ঈদ হলে কি রোযা রাখা যাবেনা? নামাজ-খুতবা পড়তে হবে?

অনেক জাহেল বলে থাকে ঈদে মিলাদুননবী ঈদ হলে ঈদের দিন কি রোযা রাখা যায়?  এ দিন ঈদ হলে ঈদুল ফিতর ঈদুল আযহার মত নামাজ খুতবা নাই কেন?
বাতিল ফিরকার দল এবং গোমরাহ মুসলমান এ ধরনের অবান্তর প্রশ্ন করে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে তার অজ্ঞতাকেই জাহির করে।নিন্মের দুটি উদাহরন দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

ক) জুমুয়ার দিন ঈদের দিন - 
১. "জুম’আর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন।" [ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮]
২. "জুম’আর দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদা সম্পন্ন।"
[মুসনাদে আহমদঃ৩/৪৩০; ইবন মাজাহঃ১০৮৪]
৩. এ জুমুয়ার দিন হচ্ছে এমন একটি দিন, যেদিনকে আল্লাহ পাক ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন!"
[সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ; মুসনাদে আহমদ শরীফ; মিশকাত শরীফ - জুমুয়ার অধ্যায়]

*জুমুআর ঈদের দিনে রোযা রাখা হারাম নয় বরং অশেষ ফযীলতের কারণ।
*আবার রোজার সময়ে জুমুয়া বার ও রোজা রাখতে হয়।
আর এ ঈদের আমলের মধ্যে কুরবানী কিংবা ছদক্বাতুল ফিতর কোনটিই নেই। বরং জুমুআর দিনে যুহরের নামাযের পরিবর্তে কেবলমাত্র পুরুষ, বালিগ, সুস্থ, মুক্বীম ব্যক্তির জন্য মসজিদে গিয়ে খুতবাসহ নামায আদায় করতে হয়। আর মহিলাদের জন্য জুমুআর দিনে আলাদা কোন ছলাতও নেই, আবার খুতবাও নেই।

খ) আরাফার দিন ঈদের দিন- 
সহীহ হাদীস শরীফের মধ্যে উল্লেখ হয়েছে,
হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, আরাফার দিন, নহর বা কুরবানীর দিন এবং আইয়্যামে তাশরীক (অর্থ্যাৎ ১১, ১২ ও ১৩ ই জিলহজ্জ) আমাদের মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন।
দলীল:
নাসাঈ শরীফ কিতাবুল হজ্জ : হাদীস নম্বার ৩০০৪,
আবু দাউদ – কিতাবুছ সিয়াম : হাদীস ২৪১৯,
তিরমিযী শরীফ- কিতাবুছ ছিয়াম: হাদীস ৭৭৩)

এ দিনে রোজা পালন করা প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে—
সাহাবি আবু কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘আরাফার দিনের রোজা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিগত ও আগত বছরের গুনাহের কাফ্ফারা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।’ (মুসলিম ১১৬৩ )

আরাফা’র দিনে শুধুমাত্র যারা হজ্জে যেয়ে থাকেন তাদের জন্য ৯ই যিলহজ্জ আরাফা’র ময়দানে অবস্থান করাটা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। আর শুধুমাত্র হাজীগণের জন্য আরাফা’র ময়দানে যুহর ও আছর নামায পড়তে হয়। ঈদের দিন হওয়া সত্ত্বেও আরাফা’র ময়দানে আলাদা কোন ছলাত নেই। আর খুতবা শুধুমাত্র হাজীগণের জন্যই। হাজীগণ ব্যতীত দুনিয়ার কোন মুসলমানের জন্য হোক সে পুরুষ অথবা মহিলা আরাফা’র দিন ঈদের দিন হওয়া সত্ত্বেও আলাদা কোন ছলাতও নেই, খুতবাও নেই। আর অন্যান্যদের জন্য আরাফা’র দিন রোযা রাখা খাছ সুন্নত এবং অশেষ ফযীলতের কারণ।

স্মরণীয় যে, সব ঈদের হুকুম এক রকম নয়। যেমন ঈদুল ফিতরের বিশেষ আমল হলো ঈদের নামাযের পূর্বে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা। আর ঈদুল আযহার বিশেষ আমল হলো ঈদের নামাযের পরে পশু কুরবানী করা। যার প্রত্যেকটি ওয়াজিব। এ দু’ঈদে কিন্তু রোযা রাখা হারাম।
যারা না বুঝে ঈদে মিলাদুননবীকে অস্বীকার করে তারা চরম স্তরের জাহিল।