (২৭৯ হিঃ), আস সুনান, প্রকাশনা- বৈরুত, দারু ইহ্য়ায়িত তুরাসিল আরাবী, হাদীছ শরীফ নং ৩৬১৯)
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত আবূ ঈসা মুহম্মদ ইবনু ঈসা তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি (হিজরী ২৭৯) উনার বিখ্যাত কিতাব তিরমিযী শরীফের ২য় খ-ের ২০৩ পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম রচনা করে নাম দিয়েছেন-
بَابُ مَا جَاءَ فِىْ مِيْلَادِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ যা রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সম্পর্কে এসেছে। এখানে তিনি ‘মীলাদুন নবী’ শব্দটি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সংক্রান্ত বিষয় বুঝাতে ব্যবহার করেছেন।
২. ইমাম হযরত বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৪৫৮ হিজরী) উনার বিখ্যাত সীরাত সংক্রান্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব “দালায়িলুন নুবুওওয়াত” নামক কিতাবের ১ম খ-ের ৪৯ পৃষ্ঠায়
اَبْوَابُ مِيْلَادِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
শীর্ষক একটি অধ্যায় এনেছেন, যেখানে স্পষ্ট ‘মীলাদে রসূল’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।
মীলাদুন নবী : মীলাদুন নবী শব্দ মুবারক সাধারণভাবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ বা বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের আলোচনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারক দ্বারা খাছভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের আলোচনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত থাকার কারণে যথাযথ আদব রক্ষার্থে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারকের সাথে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুক্ত করে ‘মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়।
ঈদে মীলাদুন নবী : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষ্যে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করাকে ঈদে মীলাদুন নবী বলা হয়ে থাকে। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত থাকার কারণে যথাযথ আদব রক্ষার্থে ঈদে মীলাদুন নবী শব্দ মুবারকের সাথে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুক্ত করে ‘ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়।