খারিজী, ওয়াবী, জামাতী, ইলিয়াসী তাবলীগ জামাত, দেওবন্দী গংদের যা চিরন্তন খাছলত। মাথায় ব্যাথার উপসর্গ দেখা দিলে তাতে ঔষধ প্রয়োগ না করে পুরো মাথাটিই কেটে ফেলা ওদের খাছলতগত প্রবৃত্তি। সব ফরয নামাযের পর মুনাজাত করলে মানুষ একে ফরয মনে করতে পারে এই অমূলক অশঙ্কায় পরিশেষে তারা ফরয নামাযের পর মুনাজাতই বন্ধ করে দিল, মুনাজাত করাকে বিদয়াত বলে প্রচার শুরু করল। (নাউযুবিল্লাহ্ মিন যালিক)
অথচ ঘাড় মসেহ্ করার মত মুস্তাহাব আমলকে অদ্যাবধি মানুষ মুস্তাহাব জেনেই করে আসছে। কেউ তাকে ফরয বলে গণ্য করছেনা, সে দৃষ্টান্তেও ওদের চেতনা নেই।
সূক্ষ্ম চিন্তানুভূতি আর ছহীহ্ সমঝের পরিবর্তে ওরা মোটা বুদ্ধি আর বক্র চিন্তায়ই অভ্যস্ত।
ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেন পালন করা যাবেনা সে বিষয়ে ওদের জাহিলী যুক্তি হচ্ছে- তথাকথিত সুন্নীদের কীর্তিকলাপকে কেন্দ্র করে। তাদের ভাষায়- “আতশ বাজি-পটকা, জশনে-জুলুস, রং বেরংয়ের আলোকসজ্জা, আনন্দ মিছিল প্রভৃতির মাধ্যমে ঈদ পালন করেন কিরূপে?
“রবিউল আউয়াল মাসের বারো তারিখ রাজধানীতে দেখা যায় জশনে জুলুসে ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে অধিকাংশ আগাগোড়া সুন্নতহীন, পীর প্রেমে আচ্ছন্ন একদল তাদের পীরকে জেল ফেরত রাজনৈতিক নেতার ন্যায় ফুলের মালায় সজ্জিত করে ছাদ খোলা পাজেরো জীপে চড়িয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে রাজপথ থেকে শুরু করে পল্টন ময়দান প্রকম্পিত করছে। আর গাড়ীতে বসা পীর সাহেব হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। সঙ্গে বত্রিশ দন্ত বিকশিত করা ক্লোজআপ হাসি ফ্রি। তার ভাবখানা দেখে বুঝতে সত্যিই কষ্ট হচ্ছিল যে, জন্মদিন কি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাকি এ পীর সাহেবের। আবার সুন্নী নামধারী একদলকেও দেখা গেছে রং বেরংয়ের ব্যানারে ফেস্টুন নিয়ে নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী নির্বিশেষে সমস্বরে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীর বন্দনা গেয়ে রাজপথ, অলি-গলি মুখরিত করতে।”
পাঠক! শুধু ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে বা উক্ত দিনে কেন? সব দিনেই, সবক্ষেত্রেই পর্দার খিলাফ করা, ছবি তোলা শরীয়তের দৃষ্টিতে সুস্পষ্ট হারাম। কাজেই শুধু এদিনে বা এ বিষয়ে নয় নামধারী সুন্নীদের মত খারিজী, ওহাবী, দেওবন্দী গং এর নারী নেতৃত্ব গ্রহণ, নারী নেতৃত্বের সাথে সহাবস্থান, ছবি তোলা একইভাবে নিন্দনীয় ও বর্জনীয়। কিন্তু কথা হলো মহল বিশেষের এসব বেশরা কাজগুলো কি আমরা কেবল ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দিনেই লক্ষ্য করি?
খারিজী, ওহাবী, দেওবন্দীরা কেবলমাত্র যে দু-ঈদের কথা স্বীকারেই আগ্রহী সে ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আদ্বহার দিনেও কি আজকের প্রেক্ষাপটে ব্যাপক হারে পাপের সয়লাব দেখা যায় না? দেখা কি যায়না ঈদের রাত থেকেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে অত্যাধুনিক লাউড স্পীকার সাথে উদ্দাম নৃত্য এমনকি প্রকাশ্য শরাব পানের মহড়া?
আর সারাদিন ধরেই যেন বিরামহীনভাবে চলে জঘন্য বেপর্দার মিছিল। ঈদের আনন্দের নামে ডিস, সিনেমা, টিভি ইত্যাদি হারাম মউজের মহোৎসব। মূলতঃ গোটা দিনই বায়িত হয় ঈদের পবিত্র আনন্দের পরিবর্তে এক মহা নোংরামি ও হারামের মহোৎসবে। এখানে নামধারী সুন্নীরা বেশরা, বেপর্দা কাজ করে বলে যারা গোটা ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বয়কট করতে চান, সেক্ষেত্রে এর চেয়েও ব্যাপকহারে যে পাপের ঢল নামে আমাদের পবিত্র দু ঈদে; সে দু ঈদও কি তাহলে তাদের কথানুযায়ী একইভাবে বর্জন করা উচিৎ? কিন্তু তাতে নিজেদের জিহালতি ব্যাপকভাবে উদঘাটিত হয়ে তা জনরোষ তৈরী করতে পারে বলেই সে বিষয়ে তারা নিশ্চুপ। বিষয়টি তাদের অস্বচ্ছতা, অসততা সর্বোপরি সিলসিলার অন্তঃসারশুন্যতা ও জিহালতিই গভীরভাবে প্রতিয়মান করে। আর তারাই আবু জেহেলের যোগ্য বংশবদ। সঙ্গতকারণেই তাদের অন্তরে আবু লাহাবের মুহব্বত টইটুম্বর। সে কারণেই খোদায়ী ঈদ, মুত্তালিবী ঈদ, সকল ঈদের ঈদকে তারা ‘লাহাবী ঈদ’ বলে নিজেদের শয়তানের দোসর হিসেবে প্রতীয়মান করেছে। (নাউযুবিল্লাহ্ মিন যালিক)