যে কোন দিবস কিংবা দিবস ছাড়া নেক আমল করা কি ইসলামে নিষেধ ?

অনেক আলেম নামধারী নিজের অজ্ঞতার জন্য বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে কিংবা দিবস ছাড়া আমল করাকে বিদয়াত বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলে! নাউযুবিল্লাহ।
এই যেমন শবে মিরাজ উপলক্ষে অনেক তথাকথিত টাইটেলধারী অপপ্রচার করে এ দিবসে নাকি ইবাদত করার কথা নাই। নাউযুবিল্লাহ। অথচ এ দিবস উপলক্ষে আমল করার কথা হাদিস শরীফে উল্লেখ আছে।
প্রশ্ন হল ইসলামের কোথাও কি লিখা আছে দিবস কিংবা দিবস ছাড়া আমল করা যাবেনা? বরং আল্লাহ পাক বেশি বেশি করে আমল করার তাগিদ দিয়েছেন। এবার দিবস উপলক্ষে হোক কিংবা বা হোক। 
১. মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এক জাররা পরিমাণ নেক কাজ করবে তার বিনিময় (ছওয়াব) সে পাবে। আর যে ব্যক্তি এক জাররা পরিমাণ পাপ বা গুনাহ করবে তার বদলা (শাস্তি) সে ভোগ করবে।’(সূরা যিলযাল ৭-৮) 
২. হযরত আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত:রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আসসালাম বলেছেন;
মহান আল্লাহ বলেন “যে একটি নেককাজ করবে সে এর দশগুন সওয়াব পাবে বা আমি তাকে আরো অধিক পরিমাণ প্রদাণ করবো।আর যে একটি গুনাহ করবে সে কেবল একটি গুনাহের-ই শাস্তি পাবে বা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।শোন হে মানবসকল,যে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসবে আমি তার দিকে একহাত নিকটবর্তী হবো।যে ব্যক্তি আমার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হবে আমি তার দিকে দুইহাত নিকটবর্তী হবো…যে ব্যক্তি পায়ে হেঁটে আমার দিকে অগ্রসর হবে আমি তার দিকে দৌড়ে যাবো। যে ব্যক্তি পৃথিবী সমান গুনাহ করবে তার জন্য আমি অনুরূপ ক্ষমা সহ অপেক্ষা করবো (শর্ত থাকে যে সে আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না)।” [বুখারী ও মুসলিম]।
নেককাজের এ সওয়াবের অঙ্গীকার কোন মানুষের জন্য করা হচ্ছে না। অঙ্গীকার করা হচ্ছে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে। বিশেষ কোন নেক আমলের জন্যও এ সওয়াব নির্ধারন করেন নি। বরং তিনি বলেছেন যে কোন নেক আমল হোক না কেন, সে ইবাদত ফরয হোক বা নফল। প্রত্যেকটির সওয়াব দশগুন দেওয়া হবে।
৩. হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত রাসুলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন "আমার বান্দা নফল ইবাদত (সাধনা)র মাধ্যমে আমার এতই নিকটবর্তী হয়ে যায় এক পর্যায়ে আমি নিজেই তাকে ভালবাসি। আর আমি যখন কাউকে ভালবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনে, আমি তার চক্ষু হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে ধরে, তার পা আমার কুদরতী দ্বারা শক্তিশালী হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলে। এমতাবস্থায় সে আমার কাছে কিছু চাইলে আমি তা অবশ্যই দান করি। (বুখারি শরীফ ২য় খন্ড, মেশকাত শরীফ-১৯৭ পৃষ্ঠা)
দেখা যাচ্ছে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত আদায় করার পরেও আল্লাহ পাকের নৈকট্য হাছিল করার অন্যতম মাধ্যম হল নফল ইবাদত। 
এখন কোন দিবস উপলক্ষ করে কিংবা না করে কেউ যদি -
কোরান শরীফ তিলওয়াত,
দরুদ ,
দোয়া -মুনাজাত,
তওবা ইস্তিগফার,
নফল নামাজ,
রোজা রাখা, 
ওয়াজ মাহফিল করে তাহলে সে তো নেক কাজে মশগুল থেকে আল্লাহ পাকের আদেশ পালন করছে। আল্লাহ পাক বলেন- 
“তোমরা নেকী ও পরহেযগারীতে সাহায্য করো, পাপ ও শত্রুতার মাঝে সাহায্য করো না। (এই বিষয়ে) মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। (সূরা মায়িদা শরীফঃ ২)
যারা বিদয়াত বলে নেক আমলে বাধা দিয়ে তারা কার আদেশ অস্বীকার করছে ?
কাকে ভুল প্রমাণ করছে ? নাউযুবিল্লাহ 
মূলত যারা নেক আমলে বাধা দেয় তারা বাতিল ,গোমরাহ, ইবলিশের অনুচর ।
এদের থেকে দূরে থাকুন