১. সাইয়্যিদ মুহম্মদ সুলাইমান নদভী রহমতুল্লাহি আলাইহি “ সিরাতুন নবী “ জীবনী গ্রন্থে , ভলিউম ৩ উল্লেখ করেছেন ৩/৪ শতক হিজরী ইলাদ শরীফ উদযাপন করা হত ।
২. আল আযরাকী (৩য় শতাব্দী ) উল্লেখ করেছেন যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাড়িতে মিলাদ হত। যারা ইসলামিক স্কলার ছিলেন তাঁরা সে বাড়িতে নামাজ আদায় করতেন এবং নিয়ামতের লক্ষ্যে তাবারুক এর ব্যবস্থা করতেন। ( আখবর মক্কা – ২/১৬০ )
৩. মুফাসসির আল নাকাশ ২৬৬-৩৫১ হিজরি তাঁর ‘ শিফা আল ঘারাম ১/১৯৯ ‘ উল্লেখ করেন যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাড়িতে প্রতি সোমবার দোয়া হত ।
৪.ইবনে জুবায়ের ৫৪০ – ৬৪০ হিজরী ‘কিতাব আর রিহাল’ এর ১১৪-১১৫ পেজ এ উল্লেখ করেছেন
‘ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাড়িতে রবিউল আউওয়াল মাসের প্রতি সোমবারে ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করা হত’
৫. ৭ম শতকের ইতিহাসবিদ শায়েখ আবু আল আব্বাস আল আযাফি এবং তাঁর ছেলে আবু আল কাসিম আল আযাফি ( সার্জারির জনক ) তাঁদের কিতাব ‘আল দুরর আল মুনাজ্জাম’ এ লিখেন -
" মক্কা শরিফে ঈদে মিলাদুননবির দিন ধার্মিক ওমরাহ হজ্জ্বযাত্রী এবং পর্যটকেরা দেখতেন যে, সকল ধরনের কার্য্যক্রম (দুনিয়াবী )বন্ধ, এমনকি ক্রয় -বিক্রয় হতনা ,তাঁদের ব্যতিত যারা সম্মানিত জন্মদিন স্থান দেখতেন এবং সেখানে জড় হয়ে দেখতেন । এ দিন পবিত্র কাবা শরীফ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হত। "
৬. ৮ম শতকের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ইবনে বতুতা তাঁর ‘রিহলা’ কিতাবের ভলিউম ১ , ৩০৯ এবং ৩৪৭ পৃষ্ঠায় লিখেন-
" প্রতি জুম্মা নামাজের পর এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইই ওয়া সাল্লাম উনার জন্মদিনে বানু শায়বা এর প্রধান কতৃক পবিত্র কাবা শরিফের দরজা খোলা হত। মক্কা শরিফের বিচারক নজম আল দীন মুহম্মদ ইবনে আল ইমাম মুহুয়ি আল দিন আল তাবারি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বংশধর এবং সাধারন জনগনের মাঝে খাবার বিতরন করতেন।"
৭.১০ হিজরি শতকের ইতিহাসবিদ শায়েখ ইবনে যাহিরা তাঁর ' জামি আল লতিফ ফি ফাদলি মক্কাতা ওয়া আহলিহা" শায়েখ হাফিয ইবনে হাযার আল হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ' আল মাওলিদ আল শরিফ আল মুনাজ্জাম ' এবং ইতিহাসবিদ শায়েখ আল নাহরাওয়ালি তাঁর 'আল ইমাম বি আলাম বায়েত আল্লাহ আল হারাম' পৃষ্টা ২০৫ তাঁদের লিখিত কিতাবে বলেন-
" প্রতি বছর ১২ রবিউল আউওয়াল শরিফে বাদ মাগরীব ৪ জন সুন্নি মাযহাব স্কলার ,বিচারক , ফিক্বহবিদ, শায়েখান , শিক্ষক , ছাত্র , ম্যাজিস্ট্রেট , বিজ্ঞজন এবং সাধারন মুসলমানগন মসজিদের বাহিরে আসতেন এবং তাসবীহ-তাহলীল এর সাথে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থান বাড়ি পরিদর্শন করতেন । বাড়িতে যাওয়ার পথ আলোকসজ্জা করা হত । সকলে উত্তম পোষাক পরিধান করতেন এবং সাথে তাঁদের সন্তানদের নিতেন।
পবিত্র জন্মস্থানের ভিতরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদতি শান প্রকাশের সময়কার বিভিন্ন বিশয়াদি বিশেষবভাবে বর্ননা করা হত । তারপর অটোমান সাম্রাজ্যের জন্য সবাই দোয়া করতেন এবং বিনয়ের সহিত দোয়া করা হত ।
ইশা নামাজের কিছুক্ষন পুর্বে সকলে মসজিদে চলে আসতেন ( যা থাকত লোকে লোকারন্য ) এবং সারিবদ্ধভাবে মাকামে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর সামনে বসতেন ।
বর্তমানে ওহাবী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঈদে মিলাদুন্নবির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি বন্ধ করতে চাইলেও মদিনা শরিফে এখনো ঈদে মিলাদুন্নবি পালন হয়।
যার বিদয়াত বলে এ দিবসকে অস্বীকার করতে চায় তারা কি ইসলামের ইতহাসকে ভুল প্রমান করতে চায় ?