সপ্তম হিজরী শতাব্দীর ইতিহাসবিদ শায়েখ আবুল আব্বাস আল আযাফি এবং উনার ছেলে আবুল কাসিম আল আযাফি (সার্জারির জনক) উনাদের কিতাব-এ লিখেন- “পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিন ধার্মিক ওমরাহ-হজ্জ যাত্রী এবং পর্যটকেরা দেখতেন যে, সকল ধরণের কার্য্যক্রম (দুনিয়াবী) বন্ধ, এমনকি ক্রয়-বিক্রয় হতো না, উনাদের ব্যতীত যারা সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের স্থান জড়ো হয়ে দেখতেন। এ দিন পবিত্র কা’বা শরীফ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হতো।” (দুররুল মুনাজ্জাম)
সপ্তম হিজরী শতকে ওমর বিন মুল্লা মুহম্মদ মউসুলি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিবসকে নিয়মিতভাবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জারী রাখার প্রচলন চালু করেন। উনার অনুসরণে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অমর সিপাহসালার সুলতান হযরত সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভগ্নিপতি ইরবিলের বাদশাহ মালিক আবূ সাঈদ মুজাফফরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুষ্ঠান পালন প্রচলন করেন। (রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথম করলেও পূর্ব থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন হতো।) হযরত ইবনে খালকান আরবালি শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত অনুষ্ঠানের সাক্ষী।
“তারীখু মারাতিয যামান” এর মতে ওই অনুষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হতো। হিজরী ৭ম শতকের শুরুতে সে যুগের বিখ্যাত উলামা ও প্রসিদ্ধ ফোজালাগণের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব হযরত আবুল খাত্তাব উমর বিন হাসান দাওহিয়া ক্বলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়ে একটি কিতাব লিখেন যার নাম দেন ‘আত-তানউইর ফি মাওলিদিস সিরাজ আন নাযির’। তিনি বাদশাহকে এই কিতাব উপহার প্রদান করেন। তিনি নিজে কিতাবখানা পাঠ করে বাদশাহকে শুনান। বাদশাহ খুশি হয়ে উনাকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা উপহার দেন।