মুফতে কানা বাযের মিলাদ কিয়ামবিরোধী দলিলবিহীন বক্তব্যের দলিলভিত্তিক জবাব - ১


সৌদিআরব থেকে প্রকাশিত মুফতে আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লা বিন বায কর্তৃক লিখিত وجوب لزوم السنة والحزر من البدعة
নামক ক্ষুদ্র পুস্তিকার অনুবাদক রকীবুদ্দিন হুসাইন। বাংলা ভাষায় বইটির নামকরণ করা হয়েছে -

  • ‘সুন্নাতে রাসুল আকড়ে ধরা এবং বিদআত থেকে সতর্ক থাকা অপরিহার্য’ 
বইটি দেশ-বিদেশে বিশেষ করে হজ্ব মৌসুমে হাজী সাহেবানদের নিকট বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে।
লেখক বইটির বিভিন্ন স্থানে মিলাদুন্নবী মাহফিলের বিরূপ সমালোচনা করেছে এবং ইহাকে নাজায়েজ ও জঘন্যতম বিদআত বলে আখ্যায়িত করেছে। এতে ধর্মপ্রাণ নবীপ্রেমিক মুসলমান পাঠকদের অন্তরে কঠোরভাবে আঘাত হেনেছে। 

উক্ত বইয়ের -
  • ২য় পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে- রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা অন্য কারো জন্ম উৎসব পালন করা জায়েজ নয়। বরং তা বারণ করা অবশ্যই কর্তব্য। কেননা এটি ধর্মে নবপ্রবর্তিত একটি বিদআত।
  • ৯ম পৃষ্ঠায় লিখা রয়েছে- ধর্মের সাথে মিলাদ মাহফিল বা যাবতীয় জন্মবার্ষিকী পালনের কোন সম্পর্ক নেই। বরং যে বিদআতসমুহ থেকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিষেধ ও সতর্ক করেছেন এটি সেগুলোরই অন্তর্ভুক্ত।

এই বক্তব্যের স্বপক্ষে দলিল হিসেবে উক্ত বইয়ের ২য় ও ৩য় পৃষ্ঠায় চারখানা হাদীসের অনুবাদও পেশ করা হয়েছে। নিম্নে তা প্রদত্ত হল।

  • প্রথম হাদীস -  তিনি (রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- "আমাদের এই ধর্মে যে কেউ নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে তা প্রত্যাখান হবে।" 
  • দিতীয় হাদীস - নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "কেউ যদি এমন কাজ করে যা আমাদের এই ধর্মে নেই তাহলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে"
  • তৃতীয় হাদীস - নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- "তোমরা আমার সুন্নত এবং আমার পরবর্তী খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত পালন করবে। আর তা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করবে। সাবধান কখনো ধর্মে নব প্রবর্তিত কোন বিষয় গ্রহণ করবে না। কেননা প্রত্যেক নব পবর্তিত বিষয়ই বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআতই পথভ্রষ্ঠতা।"
  • চতুর্থ হাদীস - রাসূলুল্লাল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুময়ার দিন খুৎবায় বলতেন, "নিশ্চয়ই সর্বোত্তম কথা হলো আল্লাহর কিতাব আর সর্বোত্তম হেদায়াত হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের হেদায়াত। সর্ব নিকৃষ্ট বিষয় হলো মনগড়া নব প্রবর্তিত বিষয় বিদআত এবং এরূপ প্রতিটি বিদআতই পথভ্রষ্টতা।" 
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা মুফতি বায  বুঝাতে চেয়েছে, মিলাদুন্নবীর মাহফিল একটি নব আবিষ্কৃত বিদআত এবং সকল প্রকার বিদআতই ভ্রষ্টতা। ইসলাম ধর্মে এর কোন স্থান নেই। তার এই মনগড়া বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে দলিল হিসেবে উপরিলিখিত চারখানা হাদিস শরীফ উল্লেখ করেছে। অথচ মিলাদ শরীফ পাঠ করা যে, সুন্নাত নতুন কিছু নয় বরং নবীপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়েকেরাম এর যুগ থেকে চলে আসছে তার বহু প্রমাণ রয়েছে। 

