এক বিদয়াতি খারেজী বলেছে, সোমবার রোজা রাখা শুধু হুজুর হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। কোন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের সোমবার রোজা রাখতে আদেশও করেননি আর কোন সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারও নাকি সোমবার রোজা রাখেননি।
عَنْ اَبِىْ قَتَادَةَ الاَنْصَارِىِّ رضى الله عنه قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَقْبَلَ عَلَيْهِ عُمَرُ عليه السلام فَقَالَ يَا نَبِىَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَوْمُ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ؟ قَالَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَوْمٌ اَمُوْتُ فِيهِ.
অর্থ: হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমরা একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছুহবত মুবারকে ছিলাম, এমন সময় সেখানে হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন এবং আরজ করলেন, হে মহান আল্লাাহ তায়ালার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সোমবার রাখা কেমন? জাওয়াবে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আমি এ দিন মুবারকে দুনিয়ায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছি এবং এ দিন মুবারকে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করব। । সুবহানাল্লাাহ। (ছহীহ ইবনি খুযাইমাহ ৩/২৯৮ কিতাবুছ ছিয়াম : হাদীছ ২১১৭)
এ হাদীছ শরীফ থেকে আমরা জানতে পারলাম সোমবার রোজা রাখার গুরুত্ব একারনেরই বেশি কারন এ বারে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ গ্রহন করেছেন।
এরপর সে বলেছে, তিনি সোমবার রোজার নির্দেশ দেননি এবং সাহাবারা সোমাবরে রোজা রাখেন নি। তার এ বক্তব্য দ্বারা প্রমানিত হয় সে ডাহা মিথ্যাবাদী জালিয়াত । কেননা হাদিসে আছে স্পষ্ট উল্লেখ আছে হুযুর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন,
أُمِّ سَلَمَةَ فَسَأَلْتُهَا عَنِ الصِّيَامِ فَقَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَأْمُرُنِى أَنْ أَصُومَ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ أَوَّلُهَا الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ
অর্থ: হযরত উম্মে সালমা আলাইহিস সালাম বর্ননা করেন, হুযুর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখতে যার প্রথম দিন সোমবার অথবা বৃহস্পতিবার হয়। (আব দাউদ শরীফ ২৪৫৪, শুয়াবুল ঈমান ৩৫৭১, মুসনাদে আবী ইয়ালা ৬৯৮২, নাসাঈ শরীফ, মিশকাত শরীফ কিতাবুছ ছাওম ১৯৬২ নং হাদীছ)
এখানে দেখা গেলো, সোমবার রোজা রাখাতে আদেশ করার হাদীছ শরীফও রয়েছে।
এরপর সে বলেছে, সোমবার কোন সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম নাকি সোমবার রোজাও রাখেননি। নাউডুবিল্লাহ। অথচ সহীহ হাদীছ শরীফে সোমবার রোজা রাখার বিষয়ে সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের আমল দেখা যায়। হাদীছ শরীফের বিখ্যাত কিতাব “ইবনে আবী শায়বায়” একটা বাব আছে যার নাম-
- مَا ذُكِرَ فِي صَوْمِ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ.
এখানে অনেক হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে, যেখানে অনেক হাদীছ শরীফ আছে যেখানে দেখা যায় হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন সোমবার রোজা রাখতেন।
حَدَّثَنَا عُثْمَانَ بْنُ مَطَر ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ ، عَنْ أَبِي عُقْبَةَ ، قَالَ : كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَصُومُ الاِثْنَيْن وَالْخَمِيسَ.
অর্থ: হযরত আবু উকবা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি ইয়ামুল ইছনাইন (সোমবার) ও ইয়াওমুল খমীছ রোজা রাখতেন। (ইবনে আবী শায়বা ৯৩২১)
حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرِِ ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ ؛ أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ كَانَ يَصُومُ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ.
অর্থ: হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত, হযরত উমর আব্দুল আযীয রহতুল্লাহি আলাইহি তিনি সোমবার ও ইয়াওমুল খমীছ রোজা রাখতেন। (ইবনে আবী শায়বা ৯৩২৪)
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دُكَيْنٍ ، عَنْ قَيْسٍ ، عَنْ عَاصِمٍ ، عَنْ زِرٍّ ، عَنْ عَبْدِ اللهِ ؛ أَنَّهُ كَانَ يَصُومُ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবসে মাসুদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি সোমবার ও ইয়াওমুল খমীছ রোজা রাখতেন। (ইবনে আবী শায়বা ৯৩২৮)
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ ، عَنْ سَعِيدٍ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ خِلاَسٍ ؛ أَنَّ عَلِيًّا كَانَ يَصُومُ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ.
নিশ্চয়ই হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি সোমবার ও ইয়াওমুল খমীছ রোজা রাখতেন। (ইবনে আবী শায়বা ৯৩৩০)
এ বিষয়ে সহীহ ইবনে খুযায়মাতেও এমন অনেক দলীল আছে। অথচ সেই জাহিল বলেছে সোমবার রোজা রাখা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। অন্য কেউ নাকি রাখেননি। যে এমন মনগড়া আপত্তি করে প্রমাণ করলো সে একটা মিথ্যা অপবাদ দানকারী।
উপরোক্ত আলোচনা দারা প্রমাণিত হয় যে, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের প্রতি মিথ্যারোপ আরোপ করেছে।
من كذب علي فليتبوأ مقعده من النار
“যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলবে তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম।” (ইবনে আবী শায়বা - কিতাবুল আদব- হাদীছ ৩৬১৭)