হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন

 হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন এবং খুশি প্রকাশ করেছেন। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে যা পোষ্টে সংযুক্ত চিত্রে দৃশ্যমান-

অর্থ: হযরত খারীম ইবনে আউস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন *তাবুক জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলেন, তখন আমি উনার ছোহবত মুবারক-এ গেলাম। এ সময় হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনার ছানা-ছিফত- প্রশংসা করতে চাই। তিনি বললেন, বলুন, মহান আল্লাহ পাক আপনার যবান মুবারককে হিফাযত করুন। অতঃপর তিনি বললেন:

১। (দুনিয়াতে আসার) আগে আপনি ছায়ায় দিনাতিপাত করতেন এবং এমন সুমহান স্থানে (জান্নাতে) অবস্থান করতেন, যেখানে পাতা মিলিত করা হয়। (হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে)

২। অতঃপর আপনি যমীনে (হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালামের মাধ্যমে) তাশরীফ নিলেন। তখন আপনার মানুষের আকৃতি ছিলো না, না ছিলেন নূরী গোশত পিন্ড, না নূরী জমাট রক্ত খণ্ড।

৩। আপনি সেই নূর মুবারক যা নৌকায় আরোহণ করেছিলেন এবং নসর (প্রতিমা) ও নসর পূজারীদেরকে ওই পানি গ্রাস করেছিলো। (হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে)।

৪। আপনি এমনিভাবে জিসিম মুবারক থেকে রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হতে থাকেন এবং যা শতাব্দীর পর শতাব্দী অতিবাহিত হয়েছিলো।

৫। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন আগুনে অবস্থান করেন, তখন আপনি উনার জিসিম মুবারক-এ ছিলেন। এমতাবস্থায় অগ্নির কি সাধ্য ছিলো যে, হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে স্পর্শ বা পোড়াতে পারে।

৬। অবশেষে আপনার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ। আপনার রূহ মুবারক খন্দকের উচ্চস্থানকে ঘিরে নিলো, যার নিচে অন্যান্য পাহাড়ের মধ্যবর্তী অংশ আছে।

وانت لـما ولدت اشرقت الارض + وضاءت بنورك الأفق

فنحن فى ذلك الضياء وفى + النور وسبل الرشاد تخترق

৭। এরপর আপনার যখন বিলাদত শরীফ প্রকাশ পেলো  তখন সারা পৃথিবী আপনার নূর মুবারক-এ আলোকিত হয়ে গেলো।*

৮। এখন আমরা সেই মহান নূর মুবারকের ছোহবতে আছি। আমাদের সম্মুখে হিদায়েতের পথ উন্মুক্ত। সুবহানাল্লাহ! 

(দলীল: মুসতাদরেকে হাকিম ৩/৩৬৯-৩৭০ ) : হাদীস ৫৪১৮, দালায়েলুন নবুয়াত ২/৯৮৩: হাদীছ ২০২০, মা’রিফাতুছ ছাহাব লি আবু নুয়াইম ২৫৩১, খাছায়িছুল কুবরা, সিয়ারু আলাম আননুবালা ৩/৮৬, সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ১/৭০, সিরাতুন নববিয়্যাহ লি ইবনে কাছীর ১/১৯৫, বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/৩১৭, তারিখুল ইসলাম লি ইমাম যাহাবী ১/৪৩, মুখতাসারু তারিখুত দিমাষ্ক ১/১২১)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে কয়েকটি বিষয় আলোচনা করবো, 

* তাবুক জিহাদ যা ৯ম হিজরীতে সংঘটিত হয়েছে। অর্থাৎ হুযুর পাক ছল্লাল্লা

হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক যখন ৬১ বছর তখন এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ ‍জিহাদে প্রায় ৩০ হাজার মুসলমান সৈন্য অংশগ্রহন করেন। 

এ থেকে যা প্রতিয়মান হয়, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের ৬১ বছর পর উনার সামনে এবং হাজার হাজার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের উপস্থিতিতে উনার সম্মানিত চাচা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনার মীলাদ শরীফের আলোচনা করেছেন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যম দিয়ে পরবর্তী বংশ পরম্মরায় কিভাবে দুনিয়াতে তাশরিফ আনলেন সে আলোচনা করেছেন। এবং উনার সম্মানিত আগমনে শুকরিয়া আদায় করে খুশি প্রকাশ করেছেন। 

এটাইতো পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন যা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা করেছেন এবং সে সুন্নত অনুযায়ী আমরাও করছি। এ আমল কিভাবে বিদয়াত বলা যেতে পারে?