দলিলভিত্তিক জবাব- 
বিদয়াতের লোগাতী অর্থ হচ্ছে-

  • “বিদয়াত হলো-দ্বীনের পূর্ণতার পর নতুন কোন বিষয় উদ্ভব হওয়া অথবা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আমল ও খাহেশাত সম্পর্কিত কোন বিষয় নতুন উদ্ভব হওয়া |” (লোগাতুল কামূস আল মহীত্ব ৩য় জিঃ পৃঃ৩, বায়ানুল লিসান, পৃঃ১১৫)

বিদয়াত শব্দের লোগাতী বা আভিধানিক মূল অর্থ হলো- নতুন উৎপত্তি, নতুন উদ্ভব, নতুন সৃষ্টি | পূর্বে যার কোন অস্তিত্ব ছিলনা |
বিদয়াতের শরীয়তী অর্থ

  • বিদয়াতের শরীয়তী অর্থ সম্পর্কে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ্ আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, “প্রকৃতপক্ষে বিদয়াত হলো- এমন জিনিসের আবির্ভাব, যার নমুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা |” (ওমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী ৫ম জিঃ পৃঃ৩৫৬)

শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদয়াত শব্দের মূল অর্থ হলো- ঐ নতুন উদ্ভব বিষয়, যার ভিত্তি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসে নেই |

বিদয়াতের ব্যাখ্যা
উপরোক্ত লোগাতী ও শরীয়তী অর্থের আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিদয়াত হলো হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর হতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত উদ্ভাবিত প্রত্যেক নতুন বিষয় | অতএব, নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ের কোনটি শরীয়তে গ্রহণযোগ্য ও কোনটি পরিত্যাজ্য, তা অবশ্যই ব্যাখ্যা সাপেক্ষ |
তাই এ বিদয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিশ্ব বিখ্যাত হাদীছ শরীফের কিতাব মেশকাত শরীফের শরাহ্ মেরকাত শরীফে উল্লেখ করেন, “ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে নব উদ্ভাবিত কাজ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, আসার (অর্থাৎ সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের আমল বা কাওল) অথবা ইজমার বিরুদ্ধ বলে প্রমাণিত, সেটাই গোমরাহী ও নিকৃষ্ট | আর যে নব উদ্ভাবিত কাজ উল্লেখিত কোনটির বিপরীত বা বিরুদ্ধ নয়, তা মন্দ বা নাজায়েয নয় |” (মেরকাত শরহে মেশকাত, ১ম জিঃ পৃঃ১৮৯)

শায়খ ইব্রাহীম হালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “নতুন উদ্ভাবিত কোন কাজ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাবেয়ীনগণের নিকট হতে প্রমাণিত না থাকলে অথবা উক্ত কাজের প্রতি বিদয়াত শব্দ আরোপিত হলেই যে, তা মন্দ বা গোমরাহী একথা যুক্তিযুক্ত নয় | বরং তা ভালও হতে পারে |” (কবীরী শরহে মুনিয়াতুল মুসল্লী পৃঃ২৫১)
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনার এহইয়াউল উলুম কিতাবের ২য় খন্ড ২৬ পৃষ্ঠায় অনুরূপ মন্তব্য করেন |
অতএব, যে সকল কাজ উল্লেখিত ভিত্তিসমূহের উপর প্রতিষ্ঠিত, তা দ্বীন অর্থাৎ শরীয়তের অন্তর্ভূক্ত বলেই বিবেচিত হবে |
|
উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে, বিদয়াত মাত্রই পরিত্যাজ্য নয় এবং সকল বিদয়াতই গোমরাহী নয় | যদি তাই হতো, তবে তারাবীহ্ নামাজ জামায়েতে পড়া জায়েয হতো না | কেননা এটাকেও বিদয়াত বলা হয়েছে, অর্থাৎ উত্তম বিদয়াত |
এখন মূল বিষয় হলো- বিদয়াত কত প্রকার ও কি কি এবং তার মধ্যে কোনটি শরীয়তে গ্রহণযোগ্য আর কোনটি শরীয়তে পরিত্যাজ্য, তা নির্ণয় করা |
বিদয়াতের শ্রেণী বিভাগ
———————-
ইমাম, মুজতাহিদগণ শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিদয়াতকে প্রথমতঃ দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন-

