সাহাবীগণ ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করাকে ফজিলতের কারণ হিসেব বর্ণনা করেছেন এ দলিল পাওয়া যায়। (সূত্র: ‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’) এমনকি বড় বড় সব তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ীগণ ঈদে মীলাদুন নবী পালন করেছেন সেই দলিলও পাওয়া যায়।
হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু’র ছাত্র ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছিলেন:
“আমার যদি উহুদ পর্বত পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো, তবে আমি তা ঈদে মীলাদুন্নবীর জন্য খরচ করতাম” (বই-আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)।
তবে ক্রুসেড যুদ্ধের সময় সালতানাতের পক্ষ থেকে বিরাট সমারহে ঈদে মীলাদুন নবী আয়োজন শুরু হয় (১২শ’ শতাব্দী)। ইরাকের আরবালের বাদশাহ হযরত মালিক মুজাফফর রহমতুল্লাহি বিষয়টি বড় উদ্যোগে আয়োজন শুরু করেন। উল্লেখ্য পুরো মুসলিম সালতানাতের সুলতান মুসলিম বীর হযরত সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবি রহমতুল্লাহি আলাইহি'র বোনকে বিয়ে করেছিলেন হযরত মালিক মুজাফফর রহমতুল্লাহি। সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবি রহমতুল্লাহি আলাইহি'র পৃষ্ঠপোষকতায় বিষয়টি আরো বিস্তৃতি লাভ করে। যার প্রভাব পুরো মুসলিম কায়িনাতে ছড়িয়ে পরে। আজ থেকে ৪শ’ বছর আগে ইমামুল মুহাদ্দেসীন হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ কিতাবে বর্ণনা করেন, কিভাবে পবিত্র মক্কা ও মদীনা শরীফের জনগোষ্ঠী, মিসর-সিরিয়া-স্পেনের মুসলমানরা উৎসাহ-উদ্দিনপার সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী পালন করতেন ।
এবার আসুন খ্রিস্টানদের ক্রিসমাসের ইতিহাস দেখি:
খ্রিস্টানরা তাদের ক্রিসমাসের গোড়া যত আগে থেকেই দেখাক, ক্রিসমাস শব্দের উৎপত্তি কিন্তু হয়েছে ১০৩৮ সালের একটি রচনা থেকে। ক্রিসমাট ট্রি শব্দটি পাওয়া যায় ১৮৩৫ সালের একটি রচনা থেকে। ১৭শ’ শতাব্দী থেকে মুসলমানদের দেখাদেখি কিছু খ্রিস্টান নিজেদের নবীর বিষয়টি চালু করতে চাইলেও গোড়া খ্রিস্টানরা এর কট্টর বিরোধী ছিলো। তাই খ্রিস্টানদের মধ্যে এ দিবসটি তখন পালন করা হয়নি। তবে নিষেধাজ্ঞা তুলে খ্রিস্টানরা ক্রিসমাসকে দিবস হিসেবে পালন শুরু করে উনবিংশ শতাব্দী থেকে। ১৯ শতাব্দীর আগে খ্রিস্টানরা ক্রিসমাসকে বড় উৎসব হিসেবে বড় অনুষ্ঠান করে পালন করেছে এমন ইতিহাস কেউ দেখাতে পারবে না। তবে ক্রিসমাসের দিবস নিয়ে খ্রিস্টানরা সন্দিহান। কেউ পালন করে ২৫শে ডিসেম্বর, কেউ ৬ জানুয়ারি, কেউবা ৭ই জানুয়ারি, কেউবা ১৯শে জানুয়ারি ক্রিসমাস পালন করে থাকে। তবে জাতীয় স্বার্থে তারা বিষয়টি এখন একদিনেই (২৫শে ডিসেম্বর) প্রচার করে থাকে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না স্বর্ণযুগে মুসলমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি দেখে অনেক কালচার গ্রহণ করেছিলো খ্রিস্টানরা। মুসলমানরা তাদের নবীজির জন্মদিবস পালন উপলক্ষে আনন্দ খুশি করে, সবাইকে খাদ্য খাওয়ায় এ কালচারটা খ্রিস্টানরাও আয়াত্ব করার চেষ্টা করে। এ শিক্ষা থেকেই তারা কথিত ক্রিসমাস পালন শুরু করে।
তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, ঈদে মীলাদুন নবী খ্রিস্টানদের থেকে নয়, বরং খ্রিস্টানরাই মুসলমানদের দেখে ক্রিসমাস চালু করেছে।