সাইয়্যিদুল, মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ حَدَّثَ بِحَدِيثٍ وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبِينَ
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে (ছহীহ বিচার-বিশ্লেষনন ছাড়াই) অভিমত পোষণ করে যে, এই হাদীছ শরীফখানা মওজু বা মিথ্যা সে ব্যক্তি মিথ্যাবাদীদের অর্ন্তভূক্ত। (মুসনাদে আহমদ ৪/২৫৫: হাদীছ নং ১৮২৬৬, শরহুস সুন্নহ ১/২৬৬: হাদীছ ১২৩, মুসনাদে আবু যায়িদ ১/৩০৬: হাদীছ ২০৬৭, শুয়াবুল ঈমান-মুকাদ্দিমা ১/৮৪, তাফসিরে ইবনে কাছীর ২/৩৬৬)
অপর এক বর্ণনায় এসেছে-
بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ ، وَلاَ حَرَجَ ، وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ
অর্থ: আমার পক্ষ হতে লোকদের নিকট পৌঁছাতে থাক, যদিও তা একটি মাত্র বাক্য হয়। আর বণী ইসরাঈল হতে শোনা কথা বর্ণনা করতে পারো, তাতে কোন দোষ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে সে যেন তার স্থান জাহান্নামে করে নেয়। (বুখারী শরীফ ৩৪৬১, তিরমিযী শরীফ ২৬৬৯, মুসনাদে আহমদ ৬৮৮৮, মুসনাদে বাযযার ৮৭৬৩, মু’জামুল কবীর তাবরানী ১৫২৫, সুনানে দারিমী ৫৪২)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা থেকে বোঝা গেলো যে, বণী ইসরাঈল বা ইহুদী সম্প্রদায়ও যদি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিসবত নিয়ে কিছু বলে তা অস্বীকার করা যাবে না বরং কেউ যদি মিথ্যা ঘটনা বানিয়ে নিয়ে আসে তার শাস্তির জন্য জাহান্নাম রয়েছে। তাই ওহাবীদের প্ররোচনায় কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ দেখলেই তার বিরোধিতা করা যাবেনা, বরং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার উলামায়ে কিরাম কি ফায়ছালা দিয়েছেন , কোন আমল চলে আসছে সেটার উপর লক্ষ্য রাখতে হবে।
ইলমে হাদীছ শরীফ উনাকে মূলত দ্ইুভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। ১) রিওয়াহ সংশ্লিষ্ট ইলিম যা সনদ অবিচ্ছিন্ন ও বিচ্ছিন্ন সনদে বর্ণনা, রাবীদের অবস্থা, স্মরনশক্তি, যোগ্যতা ইত্যাদি ২) দিরায়াহ বা নিয়ম কানুন মূলনীতি ভাবার্থ ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট ইলিম।
হাফিযে হাদীছ হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব “তাদরীবুর রাবীতে” বর্ণিত আছে, ইলমে হাদীছ শরীফ উনার ৭৩ টা শাখা আছে। প্রত্যেকটা শাখায় রয়েছে আরো অসংখ্য প্রকারভেদ। আর ইমাম হযরত ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দ্বয়ীফ সনদের প্রকারভেদই করেছেন ৪৯ প্রকার। সূতরাং এই শাস্ত্র কতটা ব্যাপক আর জটিল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জারাহ এবং তা’দীল সংশ্লিষ্ট জ্ঞান, যা অনেক সুক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর। জারাহ (جرح) হচ্ছে রবীর সমালোচনা করা, দোষ প্রকাশ করা, ত্রুটি অন্বেষন করা। আর তা’দীল (تعديل) হচ্ছে প্রশংসা করা, নির্ভরযোগ্যতা প্রকাশ করা, বিশ্বস্ততার প্রমাণ দেয়া ইত্যাদি। বক্ষ্যমান আলোচনায় জারাহ ওয়াত তা’দীল সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষন ও সেই সাথে ওহাবী সালাফীরা যেভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ধোঁকাবাজী করে তার নমুনা ও সেই ধোঁকাবাজীর রহস্য উন্মোচন করা হবে ইনাশআল্লাহ।