  • (১) বিদয়াতে ই’তেক্বাদী বা আক্বীদাগত বিদয়াত হলো-

যে সমস্ত আক্বীদা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের মূলনীতির বহির্ভূত, মূলতঃ এ আক্বীদাগত বিদয়াতের সবটাই হারামের পর্যায়ভূক্ত ‍এবং অবশ্যই পরিত্যাজ্য | যেমন- খারেজী, মু’তাজিলা, জাবারিয়া, ক্বদরিয়া, শিয়া ইত্যাদি বাতিল ফিরকার আবির্ভাব | এই নব আবির্ভূত ফিরকার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা সম্পূর্ণই হারাম ও কুফরী |

  • (২) বিদয়াতে আ’মালী বা কর্মগত বিদয়াতঃ

বিদয়াতে আ’মালী প্রথমতঃ দু’ভাগে বিভক্ত-

  • (ক) বিদয়াতে হাসানা আবার তিন প্রকার- (১) বিদয়াতে ওয়াজিব, (২) বিদয়াতে মোস্তাহাব ও (৩) বিদয়াতে মোবাহ্ |

আর এ বিদয়াতে হাসানাহ্ সম্পর্কেই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
من سن فى الا سلام سنة حسنة فله اجرها واجر من عمل بها من بعده
“যে কেউ দ্বীন ইসলামে উত্তম কোন পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে (যা শরীয়ত সম্মত), তার জন্য সে সাওয়াব পাবে এবং তারপরে যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে, তার সাওয়াবও সে পাবে |” (মুসলিম শরীফ)
উল্লেখিত হাদীস শরীফের দৃষ্টিতে বিদয়াতে হাসানাকে বিদয়াত লিদদ্বীন বলা হয় | কেউ কেউ আবার উক্ত হাদীস শরীফের দৃষ্টিতে বিদয়াতে হাসানাকে ‘বিদয়াতে লোগবী’ও বলে থাকেন | অর্থাৎ যদিও শাব্দিক অর্থে বিদয়াত বলা হয়েছে, মূলতঃ এগুলো সুন্নাতেরই অন্তর্ভূক্ত | কারণ হাদীছ শরীফে (سنة) সুন্নাত শব্দ উল্লেখ রয়েছে।

  • (খ) আর বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ দু’প্রকার- (১) বিদয়াতে হারাম, (২) বিদয়াতে মাকরূহ্ |

এই বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ সম্পর্কেই হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
من احدث فى امر نا هذا ماليس منه فهورد
“যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনের ভিতরে কোন নতুন জিনিসের প্রবর্তন করবে, যার ভিত্তি এ দ্বীনে নেই, তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য |” (মিশকাত শরীফ)
আর এ বিদয়াত সম্পর্কেই ইরশাদ হয়েছে, كل بدعة ضلالة وكل ضلالة فى النار.
অর্থঃ- “প্রত্যেক বিদয়াতই গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহ লোকই জাহান্নামে যাবে |”
উল্লেখিত হাদীস শরীফের দৃষ্টিতে বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহকে বিদয়াত ফিদদ্বীন বলা হয় | আর এ বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহকেই ‘শরয়ী’ বিদয়াত বলা হয় |

