দেওবন্দী - কওমীদের গুরুদের ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন

১. মৌলভী আশ্রাফ আলী থানভীর মিলাদ পালন
দেওবন্দীদের অন্যতম বুযূর্গ মৌলভী আশ্রাফ আলী থানভী বর্ণনা করে," হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারকের উসিলায় সমস্ত জগত সৃষ্টি হয়েছে।" 


আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

وذکرہم بایام اللہ-ان فی ذالک لایت لکل صبار ‌‎‎شکور-

“আল্লাহ তায়ালা হযরত মূসা আলাইহিস সালাম কে নির্দেশ দেন যে,আপনি তাদেরকে(বনী ইসরাঈল) আল্লাহর নিদর্শনাবলীর কথা স্মরন করিয়ে দিন।নিশ্চয় এতে প্রত্যেক অধিক সবরকারী,শুকুর গুজারদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে।”


  • " এ আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে বলে,এ কথা সুস্পষ্ট হলো যে,নবী পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেলাদত উপলক্ষে খুশী আনন্দ করা বৈধ।শুধু তাই নয় বরং তা বরকত হাসিলের বড় উপায়।এ কথার ওপর স্পষ্ট যে, আমরা নবীর বেলাদত উপলক্ষে মূল খুশী হবার বিরোধী নই।বরং এ কাজের উপর সর্বদা আমলকারী।"



  • এ আশ্রাফ আলী থানভী আরো বলে, “আল্লাহ তায়ালা হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুভাগমনকে কুরআন শরীফের মধ্যে নেয়ামতের খোটা দেয়ার ধরন বর্ণনা করেছেন।(কেন আমরা মিলাদুন্নাবী পালন করব না?অবশ্যই করব।)অতএব এখান থেকে আমাদের এই শিক্ষা গ্রহন করা দরকার যে,আমরা যেন প্রত্যেহ একবার হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর মিলাদের আলোচনা করি।”



  • সে  আরো বলে"  নবী পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই নিজের মিলাদ বর্ণনা করেছেন।কিন্তু তা বর্ণনা কম করেছেন।আহকামের আলোচনা অধিক করেছেন।হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাতের অনুসরন এভাবে হবে যে,হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের পুরা জীবনের মধ্যে যে পরিমান বেলাদতের বর্ণনা করেছেন;এতটুকু যেন তোমরা পালন কর।"



  • সে ইমাম আহমদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সূত্রে আরো বর্ণনা করে যে," বৃহস্পতিবার রাত্রি(জুমার রাত্রি) কদরের রাত্রি থেকে অনেক গুন বড়।এই কারনে যে,ওই রাত্রিতে হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার  আম্মাজান হযরত আমেনা আলাইহাস সালাম উনার রেহেম শরীফে  হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ার মধ্যে তাশরীফ আনয়নের মধ্যে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের মঙ্গল নিহিত রয়েছে;যা গণনা করা যাবে না।"



২. মৌলভী রশিদ আহমদ গাংগুহীর ওস্তাদের মিলাদ পালন


  • দেওবন্দীদের ইমাম রশিদ আহমদ গাঙ্গুহীর ওস্তাদ শাহ আব্দুল গণি দেহলভী বলে , “এ কথা হক্ব ও সত্য যে,হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর মিলাদ পালন এবং ইসালে সাওয়াবের আয়োজন করা মানবের পরিপূ্র্ণ কল্যানের একটি সোপান।বাস্তব এই যে,হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মিলাদ পালন করার মধ্যে এবং ইসালে সাওয়াব উপলক্ষে ফাতেহা পড়া মিলাদের খুশী উদযাপন মানবের জন্য পুরোই মঙ্গল   ”


  • থানভী  বিভিন্ন লেখায় শেখ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মহা মর্তবা বর্ণনা করেছে।থানভী তার কিতাব ‘শুকরুন নি’য়মা বিষিকরি রাহমাতির রাহমা’ এর ৬৫ পৃষ্ঠায় শেখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি  রচিত ‘আশিয়াতুত লুমাত’ কিতাবের একটি ইবারত উদ্ধৃত করে বলে , “যেহেতু শেখ আব্দুল হক দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একজন বড় হাদীস বিশারদ।তিনি শাফায়াতের দশ প্রকারের বর্ণনা দিলেন তা আমরা কোন হাদীসের কিতাবে পাইনি।তারপরেও তিনি (শেখ দেহলভী) যেহেতু হাদীসের মধ্যে বিশাল দৃষ্টির অধিকারী।এ কারনেই এই বর্ণনা গ্রহনযোগ্য।”
তথ্য সুত্র - 


  • "মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ১৯২ পৃষ্ঠা কৃত মৌলভী আশ্রাফ আলী থানভী।


  • "তাফসীরে বয়ানুল কুরআন" কৃত মৌলভী আশ্রাফ আলী থানভী।


  • "জুমা কি ফযায়েল ওয়া আহকাম" কৃত মৌলভী আশ্রাফ আলী থানভী।