মূলকথা হলো- যা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নতুন উদ্ভব হয় এবং তা দ্বীনের সাহায্য করে থাকে অথবা সাহায্যকারী না হলেও দ্বীনের কোন ক্ষতি করে না, সেটাই বিদয়াত লিদদ্বীন বা লোগবী বিদয়াত অর্থাৎ বিদয়াতে হাসানা | আর যে নতুন বিষয় উদ্ভব হওয়ার কারণে দ্বীনের কিছুমাত্রও ক্ষতি হয়, তবে সেটাই হবে বিদয়াতে ফিদদ্বীন বা শরয়ী বিদয়াত অর্থাৎ বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ |

কেউ কেউ আবার বলে থাকে, খাইরুল কুরুনের পর আবিস্কৃত প্রত্যেক নতুন জিনিসই বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ | অথচ এটা মোটেও শুদ্ধ নয় | কেননা যদি তাই হতো, তবে আমাদের সামাজে প্রচলিত এমন অনেক নতুন বিষয় রয়েছে, যা অবশ্যই পরিত্যাগ করা জরুরী হয়ে পড়তো |
যেমন-
(ক) বর্তমানে যে পদ্ধতিতে মাদ্রাসায় ইলম শিক্ষা দেওয়া হয়, সেই পদ্ধতি সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুরু করে “খাইরুল কুরুন” পর্যন্ত কারো সময়ই ছিলনা |
(খ) বর্তমানে আমরা যে নাহু সরফ শিক্ষা করে থাকি, তাও “খাইরুল কুরুনে” ছিল না |
(গ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে তারাবীহর নামাজ পড়ে থাকি, এ পদ্ধতিও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা |
(ঘ) বর্তমানে আমরা মসজিদে জামায়াতের জন্য যে সময় নির্ধারণ করে থাকি, তাও সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা |
(ঙ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে জুময়ার সানী আজান দিয়ে থাকি, এ পদ্ধতি সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা |
(চ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে ওয়াজ মাহফিল করে থাকি ঐরূপ পদ্ধতি সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়াজ মাহফিল করেননি |
(ছ) বর্তমানে আমরা যে পোলাও, বিরিয়ারী কোর্মা, বুট, মুড়ী, পিয়াজো খেয়ে থাকি, তা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাননি |
(জ) বর্তমানে আমরা যে সকল যান-বাহনে চড়ে থাকি যেমন- মোটরগাড়ী, ট্রেন, প্লেন, রকেট, রিক্সা জাহাজ ইত্যাদি এবং পবিত্র হজ্বব্রত পালন করি ও বিদেশ ভ্রমনে যাই, তা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা, তিনি ঐগুলোতে কখনো চড়েননি |
(ঝ) বর্তমানে মানুষ যে সকল খাট-পালঙ্ক, সোকেস-আলমারী ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে, তা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করেননি |
(ঞ) বর্তমানে বিয়ে-শাদীতে যে কাবিননামা করা হয়, তা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় ছিলনা |
(ত) বর্তমানে যে সকল আধুনিক যন্ত্রপাতি মানুষ ব্যবহার করছে, যেমন- ফ্যান, ঘড়ি, চশমা, মাইক, কম্টিউটার ইত্যাদি, এগুলো সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় ছিলনা |
(থ) বর্তমানে যে পদ্ধতিতে মাদ্রাসার জন্য চাঁদা আদায় করা হয়, যেমন সদকা, ফেৎরা, যাকাত, কুরবানীর চামড়া, মান্নতের টাকা ইত্যাদি এবং যে পদ্ধতিতে মাদ্রাসা তৈরী করা হয়, তা যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা | তদ্রুপ ‘খায়রুল কুরুনেও’ ছিলনা | এমনিভাবে আরো অনেক বিষয়ই রয়েছে, যা সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা “খায়রুল কুরুনে” ছিলনা কিন্তু আমরা তা দায়েমীভবে করছি |

মুফতে বাজ কি এসব থেকে বিরত আছে ? সব যদি বিদয়াতই হয় তাহলে সে এসব বিদয়াত গ্রহন করছে কোন দলিলে ?